স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ সকল স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (সকল) ও ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্টদের ১১তম গ্রেড হইতে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করনের দাবীতে চাঁদপুরে কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
৩০ নভেম্বর শনিবার সকালে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রহিম বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশের কাছে স্মারকলিপি তুলে দেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ১০ গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় অনুমোদিত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টগণ। স্বাস্থ্যসেবায় রোগ নির্ণয় ও ঔষুধ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ সেবাদান কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত। স্বাস্থ্যসেবা একটি “টিম ওয়ার্ক” যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ তত্ত্বাবধানে চিকিৎসক ও নার্সদের পাশাপাশি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টগণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। যেকোন মহামারী যেমন- করোনা, ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া ইত্যাদিতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টগণ রোগ নির্ণয় ও ঔষুধ সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। রোগীদের সেবাদানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো যেমন (এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, নমুনা সংগ্রহ, প্যাথলজিকাল পরীক্ষা, ক্যান্সার চিকিৎসায় রোগীদের রেডিওথেরাপী, ফিজিওথেরাপী, ডেন্টাল) রোগ নির্ণয়ে সর্বাত্মক ভূমিকা রাখেন মেডিকেল টেকনোলজিস্টগণ। ফার্মাসিস্টগণ মেডিসিন স্টোরের দায়িত্ব, ঔষধের চাহিদাপত্র প্রস্তুতকরণ, সংরক্ষণ, মান নিয়ন্ত্রণ, বিতরনসহ ইত্যাদি দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন। এ পেশায় বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এ পেশায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বরং অবহেলিত রয়েছে বছরের পর বছর। অন্যান্য ডিপ্লোমা কোর্সধারীর মধ্যে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, ডিপ্লোমা নার্স এবং ডিপ্লোমা কৃষিবিদরা ইতোমধ্যেই ১১তম গ্রেড হতে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করেছে। উল্লেখ্য, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা ১৯৯৪ সাল, ডিপ্লোমা নার্সরা ২০১১ সালে এবং অনুরূপভাবে ডিপ্লোমা কৃষিবিদরা ২০১৮ সালে দ্বিতীয় শ্রেণীর (১০ম গ্রেড) কর্মকর্তার পদমর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
অথচ, সমশিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা স্বত্বেও অতীব পরিতাপের বিষয় ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ন্যায্য অধিকার ১০ম গ্রেড (দ্বিতীয় শ্রেণী) দাবীটি আজও বাস্তবায়িত হয়নি। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে এই পেশার পথচলা শুরু হলেও ১৯৮৯ সাল পরবর্তী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পেশাজীবিদের ১০ম গ্রেড দাবীটি অব্যাহতভাবে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে বারংবার উপস্থাপিত হয়ে আসছে। কিন্তু বাস্তবায়নের দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি।
সর্বশেষ ২০২৪ সারের ১লা অক্টোবর, ৩রা অক্টোবর ১১ ডিসেম্বর তারিখে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। তার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে ২০২৫ সালের ১লা জানুয়ারী তারিখে সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে ১০ম গ্রেড প্রদান সংক্রান্ত প্রস্তাবনা প্রেরণ করেন এবং সর্বশেষ ১০ম গ্রেড এর ফাইলটি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ প্রশাসন-১ শাখা ১৬/১১/২০২৫ ইং ১০ম গ্রেডে উন্নীত করনের জন্য সর্বশেষ চিঠি উপ-সচিব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। অধ্যবধি পূর্বের ন্যায় ১০ম গ্রেড উন্নীতকরণের ফাইলটি দাপ্তরিক দৌড়াদৌড়ি, ওপর মহলের চাপ, কোয়ারীর পর কোয়ারীর কারণে জর্জরিত হয়ে আর লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে চাপা পড়ে আছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় অনুমোদিত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রিত সারাদেশের সকল সরকারি, বেসরকারী, স্বায়ত্বশাসিত ও আধা স্বায়ত্বশাসিত মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জাতীয় সংসদ সচিবালয় মেডিকেল সেন্টার, সচিবালয় ক্লিনিক, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে মেডিকেল সেন্টার, বঙ্গভবন মেডিকেল সেন্টার, স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষায়িত ইনস্টিটিউটসমূহে আমরা স্বাস্থ্যসেবার রোগ নির্ণয় ও ঔষুধ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ সেবাদান কার্যক্রমের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত। দাবীসমূহ বাস্তবায়ন না হলে লাগাতার কমপ্লিট শাট-ডাউন পালিত হবে জানান নেতৃবৃন্দ।
স্বারকলিপি প্রদানকালে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ১০ গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল মালেক মিয়াজী, ফয়েজ আহম্মদ, মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মোঃ মনির হোসেন, (ফার্মাসিস্ট) সবুজ চন্দ্র সরকার, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট খান মোঃ রিয়াজ, মোঃ নাজির আহম্মদ, রতন চন্দ্র দাস, সুমা, মধুসুদন দাসসহ অনৌান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সিনিয়র করেসপন্ডেট/
৩০ নভেম্বর ২০২৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur