স্বামীর সাথে চাঁদপুরে এসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ মিশরী তরুণী নুরহান

আরব রাষ্ট্র মিশর থেকে স্বামীর সাথে বাংলাদেশে এসেছেন নুরহান নামের সুন্দরী তরুণী। এই প্রথম নয়, গত একবছর আগেও এসেছেন বাংলাদেশে। তখন স্থানীয়ভাবে তেমন জানাজানি হয়নি। এবার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন নুরহান। তিনি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশ দেখেই খুবই মুগ্ধ। তার নিজের ভাষা আরবিতে ‘‘বানজালাদেশ জামিলাতুন জিদ্দান, মুয়াজ্জিবান জিদ্দান বিলবাইয়্যেনাতি লিহাজাল বিলাদ’’ (বাংলাদেশ খুবই সুন্দর। এদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখে খুবই মুগ্ধ) এভাবে অনুভুতি প্রকাশ করলেন নুরহান।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের আলোনিয়া গ্রামের মিজি বাড়ীর মৃত মফিজুল ইসলামের ছেলে মোবারক হোসেন। কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে ২০০৮ সালে পাড়ি জমান মিশরে। ওই দেশের রাজধানী কায়রোর একটি পোশাক কারখানার কাজ করতেন মোবারক। তার কর্মএলাকায় বসবাস করতেন নুরহান নামে তরুণীর পরিবার। বেশ কিছুদনি অতিহবাহিত হওয়ার পর পরিচয় হয় নুরহানের সাথে। পর্যায়ক্রমে পরিচয় থেকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক হয়।

নুরহানের পিতা ফৌজি রমদান লিবিয়ার নাগরিক। তিনিও কর্মসংস্থানের কারণে মিশরের বসবাস করেন। মোবারক ও নুরহানের সম্পর্ক জানতে পেরে প্রথমে মেনে না নিলেও এক সময় মেনে নেন। এরপর গত ২০১৬ সালে তাদের বিয়ে হয়। ওই বিয়েতে মোহরানা ধার্য করা হয় বাংলাদেশী টাকায় ১০লাখ টাকা। বিয়ের পর থেকে এই দম্পত্তি খুবই সুখ ও শান্তিতে রয়েছেন বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। গত দুইবছর আগেও মোবারক নুরহান বাংলাদেশে এসে ভ্রমন করে যান। গত এক মাস আগে আবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দেশে এসেছেন।

মোবারক হোসেনের বাড়ী জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায় হলেও বর্তমানে চাঁদপুর সদর উপজেলার শহরতলী তরপুরচন্ডী গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ীতে সম্পত্তি ক্রয় করে বাড়ী তৈরী করে তার পরিবারের সদস্যরা বসবাস করছেন। এই বাড়ীতে এখন স্ত্রী নুরহানকে নিয়ে উঠেছেন। নুরহানের পিতা-মাতা, দুই ভাই ও তিনিসহ তিন বোন। নুরহান ভাই বোনদের মধ্যে তৃতীয়। মোবারকের বাবা নেই। মোবারক ছাড়া তার মা, দুই বোন এক ছোট ভাই থাকেন বাড়ীতে। মোবারক পরিবারের বড় সন্তান।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, আমাদের এলাকার মোবারক বিদেশ থেকে বিয়ে করে বউ এনেছে। তারা খুবই সুন্দরভাবে চলাফের করছে। আমাদের কাছে মিশরী এই মেয়ের আচার আচরণ খুবই ভাল মনে হয়েছে।

মোবারক হোসেরন মা জয়তুন নেছা বেগম জানান, আমার ছেলে আজ ১৫ বছর ধরে মিশরে থাকে। ২০১৬ সালে বিয়ে করেছে। গত বছরও একবার বাড়ীতে এসেছে বউকে নিয়ে। এখন আবার এসেছে। মেয়েটি  ভাল। নামাজ কালাম পড়ে। কাজ কামও করতে পারে টুকটাক। ছেলের কাছ থেকে অল্প বাংলা শিখেছে। তারা উভয় এখন ভালো আছে। সবাই আমার ছেলে এবং বউরে জন্য দোয়া করবেন। কয়েকদিন পরে ছেলে ও বউ আবার মিশরে চলে যাবে।

নুরহান তার নিজের পরিচয় তুলে ধরে বলেন, আমার নাম নুরহান। মোবারকের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। মোবারক ও তার পরিবারের সদস্যরা খুবই ভাল। তাদের সাথে থেকে আমার খুবই ভাল লেগেছে। তারা আমার প্রতি খুবই যত্নবান। আমার শ^াশুড়ী খুবই ভাল মানুষ। তাকে আমি ভালোবাসি। বাংলাদেশ খুবই সুন্দর। এদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখে আমি খুবই মুগ্ধ।

মিশর প্রবাসী মোবার হোসেন জানান, ২০০৮ সালে আমি কাজের জন্য মিশরে যাই। সেখানে নুরহানদের পাশেই আমার বাসা ছিল। সেখান থেকেই ওদের বাসায় যাতায়াত ছিল। তার বাবা ও ভাইদের সাথে আমার ভাল সম্পর্ক ছিল। মাঝে মধ্যে তাদের বাসায় যেতাম এবং তাদের সাথে গল্প হতো। এভাবে তাদের পরিবারের সাথে ভাল পরিচয় হয়। এরপর নুরহানের সাথে আমার মোবাইলে কথা হত। পরে সম্পর্কের বিষয়টি তাদের পরিবারকে জানাই। প্রথমে ওই পরিবার রাজি ছিল না। পরে তারা মেনে নিয়েছে। ২০১৬ সালে আমরা বিয়ে করি।

প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম,১০ জানুয়ারি ২০২৪

Share