তৃণমূলের মতামত নিয়ে সুনামগঞ্জের চার পৌরসভায় প্রার্থী দিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সুনামগঞ্জ ও দিরাইয়ে একক প্রার্থী থাকলেও ছাতকে দুই বিদ্রোহী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে এ দুই পৌরসভায় চূড়ান্ত ফলাফলে পিছিয়ে যেতে পারে দলটি। তবে চার পৌরসভায় কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় স্বস্তিতে রয়েছে বিএনপি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রে একক প্রার্থীর তালিকা পাঠায়। তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে পাঠানো ওই তালিকা থেকে জগন্নাথপুরে তৃণমূলের মনোনীত প্রার্থীকে বাদ দিয়ে নতুন প্রার্থী হাজী আব্দুল মনাফকে মনোনয়ন দেয় কেন্দ্র। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নেন তৃণমূল আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া। তবে প্রার্থী বদল করেও বিদ্রোহী দমন করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। এ পৌরসভায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা শাহ নূরুল করিম বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন।
এছাড়া ছাতকে দলীয় প্রার্থী আবুল কালাম চৌধুরীকে চ্যালেঞ্জ করে সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ মজনু নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই দুই পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগ।
তবে একক প্রার্থী নিয়ে স্বস্তিতে রয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি। গত বুধবার মেয়র পদে একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। এর মধ্যে সুনামগঞ্জে অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ, ছাতকে সামছুর রহমান শমছু, জগন্নাথপুরে রাজু আহমেদ ও দিরাইয়ে মঈনুদ্দিন চৌধুরী মাসুক একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
তবে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগে বিদ্রোহের সুর শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত তাদের কেউ প্রার্থী হওয়ার সাহস দেখাননি।
জগন্নাথপুর পৌর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহ নূরুল করিম বলেন, ‘আমি সারা জীবন দলের জন্য নিবেদিত ছিলাম এবং এখনও আছি। দীর্ঘদিন ধরে সমাজসেবামূলক কাজে সম্পৃক্ত আছি। কোনো বাধা বিপত্তির কাছে আমি থামবো না। শেষ পর্যন্ত আমি লড়াই চালিয়ে যাবো।’
ছাতক আওয়ামী লীগের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল ওয়াহিদ মজনু বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিত কর্মী। ছাতক তৃণমূলের কর্মী, জেলার নেতারাও আমাকে আওয়ামী লীগার হিসেবে জানেন। কিন্তু যারা কখনও নৌকায় ভোট দেয়নি তারাই মনোনয়ন পাওয়ায় পৌর নাগরিকরা হতাশ হয়েছেন। সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ ও আওয়ামী লীগের নিবেদিত কর্মীদের সমর্থনে আমি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করবো।’
তবে গত শনিবার দলীয় প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা কেন্দ্রে পাঠানোর আগে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ থেকে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নৌকার বিরুদ্ধে গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৮:১২ পিএম,০৪ ডিসেম্বর ২০১৫, শুক্রবার
এমআরআর