জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৪০ ব্যাচের শিক্ষার্থী জেসি ইসলাম আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবার সকালে সাভারের রেডিও কলোনিতে স্বামীর বাসায় গলায় ফাঁস নেন বলে জানায় সাভার মডেল থানা পুলিশ।
তবে তিনি আসলেই কি আত্মহত্যা করেছেন- তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধুম্রজাল।
প্রতিবেশীদের মতে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। কারণ, যে রুম থেকে জেসির লাশ বের করা হয়েছে সে রুমে গলায় ফাঁস দেয়ার মত জায়গা নেই। আর পুলিশি হয়রানির ভয়ে এসব নিয়ে কথা বলতে রাজিও নন প্রতিবেশিরা।
এ ঘটনায় জেসির স্বামীকে প্রথমে পুলিশ আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়।
জেসির স্বামীর নাম সজিব সাহা শুভ্র। সে জাবির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪১ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তাদের দুজনের বাড়ি মাগুরায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে থেকে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ওই জুনিয়রের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে ছিল জেসির। তিন বছর আগে পরিবারকে না জানিয়ে তারা বিবাহ করেন।
এদিকে জেসির ফেসবুক আইডি ঘুরে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে তাদের পারিবারিক কলহ চলছিল। প্রায় এক বছর আগে জেসির পরিবারে বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হয়। পরিবার তার বিয়ের বিষয়টি মেনে নেয়নি। উল্টো সেজিকে ফিরে আসতে চাপ দেয়। অপরদিকে তার স্বামী সজিবও ছিলেন মাদকাসক্ত।
সজিবের বন্ধুরা জানান, সজিব সব ধরনের নেশা করত। অন্যদিকে, জেসির একাডেমিক ফলাফলও খুব ভাল। তার অনার্সের সিজিপিএ ৩.৭৯ ও মাস্টার্সের সিজিপিএ ৩.৭২। এসব মিলিয়ে কয়েকমাস ধরে খুবই হতাশ ছিলেন জেসি।
জেসির সর্বশেষ ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখা ছিল, ‘সম্পর্ক গুলোর গুরুত্ব দিন দিন আমার কাছে কমেই চলেছে। একদিন প্রতিটা সম্পর্ককে অনেক সময় দিয়েছি, সম্পর্ক গুলোকে টিকিয়ে রাখতে অনেক ইফোর্টও দিয়েছি। তবে আজ মনে হয় সবটাই ভুল ছিল।’
এসব কারণেই তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে মনে করছেন তার বন্ধুরা।
অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন বলেন, এভাবে একজন মেধাবী ছাত্রীর চলে যাওয়া দুঃখজনক।
সাভার মডেল থানা পুলিশের ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, ‘সকালে জেসির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করছি। পিতা ও স্বামীর লিখিত অনাপত্তি পত্রের কারণে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দুপুরে পিতার কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।’ (যুগান্তর)
বার্তা কক্ষ
২১ ফেব্রুয়ারি,২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur