স্কুল-মাদ্রাসা ও মসজিদের পাশে গো-বর্জ্যের ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার পশ্চিম শ্রীরামদী আখন্দ বাড়ি এলাকায় গরুর খামার ও খোলা টয়লেটের বর্জ্যের দুর্গন্ধে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রাস্তার পাশে খোলা ওই ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধে পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়, মাদ্রাসা এবং মসজিদের মুসল্লিরা রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে। এ বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার পাইনি ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার পশ্চিম শ্রীরামদী এলাকায় আখন্দ বাড়ির সামনে চলাচলের রাস্তার পাশে খোলা ওই ময়লার ভাগাড়ের অবস্থ। পার্শ্ববর্তী সরকার বাড়ি বিল্লাল হোসেন সরকারের গরুর খামার এবং খোলা টয়লেটের বর্জ্য এসে পড়ছে ময়লার ভাগাড়ে। দীর্ঘদিন ধরেই এই ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধ-দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পার্শ্ববর্তী ২নং বালিকা আখন বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আখন বাড়ি হাফেজিয়া মাদরাসার শিক্ষক, কোমলমতি শিক্ষার্থী এবং বাইতুল আমান জামে মসজিদের ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রাসেল আখন, আবুল বাশার আখন, ইউসুফ আখনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, এখানে একসাথে দুটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এবং একটি মসজিদ রয়েছে। এই পথ দিয়ে আখন্দ বাড়ির দুই শতাধিক মানুষ আসা যাওয়া করেন। অথচ জনগুরুত্বপূর্ণ এই স্থানটিতে পার্শ্ববর্তী বিল্লাল সরকার তার গরুর খামার এবং খোলা-টয়লেটের বর্জ্য ফেলছেন। যার দুর্গন্ধে এখানে থাকা কিংবা এই পথ দিয়ে চলাচল করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ছে। বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বিদ্যালয়, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবং মসজিদের মুসল্লীরা।
তারা আরো জানান, এই সমস্যা সমাধানে আমরা সরকার বাড়ির বিল্লাল সরকারকে বেশ কয়েকবার অনুরোধ করেছি। তিনি উল্টো আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন। ফলে আমরা নিরুপায় হয়ে চাঁদপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তখন পৌরসভার প্রয়াত স্যানিটারি ইন্সপেক্টর হানিফ সাহেব সরজমিনে এসে তাদের এই ময়লার ভাগাড় সরিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সেটিও তারা কর্ণপাত করেননি।
এ বিষয়ে পার্শ্ববর্তী আখন বাড়ি হাফেজিয়া মাদরাসার সহকারী শিক্ষক হাফেজ মাওলানা জাকির হোসাইন বলেন, মাদ্রাসার একটি শ্রেণিকক্ষের পাশেই এই ময়লারটির অবস্থান। কখনো কখনো ক্লাস চলাকালীন সময়ে দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীরা এখানে বসতে পারে না। অনেক শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা এই দুর্গন্ধের বিষয়ে আমাদের অভিযোগ করেছেন। আমরা অনুরোধ করব যারা এখানে ময়লা ফেলছেন, তারা বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নিবেন।
২নং বালিকা আখন বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষিকা ক্ষমা বণিক বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের পেছনে গোয়াল ঘর এবং খোলা টয়লেটের দুর্গন্ধ যখন বাতাসে ছড়ায়, তখন আমরা খুবই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সম্মুখীন হই। দুর্গন্ধে আমাদের শ্রেণী কার্যক্রম কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে। তাছাড়া বর্ষা বা বৃষ্টির সময় এই দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা ও কর্দমাটির জায়গাটা খুবই অসুবিধার সৃষ্টি করে। এই সমস্যাটি যদি দ্রুত সমাধান করা হয়, তাহলে বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা উপকৃত হবে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মসজিদের মুসল্লি এবং এলাকাবাসী চাঁদপুর পৌরসভা, পরিবেশ অধিদপ্তর এ জেলা প্রশাসনে্য দৃষ্টি কামনা করেছেন।
এমন ময়লার ভাগাড় সম্পর্কে অভিযুক্ত বিল্লাল সরকার বলেন, আমার এখন মাত্র একটি গুরুর বাচুর রয়েছে। যিনি গুরু পালতেন আমার সেই স্ত্রী এখন অসুস্থ। তাই আগের মতো গরু নেই। এগুলো আগের গো-বর্জ্য আস্তে আস্তে মিশে যাবে।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ২০ মে ২০২৫