অসংক্রামক রোগের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ স্ট্রোক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যানুসারে, বিশ্বে দ্বিতীয় প্রধান মৃত্যুর কারণ মস্তিষ্কের এ রোগ। প্রতিবছর প্রায় এক কোটি ৩৭ লাখেরও বেশি মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশই মৃত্যুবরণ করেন। বেঁচে থাকা রোগীরা দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক ও মানসিক বৈকল্যে ভোগেন।
বাংলাদেশেও স্ট্রোকে আক্রান্তের হার বাড়ছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণা অনুসারে, দেশে বছরে প্রতি হাজারে ১১ দশমিক ৪ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। সে হিসাবে ১৬ কোটি জনসংখ্যা ধরলে প্রতি বছর স্ট্রোকে আক্রান্ত হন ১৮ লাখ ২৪ হাজারের বেশি মানুষ।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত মেদের কারণে মানুষ স্ট্রোক করতে পারে। অতিরিক্ত ডায়াবেটিসও ডেকে আনতে পারে এই ভয়াবহ রোগ। কিন্তু এ রোগের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনো তেমন সচেতনতা দেখা যায় না। সেজন্য স্ট্রোক বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্বব্যাপী স্ট্রোকের প্রতিরোধ ও প্রতিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ব স্ট্রোক সংস্থা প্রতি বছর ২৯ অক্টোবর ‘বিশ্ব স্ট্রোক দিবস’ পালন করে। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য ’মিনিট বাঁচায় জীবন’।
এ উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠান ‘ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউট’র নিউরোসার্জারি বিভাগের উদ্যোগে ‘সায়েন্টেফিক সেমিনার’ অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি বিনামূল্যে চিকিৎসকের পরামর্শ দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জন্সের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, বিএসএমএমইউয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক এটিএম মোশারেফ হোসেন, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটালের বোর্ড অব অ্যাডভাইজার্সের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহমুদর রহমান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. এম এ রশীদ, নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল হোসেন, বিএসএমএমইউয়ের নিউরো মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শহিদুল্লাহ সবুজ, বারডেমের নিউরো মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রোমানা হাবিব।
দেশবরেণ্য নিউরোলোজিস্ট, নিউরোসার্জন ও বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।