রাজনীতি

স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি শফিউল বারী আর নেই

স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিউল বারী বাবু আর নেই। মঙ্গলবার ভোর ৪টায় রাজধানীর এভার কেয়ার (সাবেক অ্যাপোলো) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি … রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৪৯ বছর।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শফিউল বারী স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।

এর আগে সোমবার দিবাগত রাত ১টা ৫২ মিনিটে শফিউল বারী বাবুকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল থেকে এভার কেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি গোলাম সারোয়ার জানান, প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট থাকায় শফিউল বারী বাবুকে সোমবার বেলা ১১টায় তাৎক্ষণিকভাবে রাজধানীর ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। গত বেশ কিছু দিন ধরে ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছিলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ফুসফুসে সংক্রমণজনিত কারণে শফিউল বারীর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি রাজধানীর ইস্কাটনের বাসাতেই ছিলেন। কিন্তু সোমবার হঠাৎ করে তার শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে গেলে দ্রুত তাকে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরে চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে তার করোনা পরীক্ষা করা হলে ফল নেগেটিভ আসে বলে জানান স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি গোলাম সারোয়ার।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, শফিউল বারী বাবুর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ ছিল। সোমবার রাতে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক দল সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলীসহ অনেকে সেখানে গিয়ে খোঁজখবর নেন। ভোরে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান সাবেক এ ছাত্রনেতা।

সকালে শফিউল বারী বাবুর লাশ মোহাম্মদপুর আল মার্কাজুলে গোসল করানো হয়। এর পর গোসল শেষে ৪৫ নিউ ইস্কাটন বিএমএর গলিতে মরহুমের বাসায় লাশবাহী গাড়ি রাখা হয়।

শফিউল বারী বাবুর প্রথম জানাজা সকাল ১০টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জানাজা শেষে শফিউল বারী বাবুর লাশ তার জন্মস্থান লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে নেয়া হবে। সেখানে বাদ আসর জানাজা শেষে পারিবারিক করবস্থানে দাফন করা হবে।

শফিউল বারী বাবুর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আকন কুদ্দুসুর রহমান, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ ও তাবিথ আউয়াল, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।

শফিউল বারীর আকস্মিক মৃত্যুতে পুরো বিএনপির নেতাকর্মীরা গভীরভাবে শোকাহত। শোকবার্তায় মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির রাজনীতির এক নির্ভীক সৈনিক ছিলেন বাবু। দলের সব ক্রান্তিকালে বাবু দায়িত্ব পালন করতেন অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে। নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করেও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে বাবু থাকতেন সামনের কাতারে। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি আইনের শাসন, মানবিক মর্যাদা, মৌলিক-মানবাধিকারসহ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে গেছেন দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে।

তিনি আরও বলেন, দেশে করোনার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই নিজের জীবনকে বিপন্ন করে নিরন্ন কর্মহীন মানুষের পাশে বারবার ত্রাণসামগ্রী নিয়ে দাঁড়িয়েছেন সাবেক এ ছাত্রনেতা। অকালে পৃথিবী থেকে তার চলে যাওয়া দলের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন।

বাবুর মৃত্যুতে দেশব্যাপী জেলা, মহানগর এবং এর অধীনস্থ সব থানা, উপজেলা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের কার্যালয়ে মঙ্গলবার দিনব্যাপী খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

বার্তা কক্ষ, ২৮ জুলাই ২০২০

Share