মাথা ব্যথা ও পেট খারাপ বিপদের মতো না বলেই আসে। মূলত অস্বাস্থ্যকর খাবার,সংক্রামণ,অ্যালার্জি,স্ট্রেস বা মদ্যপানের কারণে পেট খারাপ হয়ে থাকে। এতে অনেকেই ওষুধের জন্য ছুটেন চিকিৎসকের কাছে। না বুঝেই নিয়ে নেন একগুচ্ছ ওষুধ। সম্প্রতি পেট খারাপ জনিত সমস্যা সমাধানে ঘরোয়া পদ্ধতির উল্লেখ করে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে লাইফস্টাইল বিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ড স্কাই।
১.লেবু পানি: পেটের সমস্যা সমাধানে সব থেকে কার্যকর ঘরোয়া উপাদান হচ্ছে লেবু পানি। কেননা লেবুতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপার্টিজ পেটের ভেতরের প্রদাহ কমায়। এ ছাড়া লেবুতে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো নানাবিধ খনিজ পদার্থ উপস্থিত যা পেটের রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
২.ডাবের পানি: পেট খারাপের সময় শরীরের ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য দূর করতে ও পানির চাহিদা মেটাতে ডাবের পানির কোনো বিকল্প নেই। শুধু তাই নয়,প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি দূর করে পেটের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা রাখে। পেট খারাপ হলে দিনে কম করে দুই গ্লাস ডাবের পানি খাওয়া উত্তম।
৩.আদা : পেট খারাপ কমাতে আদার কোনো বিকল্প নেই। আদায় উপস্থিত অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ পেটের পীড়া কমাতে সহায়তা করে। এক্ষেত্রে এক কাপ বাটার মিল্কে হাফ চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পান করুন। এই পানীয়টি দিনে ৩-৪ বার খেলেই দেখা যাবে পেটের সমস্যা কমতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত,যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা ভুলেও এই ঘরোয় পদ্ধতিটিকে কাজে লাগাবেন না।
৪.দারুচিনি : কয়েক সেকেন্ডে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায় দারুচিনি। একইসঙ্গে পেট খারাপের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে প্রাকৃতিক এই উপাদানটি। দিনে চারবার দারুচিনি পাউডার দিয়ে তৈরি চা খেলেই পেটের সমস্যা দূর হবে। এক্ষেত্রে এক কাপ গরম পানিতে এক চামচ দারুচিনি পাউডার মিশিয়ে পাঁচ মিনিট রেখে দিন। এরপর বানানো চা পান করুন।
৫.আপেল সিডার ভিনেগার : পেট খারাপের প্রকোপ কমাতে আপেল সিডার ভিনেগারের কোনো বিকল্প নেই। এতে থাকা প্যাকটিন নামক একটি উপাদান রয়েছে যা পেটের যন্ত্রণা কমানোর পাশাপাশি পেটকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে সরাসরি আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া যাবে না। পেটের পীড়া কমাতে এক গ্লাস পানিতে এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন। প্রতিবার খাবার খাওয়ার পর এক গ্লাস এই পানীয় খেলে পেটের সমস্যা দূর হবে। চাইলে স্বাদ বাড়াতে মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।
৬.মেথি বীজ : মেথি বীজে প্রচুর পরিমাণে ম্যাসিলেজ রয়েছে ডায়েরিয়া হওয়ার প্রবণতাকে কমিয়ে আনে। ফলে দিনে এক চামচ দইয়ের সঙ্গে এক চামচ মেথি বীজ মিশিয়ে ২-৩ বার খেলে পেটের সমস্যা কমে যাবে। এতে পায়খানা পরিষ্কার হতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে পেটে যন্ত্রণা এবং বদ হজমও কমে যাবে।
৭.দই : পেট ব্যথা কিংবা পেট খারাপ হলেই এক বাটি তাজা টক দই খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এতে বার বার টয়লেটে ছুটতে হবে না। টক দইয়ে প্রচুর পরিমাণে ল্যাক্টোব্যাসিলাস ও বিফিডোব্য়াতটেরিয়াম নামে দু ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা হজম ক্ষমতার বৃদ্ধির পাশাপাশি ডায়ারিয়া কমাতে সাহায্য করে।
৮.মৌরি : পেট ঠাণ্ডা করতে অনেকেই নিয়মিত মৌরি খান। তবে হয়তো জানেন না, নিয়মিত মৌরি খেলে পেট খারাপের মতো রোগের প্রকোপ কম থাকে। মৌরিতে উপস্থিত অ্যান্টি-মাইক্রোব্যাক্টেরিয়াল প্রপার্টিজ যা সহজে পেট খারাপ হওয়া থেকে রক্ষা করে। এক্ষেত্রে প্রথমে এক কাপ গরম পানিতে দুই চামচ মৌরি মিশিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন।এরপর পানিটি ছেঁকে আলাদা করুন। এই মিশ্রণটি দিনে ২-৩ বার খেলেই দেখবেন সমস্যা কমতে শুরু হয়েছে।
৯.কলা : কলায় প্রচুর পরিমাণে প্যাকটিন উপস্থিত যা মলকে শক্ত করতে কাজ করে। একইসঙ্গে ডায়েরিয়া বা পেট খারাপের প্রকোপ কমাতেও সাহায্য করে প্যাকটিন। এক্ষেত্রে এক গ্লাস বাটার মিল্কে একটি কলা চটকে মিশিয়ে মিশ্রণটি দিনে ২-৩ বার খেলেই পেটের সমস্যা দূর হবে