চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার বোয়ালিয়া এলাকায় ফাতেমা আক্রার নামে এক স্কুল শিক্ষিকা ও তারই কলেজে পড়ুয়া মেয়ে (১৭) কে ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে প্রকাশ্যে মারধর করেছে স্থানীয় কতিপয় যুবক। শিক্ষিকার বাড়ী মতলব পৌরসভার দক্ষিণ নলুয়া গ্রামে।তিনি বোয়ালিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।
এ ঘটনায় স্কুল শিক্ষিকা বাদী হয়ে হামলাকারী তিনজনে বিরুদ্ধে মতলব দক্ষিণ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী বিষয়টি নিয়ে একেকজন একেক ধরনের মন্তব্য করছে।কেউ বলছে ওই শিক্ষিকার মেয়েকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে মারধর করা হয়েছে , আবার কেউ বলছে এটি পরিকল্পিতভাবে সাজিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।
শিক্ষিকার অভিযোগ বোয়ালিয়া এলাকার মো. শিপন (১৯), মো.শাকিল (১৮) ও মো. রাকিবের (১৯) সহ আরো ৫/৭ জন সংঘবদ্ধ হয়ে এ হামলাটি করেছে।
ফাতেমা আক্তারের থানায় করা অভিযোগে জানা যায়, ওইদিন দুপুরে তার কলেজে পড়ুয়া মেয়ে ব্যক্তিগত কাজে বোয়ালিয়া বাজার এলাকার একটি কম্পিউটারের দোকানে যায়। সেখানকার দোকানটি বন্ধ থাকায় সে বোয়ালিয়া বাজারে অবস্থিত তাঁদের (ফাতেমা) ভাড়া দেওয়া বাড়িতে অপেক্ষা করে। ওই বাড়ির ভারাটিয়া বাংংলালিংক কোম্পানির গাড়িচালক মো.আলমাছ (৫০) বাড়ির না থাকায় বাড়ীর সিঁড়িতে বসে অপেক্ষা করেন। কিছুক্ষণ পর আলমাছ তার কর্মস্থল থেকে এসে শিক্ষিকার মেয়েকে দেখে বাড়ীর ভিতরে নিয়ে বসায়। কিছুক্ষণ পর বোয়ালিয়া এলাকার আঃ জলিলের ছেলে মো. শিপন, খালেক বেপারীর ছেলে মো. শাকিল ও আবুল বাসারের ছেলে মো. রাকিব বাড়িটির সামনে আসেন। তাঁরা ওই গাড়িচালকের সঙ্গে তাঁর মেয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগ এনে আশপাশের লোকজনকে সেখানে জড়ো করেন।
মেয়ে তার মুঠোফোনে জানানোর পর শিক্ষিকা ওই বাড়ীতে এসে যুবকদের কাছে জানতে চাইলে তারা মেয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়।
এ নিয়ে ওই তিন যুবকের সাথে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাঁকে ও তাঁর মেয়েকে গালমন্দ ও মারধর করেন ওই তিন যুবক। এ সময় ৯৯৯ ফোন করে সহায়তা চাইলে মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসে। পুলিশ আসার সাথে সাথে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
ফাতেমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, তাঁকে ও তাঁর মেয়েকে সামাজিকভাবে হেনস্তা ও নাজেহাল করার জন্যই এ মিথ্যা ঘটনা সাজিয়েছেন তারা। তাঁদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে শিপন বলেন, আমরা ওই মেয়েকে আলমাছ নামে এক ব্যাক্তির সাথে একই রুমে দেখতে পাই । গেইট খুলতে বলায় সে আমাদেরকে গালমন্দ করেন এবং ঘরে থাকা জিআই পাইব দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করলে আমি রক্তাক্ত যখম হই। খবর পেয়ে আমার মা ও বোন এসে প্রতিবাদ করলে আমার মাকেও জিআই পাইব দিয়ে আঘাত করে । পরে স্থানিয়রা আহত দুজনকে মতলব দক্ষিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিবেদক: মাহফুজ মল্লিক, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২