কণ্ঠশিল্পী সালমার পাঁচ বছরে তিল তিল করে গড়ে উঠা সুখের সংসার এক নিমেষেই ভেঙে গেলো। ভাঙন ঠেকাতে একমাত্র কন্যা সন্তানও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। কত স্বপ্ন, কত ত্যাগ! কিন্তু স্বামী আওয়ামী লীগের সাংসদ শিবলী সাদিক আর এক সময়ের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী সালমা আক্তার আলাদা পরিচয়ের দুজন মানুষ!
আলোচিত এই দম্পতির মধ্যে ছাড়াছাড়ির গুঞ্জন ছড়াচ্ছে শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল থেকেই। নিশ্চিত হতে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও স্বামী বা স্ত্রীর নাগাল পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে সন্ধ্যার আগে ফোন দিলেন সালমাই। নিশ্চিত করলেন তার বিচ্ছেদের খবর।
১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় ধানমন্ডির একটি রেস্তোরাঁয় উভয় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতেই সমঝোতার ভিত্তিতে তালাকনামায় সই করেন দুজন। এই সইয়ের ফলেই প্রায় ছয় বছরের বিবাহিত জীবনের ইতি ঘটে তাদের। এ সময় বিয়ের দেনমোহর বাবদ ২০ লাখ টাকা সালমাকে বুঝিয়ে দেন শিবলী। সালমা নিজেই জানিয়েছেন এসব তথ্য।
২০০৯ সালে দিনাজপুরের স্বপ্নপূরীতে একটি অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করতে গেলে শিবলীর সঙ্গে সালমার পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরেই দুই পরিবারের মধ্যস্থতায় সম্পূর্ণ ঘরোয়াভাবে ২০১১ সালে তাদের বিয়ে হয়।
দুঃখভরা কণ্ঠে সালমা বলেন, ‘আমার জীবনে বড় ঝড় বয়ে গেলো। স্বামীর অত্যাচার অনেক দিন নীরবে সহ্য করেছি। কিন্তু কাউকেই কোনো কিছু বুঝতে দেইনি। সংসার টিকিয়ে রাখতে সব চেষ্টাই করেছি। ওর সঙ্গে আমি মানিয়ে চলারও চেষ্টা করেছি। কিন্তু কিছুতেই শেষ রক্ষা হলো না।’
সালমার গানের গলাকে ভালোবেসে সালমাকে ঘরে তুলেছিলেন শিবলী সাদিক। কিন্তু বিয়ের পর সেই গান আর তার ভালো লাগেনি বলে জানান সালমা। বলেন, ‘সংসারের জন্য আমি গানের জগতও ছেড়েছিলাম ওর জন্য। কিন্তু সব কিছু ছেড়েও সুখী হতে পারলাম না।’
স্বামী প্রায় রাতেই তাকে মারধর করতেন বলেও অভিযোগ করেন সালমা। বলেন, ‘এগুলো কাউকেই বলতাম না। নীরবে সহ্য করতাম। আর পারলাম না। তাই ভেবেচিন্তে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিবলী সাদিক। তিনি নিজেই ফোন করে বলেন, সালমা উল্টাপাল্টা চলাফেরা করতো। আমরা তাকে সাবধান করেছি। কিন্তু সে এটাকে গ্রাহ্য করেনি। পরে পারিবারিকভাবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সাংসদ শিবলী সাদিক বলেন, আমি মানুষের জন্য কাজ করি। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি দিনাজপুরের পিকনিক স্পট স্বপ্নপূরীর স্বত্বাধিকারী শিবলী সাদিকের সঙ্গে হঠাৎ করেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন কণ্ঠশিল্পী সালমা। এরপর ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি সালমার কোলজুড়ে আসে এক কন্যা সন্তান।
মেয়েটির নাম রাখা হয়েছে স্নেহা। এখন কার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হবে সে? সালমা জানালেন, বাবার কাছ থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে তাকে।
সালমা বলেন, ‘একজন নারী হিসেবে আমি আমার সংসারটাকে অনেক প্রধান্য দিয়েছিলাম। আমার ব্যক্তিগত জীবন ও গান থেকে দূরে গিয়েছিলাম। কিন্তু তার আচরণের কারণে আর পারলাম না। আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে। আমি আমার মেয়ে স্নেহাকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে আছি।’
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সম ২ : 0০ এএম, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ