স্বাক্ষর জাল করে অন্তত অর্ধকোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে চাঁদপুর পৌরসভার সহকারী হিসাব রক্ষক মো. মঞ্জুর হাসানকে সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে শহরের তালতলা এলাকা থেকে আটক করেছে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ।
আটককৃত মঞ্জুর হোসেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম লাড়ুয়া গ্রামের সৈয়দ আহমেদ পেদার ছেলে। এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ উপজেলার উত্তর বিশকাটালি এলাকার শাহাব উদ্দিন শিহাব চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালে চাঁদপুর পৌরসভায় কিছু সংখ্যক লোক নিয়োগ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তির আলোকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মঞ্জুর হাসান তার এলাকার বিভিন্ন লোকদের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পাশের এলাকার তার বন্ধু শাহাব উদ্দিন শিহাব এর কাছ থেকে চাঁদপুর পৌরসভায় সহকারী আয়কর পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রথমে ৫ লাখ টাকা নেয়। চাকরি দিতে ব্যার্থ হলে পরবার্তিতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে উচ্চমান সহকারী পদে চাকরি দিবে বলে জানায়।
এ প্রেক্ষিতে এই প্রতারক মঞ্জুর হাসান সরকারি খাম ব্যবহার করে ভুয়া নিয়োগপত্র শাহাব উদ্দিন শিহাবের ঠিকানায় পাঠায়। যোগদানের পূর্বে প্রতারক মঞ্জুর হাসান কৌশলে আরও ৬ লাখ ৭ হাজার টাকা লাগবে বলে জানায় এবং তা হাতিয়ে নেয়। সর্বমোট শিহাবের কাছ থেকে ১১ লাখ ৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
শিহাব চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে নিয়োগপত্র নিয়ে যোগদান করতে গেলে ওই অফিসের লোকজন এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান এবং এ ভুয়া নিয়োগ পত্র কোথায় থেকে এনেছেন বলে জিজ্ঞেস করেন।
এছাড়াও অভিযুক্ত মঞ্জুর হাসান চাকরি দেওয়ার কথা বলে হাইমচর আলগী এলাকার ইমাম হোসেন নামে এক লোকের কাছ থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা, একই এলাকার রিয়াদ হোসেনের কাছ থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও রায়পুরের সোহেল নামে আরেক জনের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকাসহ আরো একাধিক মানুষের কাছ থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মতো হাতিয়ে নেয়।
ভুক্তভোগী শিহাব জানায়, ‘আমার টাকার বিষয়ে এলাকায় একাধিক শালিশ বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকের ফলেই বেরিয়ে আসে তার আরও টাকা আত্মসাতের ঘটনা। শালিশ বৈঠকে ২০ জুলাই আমার টাকা দিবে বলে একটি অঙ্গিকার নামা প্রদান করেন। আমি সেই প্রেক্ষিতে তার কাছে টাকা চাইলে সে পুণরায় আমার কাছ থেকে সময় নেয় এবং সোমবার (২১ আগস্ট) চাঁদপুর শহরের তালতলায় আসতে বলে। আমি তালতলা এসে মঞ্জুর হাসানের কাছে টাকা চাইলে সে এবং তার লোকজন মারধর করতে আসে ও টাকার বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে জানায়।’
বিষয়টি আমি আশপাশের লোকজনকে জানালে তারা তাকে আটক করে পুলিশ সুপারকে জানান। পরে চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, মঞ্জুর আমার পার্শ্ববর্তী এলাকার লোক এবং চাঁদপুর পৌরসভায় চাকুরী করার সুবাধে তাকে বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু সে যে, এতো বড় প্রতারক তা আমার জানা ছিলো না।
ভুক্তভোগী শিহাব জানায়, মঞ্জুর হাসানের সাথে যে কারো টাকার বিষয় নিয়ে সমস্যা হলে ওই এলাকার বিল্লাল হোসেন তার পক্ষ নিয়ে পাওনাকৃত লোকদেরকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দেয়।
চাকরি ও টাকার বিষয়ে মঞ্জুর হাসানের কাছে জানতে চাইলে সে অর্থ গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে এবং কতিথ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ ক’জন এমপি, মন্ত্রী ও সচীবদের নাম বলতে থাকে।
প্রতিবেদক : শরীফুল ইসলাম
: আপডেট, বাংলাদেশ ১০ : ৫৪ পিএম, ২১ আগস্ট ২০১৭, সোমবার
এইউ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur