শীর্ষ সংবাদ

প্রভাবশালীদের দখলে ফরিদগঞ্জের ফুটপাত ও সরকারি ভূমি

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ বাজারের ফুটপাথ ও বাসস্ট্যান্ডে সরকারি জায়গা দখল করে নিয়েছে হকার ও প্রভাবশালীরা। জনগনের হাঁটার জায়গা দখল ও মূল সড়কের নিকটতম স্থান দখল হয়ে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।

স্থানীয় প্রভাবশালী ক’জন নেতা সড়কের পাশের এই ফুটপাত নিজেদের দখলে রেখে হকারদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে।

দখল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাসস্ট্যান্ডের মূল সড়কের পাশে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা দখল করে আছে। এতে করে বাসস্ট্যান্ডে যানবাহন রাখা ও যাত্রীদের চলাচলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

গত বছর সড়ক ও জনপদ বিভাগ সড়কের দু’পাশে অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো ক’দিন পরেই বাসস্ট্যান্ডে সরকারি অধিগ্রহণকৃত জায়গার মধ্যে আবারো প্রভাবশালী একটি মহল স্থাপনা নির্মাণ করে ফলের দোকানদারদের কাছে ভাড়া দেয়। তা দেখে আরেকটি গ্রুপও একই কায়দায় বাসস্ট্যান্ডে মূল সড়কের পাশে ফুটপাথ দখল করে ফলের দোকানদার কাছে ভাড়া দেয়।

এনিয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাসস্ট্যান্ডের অবৈধ দোকানপাট সড়ক থেকে কিছুটা পিছনে সরাতে বলেন।

যদিও বাসস্ট্যান্ডে সড়কের এক পাশে ১’শ ২৫ ফিট ও আরেক পাশে ৫০ ফিট জায়গাই সরকারি।

স্থানীয়দের অভিমত বাসস্ট্যান্ডে অবৈধ দোকানপাট কিছুটা পিছনে সরালে কয়েক দিন পর আবারো তা দখলকারীরা মূল সড়কের নিকটে নিয়ে আসবে। তাই সম্পূর্ণভাবে ওই অবৈধ স্থাপনাকে সরকারি জায়গা থেকে উচ্ছেদ করা প্রয়োজন।

এদিকে বাসস্ট্যান্ড থেকে ফরিদগঞ্জ বাজারে প্রবেশ পথের ফুটপাথের অধিকাংশই ভ্রাম্যমাণ হকার ও দখলদাররা দখল করে রেখেছে। এর মধ্যে ফরিদগঞ্জ প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের সামনে ফুটপাথ জৈনিক সাবেক বিএনপি নেতা দীর্ঘ দিন দখল করে রেখেছে। এবং ওই স্থানে অবৈধ স্থাপনা তুলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে চলেছে। প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের সামনে বাজারের রাস্তাটি ও সড়ক নিকটবর্তী স্থানে একটি মসজিদ থাকাতে পথচারীদের চলাচলে এই স্থানটিতে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।

ওই স্থানের পাশ^বর্তী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ঔষুধ ব্যবসাীয় ওই বিএনপি নেতা এর আগে সড়কের ওই স্থানে থাকা একাধিক গাছ কেটে আত্মসাত করে। এখন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সে চাঁদা তুলছে।

অপরদিকে ফরিদগঞ্জ কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার ও স্মৃতি স্তম্ভের সামনের সড়কের দু’পাশের সম্পূর্ণ জায়গা কামার ও হকাররা দখল করে আছে। ওই স্থানটি দিয়েও পথচারীদের চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তি পোহাতে হয়। হকার ও কামারদের অবৈধ স্থাপনার কারণে আড়াল হয়ে আছে মহান শহীদ মিনার ও স্মৃতি স্তম্ভটি। এনিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন জনগণ ক্ষুব্দ প্রতিক্রীয়া ব্যক্ত করেছে।

ফরিদগঞ্জ মধ্য বাজারে প্রবেশ মুখে কেরোয়া রাস্তার তিন মুখি সড়কটি অধিকাংশ সমই অবৈধ রিক্সাস্ট্যান্ড হিসাবে রিক্সা চালকদের দখলে থাকে। এতে ওই মোড়টিতে প্রায়ই জানজট লেগে থাকে।

এছাড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের প্রদর্শনী স্থান হিসাবে সড়কের পাশের পথচারীদের হাঁটার জায়গাকে দখল করে আছে। এই অবৈধ দখলের কারণে বাজারের সৌন্দর্যহানী ও জনগনের ভোগান্তি বাড়ছে।

এদিকে বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, বাজারের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিজের দোকানের সামনের রাস্তার পাশের ফুটপাথের জায়গায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বসার সুযোগ করে দিয়ে তাদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে। মাছ বাজারে মাছ বিক্রি করার আলাদা স্থান থাকলেও মাছ ব্যবসায়ীরা হাট বারের দিন মাছ বাজারের মূল সড়কে গিয়ে বসে।

নিত্যপ্রয়োজনে বাজারে আসা জনগণের ভোগান্তি পোহাতে হয়। সব মিলিয়ে ফরিদগঞ্জ বাজারের ফুটপাথে অবৈধ দখলদার ও হকাররা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে।

প্রতিবেদক- আতাউর রহমান সোহাগ
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯: ০০ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৭, শুক্রবার
ডিএইচ

Share