ফরিদগঞ্জ

১৭৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য দু’শিক্ষক : বিদ্যালয়ে নেই টয়লেট

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ১৪৭ নং পূর্ব ধানুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাত্র দু’জন শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।

এদের একজন আবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বেশিরভাগ সময় দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকায় সহকারী শিক্ষককেই সবকটি ক্লাস নিতে হচ্ছে। ফলে চলতি পিএসসি পরিক্ষায় বিদ্যালয়ের ফলাফল বিপর্যের আশংখ্যায় অভিভাবকদের ভিতর চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সম্প্রতি দু’জন শিক্ষকের বেতনের টাকায় স্থানীয় দু’কলেজ শিক্ষার্থীকে খন্ডকালীন নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলী আহম্মদ পাটোয়ারী।

সরকারি বিধি মোতাবেক সরকারি প্রাক প্রাইমারিতে ৫ জন শিক্ষক থাকার বিধান থাকলেও বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক পদ খালি থাকার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, স্কুলটি ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি রেজিস্টার্ড থেকে সরকারিকরণ করা হয়।

বর্তমানে স্কুলটিতে প্রাক-প্রাথমিকে ২৯, প্রথম শ্রেণিতে ৩৩, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৩০, তৃতীয় শ্রেণিতে ৩৬, চতুর্থ শ্রেণিতে ২৯, প্রাথমিক সমাপনিতে ২১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

প্রধান শিক্ষকসহ এতে ৫জন শিক্ষকের কোটা থাকলেও ২০১৪ সাল থেকে প্রধান শিক্ষক নেই। ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর ১ মাসের ছুটিতে সহকারী শিক্ষক খাদিজা লন্ডন সফরে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে অপর সহকারী শিক্ষক সালমা আক্তার বিপিএড ট্রেনিংয়ে থাকায় বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ মাত্র দু’জন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে সংবাদ সংগ্রহে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলা অবস্থায় এক শিক্ষার্থী জানালার পাশ থেকে সংবাদকর্মী দেখে বলে উঠে, ‘স্যার আমাগো বাথরুম নেই’ ।

বিষয়টি নিয়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলী আহমদ পাটোয়ারী জানান, স্কুল ভবনটি নতুন করে তৈরি করার সময় টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিপাকে আছেন। এ ছাড়াও নতুন ভবনের পাশে জরাঝীর্ণ একটি ভবন রয়েছে, যা এখনো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি। যে কোনা সময় ভবনটি ধসে পড়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ওই ভবনটির পেছনের অংশে একটি পুরোনো টয়লেট থাকলেও তা অনেক আগেই পরিত্যাক্ত হওয়ায় সেটি ব্যবহার করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। কারণ সেটিও ভেঙে পড়ার উপক্রম।

এ অবস্থায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা পাশের বাড়ির টয়লেট ব্যবহার করতে হয় বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে নতুন কমিটির সভাপতি আব্দুল হান্নান খান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘আমি সবে মাত্র নির্বাচিত হয়েছি। আগামি বছরের (২০১৭) জানুয়ারি থেকে দায়িত্বভার গ্রহণ করবো। আমারও বুঝে আসে না, যখন নতুন ভবনটি করা হয়েছে তখন কি কারণে কেনো টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়নি। এছাড়া ভবনটির স্ট্রাকচার ম্যাপও পাইনি। তাই স্ট্রাকচারে টয়লেটের বিষয়টি উল্লেখ ছিলো কিনা তাও জানতে পারেনি। তবে আমি মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে শীঘ্রই এটি সমাধানের চেষ্টা করবো।’

এদিকে বর্তমান কমিটির সভাপতি কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমার মেয়াদ তো শেষ (ডিসেম্বর পর্যন্ত)। টয়লেটের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর গত বছর আবেদন করা হয়েছে।’

শিক্ষক সংকটের বিষয়টি তিনি কমিটির মেয়াদ শেষের অজুহাতে দেখিয়ে এড়িয়ে যান।

অপরদিকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ বিষয়ে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেদক- দেলোয়ার হোসাইন : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৪:০০ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ

Share