Home / সারাদেশ / স্বামীর স্বীকৃতি পেতে পেতে কুমিল্লায় ডেনমার্কের নারী : স্বামী পলাতক
denmark-women

স্বামীর স্বীকৃতি পেতে পেতে কুমিল্লায় ডেনমার্কের নারী : স্বামী পলাতক

স্ত্রীর অধিকার ও সন্তানের স্বীকৃতি পেতে ডেনমার্কের এক নারী উড়ে এসেছেন কুমিল্লায়। ২৯ বছর বয়সী ওই নারীর নাম নাদিয়া। তার সঙ্গে রয়েছে তার তিন বছর বয়সী কন্যা সন্তান।

২৭ নভেম্বর বুধবার কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার আশারকো গ্রামের মফিজ মেম্বারের বাড়িতে অবস্থান নেন তিনি। সেখানে তিনি দাবি করেন, মফিজ মেম্বারের ছেলে সাইফ তার স্বামী।

তবে, নাদিয়াকে দেখেই নিজেকে আত্মগোপন করেন সাইফ। এ সময় প্রতারক আখ্যা দিয়ে স্বামীর বাড়ির লোকজন তাকে মারধোর ও নির্যাতন করেছে বলেও স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন তিনি।

নাদিয়া জানান, প্রায় ১০ বছর আগে নাঙ্গলকোট উপজেলার আশারকোটা গ্রামের মফিজ মেম্বারের ছেলে সাইফ তাকে বিয়ে করেন। তিন বছর আগে তাদের সংসার জুড়ে আসে একটি কন্যা সন্তান।

এদিকে নাদিয়ার পরিবার থেকে এবং তার চাকুরীর বেতনের প্রায় ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাইফ। এ ছাড়া সম্প্রতি সাইফ ডেনমার্ক থেকে বাংলাদেশে আসবে বলে নাদিয়ার কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার ইউরো হাতিয়ে নেয়।

গত ৩ মাস আগে বাংলাদেশে আসে সাইফ। দেশে এসেই নাদিয়ার সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়, ফেসবুক আইডিও বন্ধ করে দেয়।

অন্যদিকে, দেশে এসে প্রতারক সাইফ কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকার অনার্স পড়ুয়া এক মেয়েকে ডেনমার্ক নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করেছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু নতুন বিয়ের ২ মাস পার হওয়ার আগেই ডেনমার্ক থেকে ওই নারী তার স্বামীর অধিকার ও সন্তানের স্বীকৃতি পেতে সাইফের খোঁজে ছুটে আসেন।

এ সংবাদ আশারকোটা গ্রামসহ পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিদেশি ওই নারীকে দেখতে হাজারো মানুষ ভিড় জমায় সাইফের বাড়িতে। এই অবস্থা দেখে ওই নারীকে গ্রামের বাড়ি থেকে কৌশলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকার হোটেল নুরজাহানে নিয়ে আসে সাইফের লোকজন। পরে সেখান থেকে কুমিল্লা নগরীর রেইসকোর্স এলাকায় হোটেল রেডরোফ ইন-এ নেওয়া হয় তাকে।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে ওই হোটেলে অবস্থানকালে নাদিয়া জানান, সাইফ আজকে সকালে ডেনমার্ক চলে গেছে। সে আমাকে ফোন করে চলে যেতে বলে। তাই আমার বাংলাদেশে থেকে লাভ কী?

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান, নাঙ্গলকোট থানার অফিসার ইন-চার্জ মামুনুর রশিদসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নাদিয়া। এ সময় এই পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে ওই নারী নাঙ্গলকোট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন।

এ সব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সাইফ এবং তার বাবা মফিজ মেম্বারের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি।

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, কুমিল্লা, ২৭ নভেম্বর,২০১৯