Home / বিনোদন / স্বস্তিকার বিতর্কিত পাঁচ ঘটনা

স্বস্তিকার বিতর্কিত পাঁচ ঘটনা

বিনোদন ডেস্ক :

ভারতীয় বাংলা ছায়াছবি বা টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ স্বস্তিতা মুখার্জি। ৩৩ বছর বয়সী এ অভিনেত্রী যেমন সোজাসাপটা কথা বলতে ভালোবাসেন, তেমনি ভীষণ স্বাধীনচেতাও বটে। টলিউডের গণ্ডি পেরিয়ে পা রেখেছেন বলিউডেও। তবুও বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ার নয় স্বস্তিকার। দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যোমকেশ বক্সী ছবিতে সুশান্ত সিং রাজপুতের বিপরীতে অভিনয় করছেন স্বস্তিকা।

তবে এটা মূল ঘটনা নয়, সম্প্রতি একটি বিতর্কিত ঘটনায় খবরের শীর্ষে উঠে এসেছেন স্বস্তিকা। সিঙ্গাপুরের দোকান থেকে হারিয়ে যাওয়া কানের দুলের খোঁজ মিলেছে স্বস্তিকার কাছে। আর তাতেই চুরির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। দোষ প্রমাণিত না হওয়া সত্ত্বেও বারবার মিডিয়ার নিশানায় এসেছেন তিনি। শুধু দুল চুরি নয়, আরো নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন এ অভিনেত্রী। স্বস্তিকার বিতর্কিত পাঁচ ঘটনা নিয়েই এ রচনা।

বিয়ে ও প্রেম নিয়ে বিতর্ক : অভিনয়দক্ষতা বা সিনেমা ছাড়াও ব্যক্তিগত জীবনের সম্পর্ক ঘিরে বেশিবার খবরে এসেছেন স্বস্তিকা। ১৮ বছর বয়সে সংগীতশিল্পী প্রমিত সেনকে বিয়ে করেছিলেন স্বস্তিকা। কিন্তু দুই বছরের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক অত্যাচারের অভিযোগ আনেন এ অভিনেত্রী।

এরপর একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন তিনি। জিৎ, পরমব্রত, দেব, শ্রীজিত একাধিক নাম রয়েছে এ তালিকায়। তবে পরমব্রতর সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর স্বস্তিকা মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন, একটি ইমেইল করে পরম তার সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করেছেন। লন্ডনে কাউকে পেয়ে গিয়েছেন বলেই পরমব্রত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই ঘটনাকে ঘিরে বেশ একটা শোরগোল পড়ে গিয়েছিল টালিউডে ।

টেক ওয়ান সিনেমায় নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় : মৈনাক ভৌমিকের টেক ওয়ান চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্যে নগ্ন হয়ে অভিনয় করেছিলেন স্বস্তিকা। আর তাই নিয়ে শুরু হয়েছিল জোর গুজব। এই দৃশ্যে স্বস্তিকার দেহের সামনের অংশ পুরোপুরি নগ্ন ছিল। এই প্রথম বাণিজ্যিক বাংলা ছবি যেখানে অভিনেত্রীর শরীরের সামনের ভাগ পুরোপুরি নগ্ন অবস্থায় দেখানো হয়েছিল।

নগ্নদৃশ্যে স্বস্তিকা

নগ্নদৃশ্যে স্বস্তিকা

এরপর আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে স্বস্তিকা বলেছিলেন, ‘আমি আমার মেয়েকে আট মাস স্তনদুগ্ধ পান করিয়েছি। তার পরও ক্যামেরায় আমার স্তন দেখতে এত ভালো লাগতে পারে, এটা ভেবেই আমি খুশি।’

স্বস্তিকার সমকামিতা : একটি সাক্ষাৎকারে স্বস্তিকা বলেছিলেন, ছেলে বা মেয়েকে চুমু খাওয়াতে কোনো পার্থক্য নেই। ওই সাক্ষাৎকারেই আবার স্বস্তিকাকে বন্ধু পরিচালক মৈনাক ভৌমিকের সম্পর্কের কথা জিজ্ঞাসা করায় তার জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘থ্যাংকফুলি মৈনাকের চেহারাটা এমন যে আমার পেয়ার হিসাবে লোকে ওকে ভাবতে পারে না বলেই আমাকে আর ওকে নিয়ে প্রেমের মাখো মাখো গল্প তৈরি হয় না। তবে ও যদি মেয়ে হতো তবে আমি কবেই লেসবিয়ান হয়ে যেতাম।’

এর পরে মৈনাক ভৌমিকের আরো একটি সিনেমা ফ্যামিলি অ্যালবাম-এ পাওলিকে চুমু খাওয়ার দৃশ্য নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘একজন অভিনেত্রী হিসেবে এই কাজটা না করলে জানতে পারতাম না যে চুমু খাওয়ার ক্ষেত্রে ছেলে বা মেয়ে ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যতটা গুরুত্বপূর্ণ আমার মন! আমার মন আদর করতে চাইছে এটাই সবচেয়ে সত্যি। বিশ্বাস করুন, মেয়ে বা ছেলের চুমুতে কোনো তফাত নেই।’ এর পরই স্বস্তিকাকে নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তবে কি স্বস্তিকা সমকামী?

সমকামী দৃশ্যে স্বস্তিকা

সমকামী দৃশ্যে স্বস্তিকা

আত্মহত্যার চেষ্টা : চলতি বছরেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন স্বস্তিকা। অভিনেত্রীর বাড়ির তরফে জানানো হয়েছিল, একটি পার্টিতে পা পিছলে পড়ে যান স্বস্তিকা। আর তার ফলেই আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। যদিও সূত্রের খবর অনুযায়ী, হোটেলের একটি ঘরে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছেন তিনি। আত্মহত্যার কারণ কী? মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, স্বস্তিকার বর্তমান বয়ফ্রেন্ড নাট্যব্যক্তিত্ব সুমন মুখার্জি। সুমনের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির পর নাকি হোটেলে স্বস্তিকা আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন।

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে স্বস্তিকার হাতের ক্ষত দেখে মনে হচ্ছে না দুর্ঘটনা। আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন স্বস্তিকা, তাই তার বন্ধু সুমন মুখার্জিকে ডেকে টানা কয়েক ঘণ্টা জেরা করা হয়। এই ঘটনায় মমতা সরকারের পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় কোনো অভিযোগ বা মামলা হওয়া না সত্ত্বেও পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যে পদক্ষেপ নেয় তার বিরোধিতা করেন বুদ্ধিজীবীদের একাংশ।

দুল চুরি : সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের একটি শপিং মলে কিছু জিনিস কিনতে গিয়েছিলেন স্বস্তিকা মুখার্জি। সঙ্গে ছিলেন সুমন মুখার্জি। দোকানিরা বিভিন্ন জিনিস দেখাচ্ছিলেন স্বস্তিকাকে। এক জোড়া কানের দুলও দেখেন তিনি। কিন্তু সেটা কেনেননি। অথচ হঠাৎ উধাও হয়ে যায় দুল জোড়া। খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, স্বস্তিকার হাতে রয়েছে দুলগুলি।

সিঙ্গাপুরের আইন অনুযায়ী, ৪৫ ডলারের বেশি দামের জিনিস না বলে নিলে তিন মাস পর্যন্ত জেল হতে পারে। ঘটনাচক্রে ওই দুল জোড়ার দাম ২৫০ ডলার। যদিও দোকানিরা স্বস্তিকা মুখার্জির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ জানাননি। তাদের মতে, হয়তো ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছিল। এটা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া হবে। আর এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চাপান-উতোর। স্বস্তিকা সিঙ্গাপুরের দোকান থেকে দুল চুরি করেছেন বলে বিস্তর জলঘোলা হচ্ছে।