প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলের জনগণকে উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন। আমাদের লক্ষ্য এই বাংলাদেশকে আমরা একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী আমরা পালন করবো। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ হবে দারিদ্রমুক্ত দেশ।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি গ্রামই এক একটি নগর হিসেবে গড়ে উঠবে। গ্রামের মানুষও উন্নত জীবন পাবে-সেটা আমরা নিশ্চিত করবো। সমগ্র বাংলাদেশই হবে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ।’
শেখ হাসিননা মঙ্গলবার(১০ জানুয়ারি) বিকেলে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালের সেই ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন সেই ভাষণের মধ্যদিয়ে একটি স্বাধীন দেশ কিভাবে পরিচালিত হবে, কোন আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ চলবে, কি কি লক্ষ্য বাস্তবায়ন করবে-সেই দিকনির্দেশনাই ছিল।
জাতির পিতার সেদিনের বক্তব্যকে উদ্বৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি বলেছিলেন, আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারি হবে-এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন।’
এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য বঙ্গবন্ধু সেদিন থেকেই একটি যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশ গড়ে তোলায় আত্মনিবেদন করেন- বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলায় ২০২১ এর লক্ষ্য অর্জনে এ মুহূর্তে করণীয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে দারিদ্রের হার আমরা কমাবো, স্বাক্ষরতার হার বাড়াবো, প্রতিটি ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া শিখবে, দেশের মানুষ খাদ্য নিরাপত্তা পাবে, পুষ্টি পাবে। পুরো দেশ ডিজিটাল হবে। দেশের সব স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম হবে, স্কুল-কলেজসহ পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা, ব্যবসা-বণিজ্যসহ সবকিছু আমরা ডিজিটাল করে দেব।
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও সম্ভ্রমহারা মা-বোনসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘আজকের দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা- জাতির পিতা আমাদের যে দেশ দিয়ে গেছেন, সেই দেশকে আমরা তাঁর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলবো, ইনশাল্লাহ ।’
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে দলের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তর ও দক্ষিণের দুই মেয়র আনিসুল হক এবং সাঈদ খোকন বক্তৃতা করেন।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির পুনরোল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশে কোন জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের স্থান হবে না। এ জন্য আমরা এদেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ, অভিভাবক,জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, অভিভাবক এবং মসজিদের ইমামসহ সবার কাছে আহবান জানাই- সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এই পথে যেন আর কেউ না যায় সেজন্য মানুষকে বোঝাতে হবে এবং সবাইকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী ইসলামকে শান্তির ধর্ম উল্লেখ করে ইসলামে মানুষ হত্যা ও আত্মহত্যা মহাপাপ বলে উল্লেখ করেন। মানুষ হত্যাকারি জান্নাতে নয়, জাহান্নামে যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘যে মানুষ হত্যা করে এবং যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানায়, যাদের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ফাঁসি হয় তাদের হাতে এদেশের গণতন্ত্র আর তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। ’
তিনি বলেন, তারা সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি। জঙ্গিদেরকেও তারা উস্কে দিচ্ছে। বাংলার জনগণই একদিন এদের বিচার করবে গণআদালতেই একদিন এদের বিচার হবে।
নিউজ ডেস্ক
।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ১১: ২৭ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৭ মঙ্গলবার
এইউ