বহুল আলোচিত ফরিদগঞ্জ-রূপসা সড়কটির কাজ আগামী সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে শেষ হবে, এমন আশ্বাসই দিয়েছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স শহীদ এন্ড ব্রাদার্স এর কর্ণধার মো. আমির আযম রেজা। যদিও চলতি বছরের ১১ আগস্ট কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে তা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ।
মেঘনা পাড়ের ঐতিহ্যবাহী রূপসা জমিদার পরিবারের গড়া এই সড়কটি অতিব গুরুত্বপূর্ণ। এসড়কটি দিয়ে শুধুমাত্র রূপসা বাজারই নয় উপজেলার পূর্বাঞ্চলের সাথে যোগাযোগের সংক্ষিপ্ত রাস্তাও বটে। বিশেষ করে উপজেলার পূর্বাঞ্চল রূপসা, খাজুরিয়া, লাউতলী, রুস্তমপুর, পাইকপাড়া, আমিরা বাজার, আষ্টা, গুপ্টি, গল্লাক ও সুবিদপুর এলাকার হাজার হাজার মানুষকে প্রতিনিয়ত উপজেলা সদর, পার্শ্ববর্তী লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় যাতায়াতের জন্য ফরিদগঞ্জ-রূপসা সড়ক ব্যবহার করতে হয়।
কম সময়ে পাশ্ববর্তী উপজেলাগুলোতে যাওয়ার জন্য অনেকেই এই সড়কটি ব্যবহার করতো। কিন্তু কোনো এক রহস্যজনক কারণে দীর্ঘ ৩/৪ বছর ধরে কাজ শুরু হলেও এখনো শেষ হচ্ছে না! টেন্ডার-বাতিল আবার পুনঃটেন্ডারের মধ্যেই চলে গেছে প্রায় দেড় বছর। কেন এমন জটিলতা সাধারণের কাছে তা এক রহস্য।
কাজটি ফরিদগঞ্জ-রূপসা জিসি সড়কের ৮ কোটি ৬৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকার সর্বশেষ কাজটি মেসার্স শহীদ এন্ড ব্রাদার্স পান। টেন্ডার প্রক্রিয়ার জটিলতা কাটিয়ে উঠলেও কাজ চলছে একেবারে শম্বুক গতিতে।
এতে মানুষের ভোগান্তিও বাড়ছে। সর্বশেষ টেন্ডারের পর কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ৫ এপ্রিল। কিন্তু এক বছরের অধিক সময় পার হলেও এখনো রাস্তার কাজ শেষ হয়নি। এরকম নজির বাংলাদেশের আর কোথায়ও আছে কিনা এ রাস্তা ব্যবহারকারীদের জানা নেই। কেন কাজের এতো ধীরগতি? কবেইবা কাজ শেষ হবে, কেউ বলতে পারবে না। বর্তমান কাজের মেয়াদ গত ১১ আগস্টে শেষ হয়েছে। সংশ্লিস্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এ সড়কের বেহালদশার কারণে সাধারণ রোগীদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। মূল কাজ শুরু হলেও দীর্ঘ সময় অতিক্রমের পরেও কাজ শেষ না হওয়াতে মানুষের কষ্টের শেষ নেই। সড়কটির এ দুরবস্থা বিরাজ করলেও এলাকার জনদুর্ভোগ লাঘবে প্রচেষ্টা নেই জনপ্রতিনিধিদের।
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায় চলতি বছরের আগস্ট মাসের ১১ তারিখে কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করাতে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিস্ট বিভাগে আবেদন করে। আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী বছরের (২০২২) ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী এ.এস.এম রাশেদুর রহমান জানান,‘কাজের ধীর গতির জন্য ঠিকাদারকে একাধিক নোটিশ করা হয়েছে। কাজের মেয়াদ শেষ হলেও ঠিকাদারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ঠিকাদার আমির আজম রেজা এ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,‘জুন থেকে সেপ্টম্বর পর্যন্ত বৃষ্টি থাকে। এই সময়ে যদি কার্পেটিং করি তাহলে তা থাকবে না। বৃষ্টির সিজন গেলে আমরা কার্পেটিং করবো। তবে সিংহভাগ কাজ শেষ। কাজের সুন্দরের জন্য আমি এক লাখ টাকার বাড়তি ইট লাগিয়েছি। আশা করি সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে কার্পেটিং এর কাজ শুরু করবো।’
প্রতিবেদকঃ শিমুল হাছান, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১