চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা টামটা উত্তর ইউনিয়নের ইছাপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা চালিয়েছে উত্তেজিত অভিবাবকরা । বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) সকাল ৮ টায় থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৩ টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত সুষ্ঠ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলা অবস্থায় এ হামলা করা হয়।
ওই সময় আদালতের নির্দেশে নির্বাচনে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেনের নিকট নির্বাচন স্থগিত বিষয়ে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশের কপি হাতে পাওয়ার পর ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেয়া হয়।
ভোট গ্রহণ স্থগিত করে দেয়ায় উত্তেজিত অভিবাবকরা , নির্বাচনে অভিবাবক প্রতিনিধি হিসেবে অংশ গ্রহণ কৃত ৪ টি প্যানেলে ১৬ জন প্রার্থী , সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৪ জন প্রার্থীসহ উত্তেজিত শতশত জনতা ভোট স্থগিত বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম কিবরিয়াকে দায়ী করে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তার কক্ষে প্রবেশ করে।
উত্তেজিত জনতা প্রধান শিক্ষককে হুমকি দমকি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তার উপর হামলা চালায়। এসময় তারা আজকের মধ্যে প্রধান শিক্ষককে তার পদ থেকে অব্যহতিপত্র দিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করার আল্টিমেটাম দেয়।
এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শাহরাস্তি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ( এসআই) মোঃ নিজাম উদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্স সহ দফায় দফায় চেষ্টায় চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শাহরাস্তি মডেল থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স, থানার উপ-পরিদর্শক মো. মহিন উদ্দিন ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়।
ইছাপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিবাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে ৪ টি প্যানেলে ১৬ জন অভিবাবক প্রতিনিধি প্রার্থী ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেয়। ৪ শত ৩৯ জন ভোটারের মধ্যে বিকাল ৩ টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত ৩ শত ৭৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচনে অভিবাবক প্রতিনিধি প্রার্থী মোঃ আবুল কাশেমের দায়ের কৃত বিজ্ঞ শাহরাস্তি সহ-কারি জজ আদালতে দেওয়ানী মোকদ্দমা মামলা নং ৬১ মূলে নির্বাচনের উপর অস্থায়ী নির্শেধাজ্ঞা হওয়ায় ভোট গ্রহণের ২৫ মিনিট পূর্বে নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় এ হট্টগল সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রার্থী মোঃ রফিকুল ইসলাম তনু চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে বিকাল ৩ টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলছিল। ২৫ মিনিট পূর্বে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেখিয়ে প্রিজাইংডিং কর্মকর্তা নির্বাচন স্থগিত রাখে যা দুঃখজনক ও অমানবিক । প্রধান শিক্ষকের প্ররচনায় একজন প্রার্থী যে নিষেধাজ্ঞার অভিযোগ করেছেন তা ভিত্তিহীন।’
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আদালতের নির্দেশে বিকাল ৩ টা ৩৫ মিনিটে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এখানে কারো হাত নেই। দিন ব্যাপি সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে হলেও ভোট স্থগিত হওয়ায় ভোটার ও প্রার্থীদের মাঝে হতাশা ক্ষোভ বিরাজ করছে যার জন্য আমরা দুঃখিত।
ইছাপুরা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বর্তমান সভাপতি মোঃ শফিউল আলম স্বপন জানান, দীর্ঘ ৬ বছর যাবৎ বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও কল্যাণের সার্থে নিবেদিত হয়ে কাজ করেছি। আজকের এ অপ্রীতিকর ঘটনায় আমি দুঃখিত ও লজ্জিত ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম কিবরিয়া চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘নির্বাচনে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণ সকাল ৮ থেকে বিকাল ৩ টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলছিল। আমাকে দোষারোপ করে উত্তেজিত অভিবাবকরা আমার সাথে অসধাচারণ, গাল মন্দ, হুমকি দমকি প্রদান করে।’