বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বার্থ ছাড়া সম্পর্ক হয় না। দুই দেশেরই স্বার্থ আছে। ভারত একটি বড় প্রতিবেশী দেশ, বাংলাদেশের তিন পাশজুড়ে যার অবস্থান, সেই দেশের সঙ্গে যুদ্ধ করে হবে না। আলাপ-আলোচনা করে কাজ করতে হবে।
আজ শনিবার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন। ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবের আমন্ত্রণে আগামীকাল রোববার আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ভারত সফরে যাবে। এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের ভারত সফরের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক নেই। এগুলো দুটি দেশের রাজনৈতিক দলের মধ্যে আনুষ্ঠানিকতা। তিনি আরও বলেন, একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল ভারতে যাবে। সেখানে গিয়ে ভারতের পার্লামেন্টের অধিবেশন, অধিবেশনের কার্যক্রম ইত্যাদি দেখবে। এ ছাড়া প্রতিবেশী একটি দেশের সঙ্গে এমন সফর হতেই পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সফর শেষে দেশে এসে সফরের কার্যকারিতা সম্পর্কে বোঝা যাবে। দুই দেশের মধ্যে এ ধরনের বড় ডেলিগেশন বিনিময় হয় না অনেক দিন। দুই দেশের মধ্যে ‘পার্টি টু পার্টি’ এ ধরনের সফর হয়। এটি দুই দেশের বন্ধুত্বের বন্ধনকে দৃঢ় করে।
ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানি চুক্তির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এই বিষয়টি তো আলোচনার বিষয়। চাইলেই তো ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পানি দিতে পারবে না। পশ্চিমবঙ্গের সম্মতির ব্যাপারও আছে। এসব বিষয়েও সেখানে আলোচনা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ক্ষমতার উৎস জনগণ। আমরা চাইব না, বিজেপি এসে আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দিক। নির্বাচন ঘিরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের তৎপরতা হয়, কিন্তু ভারত কখনো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে হস্তক্ষেপ করে না।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের এক বক্তব্যের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘অবশ্যই হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে। আমি এখন এখান থেকে ওই রুমে যাওয়ার আগেই আমার মৃত্যু হবে না, এটা কেউ বলতে পারবে?’ এ সময় ফখরুল ইসলামকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘বামপন্থী রাজনীতি করেছেন তো, এ জন্য আল্লাহ-খোদা বিশ্বাস করেন না।’
সফর বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল আগামীকাল রোববার ভারত সফরে যাবে। সেখানে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে প্রতিনিধিদল। পরে নৈশভোজে অংশ নেবে। পরদিন সোমবার সকালে ভারতের পার্লামেন্ট ভবন পরিদর্শন শেষে বিকেল সোয়া চারটায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে প্রতিনিধিদল। এরপর বিজেপির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হবে। ২৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) দুপুরে প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের উদ্দেশে ভারত ত্যাগ করবে। এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সফর বিষয়ে অবহিত করবে প্রতিনিধিদল।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলে থাকবেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, মহিবুল হাসান চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা এবং সদস্য গোলাম কবির রাব্বানী।
সাংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম আলো