‘স্বামীকে একমাত্র সন্তানের জন্য হলেও ফেরত চাই’

ইউক্রেনের অলভিয়া সমুদ্রবন্দরে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘এম ভি বাংলার সমৃদ্ধি’তে হামলা হয়েছে। এতে নিহত হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান আরিফ (২৯)। হামলার পর এখনো অক্ষত আছেন ওই জাহাজের আরও ২৮ নাবিক।

তাদের মধ্যে একজন মো. রুকনুজ্জামান রাজীব (২৬)। তিনি ময়মনসিংহ নগরীর কাঁচিঝুলি এলাকার মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী ও কোহিনুর বেগম দম্পতির ছেলে। তিনি চার মাস আগে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটিতে থার্ড অফিসার হিসেবে যোগ দেন। রাজীবের দুই বছর বয়সী এক ছেলেসন্তান রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যার পর রুকনুজ্জামান রাজিবের মা কোহিনুর বেগম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, আমার ছেলে চার মাস আগে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটিতে থার্ড অফিসার হিসেবে যোগ দিয়ে বাড়ি ছাড়ে। সরকারের কাছে একমাত্র আবেদন যে কোনো কিছুর মূল্যে আমার ছেলেকে আমার কোলে ফিরিয়ে দিন।

রুকনুজ্জামান রাজিবের স্ত্রী সিলভিয়া জাহান জাগো নিউজকে বলেন, তার সঙ্গে শুধু এসএমএসে কথা হয়। সেখান থেকে তিনি ভিডিও পাঠিয়েছেন। তিনি দেশে ফেরার জন্য কান্নাকাটি করছেন। একমাত্র সন্তানের জন্য হলেও আমার স্বামীকে ফেরত চাই।

রুকনুজ্জামান রাজিবের বড় ভাই কামরুজ্জমান রাসেল বলেন, রাজীবসহ অন্য নাবিকরা এখন কঠিন সময় পার করছেন। তাদের জাহাজে এক মাসের মতো খাদ্যের জোগান থাকলেও জাহাজের বিদ্যুৎ সিস্টেম নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ফ্রিজসহ সব কিছুই অকেজো হয়ে গেছে। তারা জাহাজ থেকে নেমে তীরে উঠতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে শিপিং করপোরেশন আটক নাবিকদের উদ্ধারে যথেষ্ট চেষ্টা করছে এমন দাবি করলেও মূলত নাবিকদের সঙ্গে ন্যূনতম যোগাযোগ করছে না সংস্থাটির কেউ। এমন দাবি করছেন আটকে থাকা নাবিকরা। এমন একটি ভিডিও পাঠিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মো. রুকনুজ্জামান রাজীব।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, অন্ধকার একটি জায়গা থেকে তারা বলছেন, আমরা এখন নিরাপদে নেই। যে কোনো সময় তাদের ওপর আবারও আক্রমণ হতে পারে।

ওই ভিডিও বার্তায় দেশে ফিরে আসার তীব্র আকুতির কথা জানিয়েছেন রুকনুজ্জামান রাজিব।

এর আগে বাংলাদেশ সময় বুধবার (২ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে এম ভি বাংলার সমৃদ্ধিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে জাহাজে লাগা আগুন তাৎক্ষণিকভাবে নাবিকদের প্রচেষ্টায় নেভানো হয়। এ ঘটনায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান মৃত্যুবরণ করেন।

হাদিসুরের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা বাজার এলাকায়। তিনি ওই এলাকার চেয়ারম্যান বাড়ির বাসিন্দা মো. আবদুর রাজ্জাক (অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক) ও আমেনা বেগম দম্পতির বড় ছেলে। ( জাগো নিউজ)

Share