স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম আজ চাঁদপুরে আগমনে বদলে গেছে চাঁদপুর আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপালের চিত্র।
তার আগমনকে ঘিরে হাসপাতালের পরিস্কার পরিছন্নতাসহ সবকিছুতেই অনেক পরিবর্তন এসেছে। গত দু’দিন ধরে হাসপাতালটি ভিন্ন রূপে রূপ ধারন করেছে।
রোগীদের বেড, বালিশ, চাদর, ময়লা ফেলার পাত্র, দরজা, জানালা, টয়লেট পরিস্কার পরিছন্ন, এমন কি খাওয়া দাওয়ার প্রতিও বেড়েছে রোগীদের কদর।
কারন স্বাস্থ্য সচিব আসবেন বলে কথা। তিনি এসে যদি হাসপাতালের নোংরা পরিবেশ কিংবা কোন অনিয়ম দেখেন তাহলে যে জবাবদিহিতা করতে হবে। তাই তিনি আসার আগে থেকেই গত তিন চার দিন ধরে সরকারি হাসপাতালের প্রত্যেকটি ওয়ার্ড,ডাক্তার কক্ষ, জরুরি বিভাগ, টিকেট কাউন্টার,প্যাথলজি বিভাগ, সিঁড়ি রুম, করিডোর, টয়লেটসহ সবস্থানে পরিষ্কার পরিছন্নতার কাজ করতে দেখা গেছে।
অথচ গত দু সপ্তাহ আগেও যেখানে হাসপাতালের চিত্র ছিলো ভিন্নতর। যেখানে বিভিন্ন ওয়ার্ডের টয়লেট গুলো ছিলো নোংরা ও দরজা ছিলো ভাঙ্গা চুরা অবস্থায়। রোগীরা ঠিকমতো পেতোনা বিছানার চাদর, বালিশ, বেডের পাশে থাকা টেবিল, ময়লা ফেলার পাত্র।
গত ক’দিন ধরে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরজমিনে ঘুরে দেখাযায় হাসপাতালের সবকিছুতেই অনেক পরিবর্তন এসেছে। পরিস্কার পরিছন্ন কর্মী দিয়ে ধোয়া মোছা করানো হচ্ছে হাসপাতালের ফ্লোর, স্কাটিং সহ বিভিন্ন কক্ষ। মেরামত করানো হয় ভেঙ্গে যাওয়া থাই এলমুনিয়ামের বিভিন্ন দরজা জানালা ।
পুরনো ভাঙ্গা চুরা বেড সরিয়ে সেখানে নতুন বেড রেখে পরিপাটি করে গুছিয়ে রাখা হয় বিভিন্ন ওয়ার্ড। হাসপাতালের সিঁড়ির স্থানে রাখা হয় নতুন করে উন্নত থুথু ফেলার ডাস্টবিন।
গত ক’মাসে যেখানে বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিছানা গুলোতে নতুন কোন চাদর, ও বালিশ দেখা যায়না গতকাল শনিবার ওইসব ওয়ার্ড গুলোতে নতুন বালিশ দিতে দেখা যায় । সেই সাথে প্রতিটি বিছানার পাশে টেবিল এবং ময়লা ফেলার পাত্র দিতেও দেখা যায়। হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে পড়ে থাকা ময়লা আবর্জনা সরিয়ে ফেলা হয়,ওয়ার্ড গুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন্ করে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়, বিভিন্ন কক্ষে টানানো হয় জানালার পর্দা শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সচিবের সুদৃষ্টি পড়বেন বলে।
এছাড়াও বিভিন্ন ওয়ার্ডের টয়লেটের নোংরা পরিবেশ পরিস্কার ও ভেঙ্গে যাওয়া টয়লেটের দরজাও মেরামত করা হয়। সবকিছু মিলিয়ে এখন হাসপাতাল রূপ নেয় এক অন্যরূপে।
আর হাসপাতালের এ ভিন্ন রূপ দেখে রোগীদের মাঝে নানা প্রশ্ন জাগে। অনেক রোগীরা এ প্রতিবেদককে বলেন আমরা তো বুঝতে পারিনা হঠাৎ হাসপাতালের সবকিছুতে কেনো এত পরিবর্তন।
আজ বুঝতে পারছি সচিব আসবে জেনে হাসপাতাল কৃর্তপক্ষ এখন সবকিছুতেই অনেক পরিবর্তন এনেছে। এরকম যদি সবসময় থাকতো তাহলে এ হাসপাতালের পরিবেশ অনেক সুন্দর থাকতো ।
এ ব্যাপারে একাধিক ব্যাক্তি বলেন গত ক’দিনে সরকারি হাসপাতালের সবকিছুতেই যে নিয়ম নীতি এবং পরিবেশ ফিরে এসেছে সেটি যদি সবসময় থাকতো তাহলে হাসপাতালে এসে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হতোনা। স্বাস্থ্য সচিব চলে যাওয়ার পর এই সৌন্দর্য ও নিয়ম নীতি কতদিন টিকে থাকে সেটাই হলো দেখার বিষয়।
এ ব্যাপারে সরকারি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ( আরএমও ) ডা. মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘সরকার থেকে যে পরিমান বরাদ্ধ দেয়া হয় সে অনুযায়ী হাসপাতাল কৃর্তপক্ষ রোগীদের সবকিছু চাহিদা দিয়ে থাকে। কিন্তু বরাদ্ধ অনুযায়ী অনেক সময় রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে অথবা মালামাল ঠিকমত না পৌছালে তখন মাঝে মাঝে সবকিছু ঠিক রাখা যায় না ,তাই রোগীদের সব চাহিদা মেটাতে একটু এলোমেলো হয়। রোগীদের বিছানার চাদরের ক্ষেত্রে দোপারা ঠিকমতো চাদর ধুয়ে না দেয়ার কারণে অনেক সময় রোগীদের বিছানায় চাদর দেয়া সম্ভব হয় না।’
হাসপাতালের হঠাৎ এমন পরিস্কার পরিছন্নতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোন অতিথি আসলে তাতো অবশ্যই কিছু না কিছু পরিবর্তন আসবেই। আগের চেয়ে আমাদের হাসপাতাল কৃর্তপক্ষের লোকবল এবং নজরদারি বেড়েছে। তাই আমরা চাই হাসপাতালটি সবসময়ই সুন্দর থাকুক। পরিস্কার পরিছন্ন কর্মী সংকট রয়েছে, তা যদি বাড়ানো হয় তাহলে আশা করি আগামীতে পরিস্কার পরিছন্নতার ক্ষেত্রে আরো অনেক পরিবর্তন আসবে।’
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি
।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৬ : ১০ এএম, ১ জানুয়ারি ২০১৭ রোববার
ডিএইচ