চাঁদপুর জেলা প্রশাসনে লোকবল সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। লকডাউনে জেলা সদরের পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনকে রীতিমতো হিশমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া ২ জন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ ৪ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটসহ বেশ কয়েকজন কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হওয়ায় প্রশাসনের সার্বিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে করোনা আক্রান্ত হন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)।
১ আগস্ট শনিবার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ চাঁদপুরের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
এতে লিখেছেন, ‘আমাদের চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দাউদ হোসেন চৌধুরী করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার স্ত্রীও করোনা আক্রান্ত। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেন স্ত্রী-সন্তানসহ করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল মোর্শেদ, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দেবজানী কর করোনা আক্রান্ত হয়ে চাঁদপুর সার্কিট হাউসে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
‘এ মুহূর্তে চাঁদপুর জেলায় কোন ডিডি এলজি ( উপপরিচালক, স্থানীয় শাখা, উপসচিব পদমর্যাদার) নেই, সিনিয়র অফিসারের মধ্য আছেন নতুন যোগদানকারী একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। বাকী যে কয়জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আছেন তারা সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার, পুলিশকে সাথে নিয়ে রাত- দিন চাঁদপুরে লকডাউন বাস্তবায়নে মোবাইল কোর্ট করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে আছে অফিসের রেগুলার কাজ( রিপোর্ট রিটার্ন, বিভিন্ন মিটিং আয়োজন,তদন্ত) ত্রাণ বিতরণ।’
তিনি আরও লিখেন, ‘আমার এই ক্লান্তিহীন যোদ্ধারা যাতে হতাশ না হয়, ভেঙে না পড়ে, যাতে নতুন উদ্যমে কাজ করে যেতে পারে সেজন্য মাঠে উপস্থিত হয়ে প্রেরনা দিয়ে যাচ্ছি আমি। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদেরকে মাঠে সহযোগিতার জন্য গঠন করেছি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। সে সাথে মাঠে রেখেছি স্কাউটস, রোভার ও বিএনসিসি।’
জেলা প্রশাসক লেখেন, ‘আমরা হারবো না, আমরা হারতে শিখিনি। ইনশাআল্লাহ চাঁদপুরে করোনাকালীন এই দুর্যোগ আমরা কাটিয়ে উঠবো। শুধু চাঁদপুরবাসীর নিকট আমাদের অনুরোধ আমরা আপনাদের জন্য কাজ করছি, আপনারা আমাদের প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন,দয়াকরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।’
জানা গেছে, এই জেলায় সহকারী সিনিয়র সচিবসহ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের মোট পদ ১৯টি । আছেন মাত্র ৬ জন। এর মধ্যে পদে নাই উপপরিচালক ১ জন (উপসচিব পদ মর্যাদার), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ২ জন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ৪ জন, সহকারী কমিশনার ৬ জন।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, গত ২৭ জুলাই আমি জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে শূন্যপদগুলো পূরণে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু ওই চিঠি পাঠানোর পর ২ দিন পরই করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এবং তার শিশু ছেলে। এর ২ দিন আগে আক্রান্ত হয়েছেন তার স্ত্রী। তারা সবাই ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
স্টাফ করেসপন্ডেট, ১ আগস্ট ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur