Home / কৃষি ও গবাদি / স্বাধীনতা পদক পেলেন ১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান
স্বাধীনতা পদক পেলেন ১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান

স্বাধীনতা পদক পেলেন ১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে স্বাধীনতা পদক-২০১৬ গ্রহণ করলেন দেশের বিশিষ্ট কবি নির্মলেণ্দু গুণ ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতসহ ১৫ ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠান।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে রাষ্ট্রের এ সর্বোচ্চ পদক তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতা পদক হলো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার। এবছর ১৫ ব্যক্তি ও নৌবাহিনী এ পুরস্কার পাচ্ছেন। যারা মুক্তিযুদ্ধ, শিল্প-সংস্কৃতির উন্নয়নসহ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন তরা এ পুরস্কার পাচ্ছেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। যারা মরণোত্তর পুরস্কার পেয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের অবদান জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের দেশ আরও উন্নত হোক, সমৃদ্ধশালী হোক। এ জাতির উন্নয়নে যারা অবদান রেখেছেন আমরা চেষ্টা করছি তাদের সম্মানিত করতে। জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। এখন আমাদের সকলে কর্তব্য এ দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত-সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। সে লক্ষ্যে আমাদের সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

‘জাতীয় চার নেতাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়েছে। এভাবে হত্যা, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে রাজনীতি শুরু হওয়া এবং অবৈধ ক্ষমতা দখলের যে পালা শুরু হয় তাতে এ দেশ এগুতে পারেনি। একটা দেশে যদি ১৯টা গুম হয়, আর প্রতিনিয়ত যদি এভাবে খুন হয় সে দেশ কখনো সামাজিকভাবে উন্নতি করতে পারে না এবং আন্তর্জাতিকভাবেও উন্নতি করা সম্ভব না,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের আগেই আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হতে পারবো সে বিশ্বাস আমার আছে। আমরা আরও উপরে যেতে চাই। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশে পরিণত হবো।’

‘মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার কারণে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৫৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং ৪টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা জানিয়েছি। যেসব বিদেশি বন্ধু আমাদের সহায়তা করেছেন তাদের সম্মাননা জানিয়েছি।’

এ বছর স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন— ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশকারী এবং প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সংগঠক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ১৯৭১ সালে ভারতের মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং, অপারেশন ও শরণার্থী ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকারী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক।

সফল রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট সমাজসেবক মরহুম মৌলভী আচমত আলী খান।

সুপারসনিক এয়ারক্রাফট এফ-৬ এর সফল পাইলট এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স গঠন প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারী স্কোয়াড্রন লিডার (অব.) বদরুল আলম, বীরউত্তম।

১৯৭১ সালে রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর রাজশাহী পুলিশ লাইনস আক্রমণ প্রতিরোধে পুলিশ ফোর্স সংগঠিতকরণে নেতৃত্বদানকারী শহীদ শাহ আব্দুল মজিদ।

রাঙ্গামাটিতে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে নেতৃত্বদানের জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে শাহাদাতবরণকারী রাঙ্গামাটির তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক এম আবদুল আলী।

১৯৭১ সালে লন্ডনের পাকিস্তান হাইকমিশনে কর্মরত অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশকারী এবং বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান স্বহস্তে লেখক মরহুম এ কে এম আবদুর রউফ।

১৯৭১ সালে দিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনে কর্মরত থাকাকালে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশকারী এবং দিল্লিতে বাংলাদেশের প্রথম মিশন স্থাপনকারী কে এম শিহাব উদ্দিন।

মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার সপক্ষে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনকারী সৈয়দ হাসান ইমাম।

একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী মরহুম রফিকুল ইসলাম ও আবদুস সালাম।

কৃষি গবেষক এবং তোষা পাট ও দেশি পাটের জীবন রহস্য আবিষ্কারক মরহুম অধ্যাপক ড. মাকসুদুল আলম।

‘চিকিৎসাবিদ্যা’ ক্ষেত্রেপ্রথিতযশা শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ রফি খান (এম আর খান)। সংস্কৃতি ক্ষেত্রে রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য কবি নির্মলেন্দু গুণ।

এছাড়া মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান এবং দেশের জলসীমায় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিরলস দায়িত্ব পালনরত বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে স্বাধীনতা পদক দেয়া হয়।

স্বাধীনতা পদকের ক্ষেত্রে সাধারণত পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আঠার ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, দুই লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।

তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে, এবার অর্থ দুই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করা হয়েছে।

||আপডেট: ০১:৫২ অপরাহ্ন, ২৪ মার্চ ২০১৬, বৃহস্পতিবার

চাঁদপুর টাইমস /এমআরআর