চাঁদপুর-শরীয়তপুর দু’প্রান্তে ৫৫ কিলোমিটার মহাসড়কের নাজুক অবস্থা। সড়কের বিভিন্নস্থানে বড় বড় গর্ত হওয়ায় যান চলাচল অনুপোযুগী হয়ে পড়েছে।
মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে হাঁটু সমান গর্তের কারণে যানবাহন উল্টে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের গর্ত গুলোতে পানি জমে পুকুরের মত হয়ে পড়ছে। পুরো মহাসড়কে কোথাও কালো পিচের চিহ্ন নেই। পিচ ঢালাই উঠে লাল ইটের কণা ভেসে উঠছে। তা যেনো কাঁচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। আবার রোদ উঠলেই ছড়াচ্ছে অসহনীয় ধুলাবালি।
চাঁদপুর- শরীয়তপুর মহাসড়কের উপর দিয়ে খুলনা-চট্টগ্রামসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার কয়েক হাজার ভারি যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করে থাকে। দীর্ঘ কয়েক বছর আগে সড়কটির সংস্কার কাজ করা হলেও বছর না ঘুরতেই যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়কটি। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে যানবাহন ও জনসাধারণ।
এদিকে খবর নিয়ে জানাযায় নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রি দিয়ে কাজ করার কারণে মেরামতের ৬ মাস পরে সড়কে পিচ ঢালাইর কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০ কিলোমিটার। এরমধ্যে শরীয়তপুরের আঙ্গারিয়া বাজার থেকে ভেদরগঞ্জ উপজেলার নরসিংহপুর আলুর বাজার ফেরিঘাট পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
বড় বড় গর্তে পরিণত হয়ে পুকুরের ন্যায় মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ সড়কে প্রতিনিয়ত যানবাহন দুর্ঘটনায় কবলিত হয়ে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে জনসাধারণ ও যাত্রীরা।
ট্রাক চালক সুরুজ মিয়া চাঁদপুর টাইমসকে জানান, সড়কটি এতো খারাপ হয়ে পড়েছে যে এ রাস্তায় একদিন গাড়ি চালালেই অসুস্থ হয়ে পড়তে হয়। দুর্ঘটনার ভয়ে এখন আর এ সড়ক দিয়ে গাড়ি চালাতে ইচ্ছে করে না।
লক্ষ্মীপুরের ব্যবসায়ী শিমুল মিয়া বলেন, সড়কটি খারাপ হওয়ার কারণে বাধ্য হয়ে অন্য জায়গা ঘুরে আমাদেরকে বিভিন্নস্থানে যেতে হয়। এতে খরচ বেশি, সময় লাগে বেশি, ভোগান্তিও বেশি।
বালার বাজার এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, বৃষ্টির কারণে মাটি নরম হয়ে প্রতিদিনই একটি না একটি গাড়ি উল্টো যাচ্ছে। ক’দিন আগে শরীয়তপুরে প্রায় ৫শ’ গ্যাস সিলিন্ডারসহ একটি গাড়ি উল্টে যায়। সৌভাগ্যবশত সিলিন্ডারগুলো খালি ছিল। তা না হলে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পুরো এলাকা ধ্বংস হয়ে যেত।
বিআই ডাব্লিউ টিসি চাঁদপুর ফেরীঘাটের বানিজ্য ব্যবস্থাপক পারভেজ খান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, বিশেষ করে চাঁদপুর জেলায় চান্দ্রা চৌরাস্তা থেকে ফরিদগঞ্জ ভাটিয়ালপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। শরীয়তপুর জেলার ফেরীঘাট থেকে শুরু করে আঙ্গারিয়া পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে সড়কের নাজুক অবস্থা। এ সমস্যা দেড় দুই মাস ধরে বলে জানা গেছে।
তিনি আরো জানায় চাঁদপুর এবং শরীয়তপুর এ দুই জেলার ফেরী ফারাপারের জন্য যে সড়কের অবস্থান রয়েছে, সেগুলোর বেহাল দশার কারনে দেড় দুই মাস ধরে ফেরীঘাট দিয়ে দক্ষিন বঙ্গের তেমন কোন যানবাহন পারাপার হচ্ছেনা। আগে যেখানে চাঁদপুর এবং শরীয়তপুর মিলে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই’শ গাড়ি পারাপার হতো। সড়কের অবস্থা নাজুক হওয়ায় এ সড়ক দিয়ে দক্ষিণ বঙ্গের গাড়ি না আসাতে এখন প্রতিদিন গড়ে এক দেড়’শ গাড়ি পারাপার হচ্ছে। এত করে সরকারের রাজস্ব আয় কমে যাচ্ছে।
সড়কটি পুনঃ সংস্কারের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগেরও তেমন কোন উদ্যোগ নেই বলেও জানান তিনি।
প্রতিবেদক : কবির হোসেন মিজি
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮ : ২৮ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৭, শুক্রবার
এইউ