করোনাভাইরাস মহামারী রোধে স্বাস্থ্যবিধির শর্তগুলো যেসব গণপরিবহন অমান্য করবে, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এজন্য টার্মিনালে ও সড়কে নজরদারি থাকবে।
৩০ মে শনিবার দুপুরে সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
গণপরিবহন চলার শর্তগুলো তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাসসমূহে ৫০ ভাগ যাত্রী পরিবহন করা যাবে অর্থাৎ অর্ধেক সিট খালি রাখতে হবে। যাত্রী ওঠানামার সময় সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলতে হবে। যাত্রী, শ্রমিক, চালক, চালকের সহকারী, কাউন্টার কর্মী সকলকে মাস্ক পরতে হবে।
তিনি বলেন, টার্মিনাল ও স্টেশনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হাত ধোয়ার জন্য সাবান-পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে। বাসে যাত্রী তোলার আগে ও নামানোর পরে জীবানুনাশক স্প্রে করতে হবে। অনুমোদিত স্টপেজ ছাড়া বাস থামানো যাবে না, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করা যাবে না।
সোমবার সড়ক পরিবহন চলা শুরু হচ্ছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠন এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহেল্ডারদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালনে সকলেই সম্মতি দিয়েছে। আমরা সবাই মিলে ভালো থাকতে চাই। সামান্য উপেক্ষা ভয়াবহ বিপদ ডেকে আতে পারে।
“তাই যে সকল শর্ত বিআরটিএ তথা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়েছে সেসব শর্ত যথাযথভাবে প্রতিপালনে আমি নিজেদের স্বার্থেই যাত্রী সাধারণ, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনকে অনুরোধ জানাচ্ছি। যে সকল পরিবহন সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালনে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ যথাযথভাবে হচ্ছে কি না তা নজরদারিতে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে টার্মিনালভিত্তিক মনিটরিং টিম গঠন ও কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান সড়কমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমরা চাই না পরিবহন কিংবা টার্মিনাল করোনা সংক্রমণের কেন্দ্রে পরিণত হোক। আমি টার্মিনালসমূহের কর্তৃপক্ষকে পুরো এলাকাজুড়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযান তথা জীবানুমুক্ত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।”
এর পাশাপাশি বিআরটিএর মোবাইল টিমসহ সরকারি নজরদারিও কার্যকর থাকবে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশে সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতির কথা স্বীকার করেও গণপরিবহন চালুর যুক্তি হিসেবে অর্থনীতি বাঁচানোর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “করোনা আক্রান্ত ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ২২তম। সামনে কঠিন সময় আসছে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। এই কঠিন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক দেশ আমাদের চেয়ে খারাপ অবস্থা স্বত্ত্বেও লকডাউন শিথিল করেছে, কেউ কেউ তুলে নিয়েছে। ”
করোনাভাইরাসের সংকটে ঢালাও সমালোচনা না করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “এই কঠিন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তার ওপর আমাদের আস্থা রাখতে হবে। ঢালাও সমালোচনা না করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।
“আমাদের মাঝে রাজনৈতিক মতপার্থক্য আছে এবং থাকবেই, কিন্তু সবার এ কথা মনে রাখতে হবে যে, করোনা আমাদের সকলেরই অভিন্ন শত্রু। এই সময়ে বিভেদের রাজনীতি করোনা সংক্রমণে করোনার পরম বন্ধু হিসেবে কাজ করবে।”
ঢাকা ব্যুরো চীফ,৩০ মে ২০২০