চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার পূর্ব শ্রীরামদী করিম মিজির বাড়িতে (দালাল বাড়ি) সংঘটিত স্কুল ছাত্রী মাহমুদা আক্তার চাঁদনী (১৪) হত্যাকারী রুবেল মিজির ফাঁসির দাবিতে বুধবার (১৬ আগস্ট) বেলা ১২ টায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে আমিনুল হক পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা এবং এলাকাবাসী।
স্থানিয় চৌধুরী বাড়ির সামনের স্কুল প্রাঙ্গনে শিক্ষার্থীরা ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে মানব বন্ধন করে । শিশু শিক্ষার্থীদের সাথে মানব বন্ধনে যোগদেন নারী, পুরুষ, শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের এলাকার মানুষ।
এ সময় নারী লোভী ইয়াবা আসক্ত ঘাতক রুবেলের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করে শ্লোগান দেয়। পরে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও চাঁদপুরের নারী সাংস্কৃতিক সংগঠক অনিমা সেন বলেন, মেয়েটি আমার স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তো, তার রোল নং ৩৫। এ বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সে অধ্যয়ন ছিলো। এরই মধ্যে জানতে পেলাম মেয়েটিকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায় এ এলাকারই এক ছেলে। তার পর শুনলাম তাঁর মৃত্যুর খবর। আমার প্রশ্ন কিভাবে মেয়েটি মারা গেল, এর সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার।
তিনি আরো বলেন, এভাবে একটি প্রাণ অকালে ঝরে যাবে আমরা মুখ বুঝে থাকতে পারিনা। আমাদেরও সন্তান রয়েছে। একে বাল্যবিবাহের অপরাধ অপর দিকে হত্যা, এ রহস্য বের করে অপরাধীর দৃষ্টান্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে এ ধরনের অপরাধ বাড়তে থাকবে। বিষয়টির প্রতি তিনি পুলিশ সুপারের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
মানিক মিজির পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, সোহেল মিজি,পরশ মিয়াজী, রবিন মিয়াজী, আলমগীর হোসেন, খোকন বেপারি, শিমুল তালুকদার, নহিত চাঁদনীর বাবা মামুন রাঢ়ী ও মা খদেজা বেগম।
এ ছাড়া কয়েকজন শিক্ষার্থীও রুবেলের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই বলে বক্তব্য রাখে। অন্যান্য বক্তরা পৌর মেয়র ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, পূর্ব জাফরাবাদ এলাকার দরিদ্র রিক্সা চালক মামুন রাঢ়ীর মেয়ে মাহমুদা আক্তার চাঁদনীকে প্রায় আড়াইমাস আগে প্রেমের ছলনায় ভাগিয়ে নিয়ে যায় পুর্বশ্রীরামদীর দালাল বাড়ির সহীদ মিজির মাদকাসক্ত ছেলে রুবেল মিজি (৩৫)।
এর আগেও রুবেল দু’বিয়ে করে। পেশায় অটো বাইক চালক হলেও এলাকায় মামুন মাদক বিক্রি, পাচার কাজে জড়িত এবং নেশায় আসক্ত। মেয়ে নিজের ইচ্ছায় চলে যাওয়ায় অসহায় বাবা মা মেয়ে চাঁদনীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দয়ে। গত ১২ আগস্ট শনিবার রাতে মেয়েটি মারা যায়। তাকে ঘটনার দিন রাত তিনটার দিকে শশুড় বাড়ির লোকজন আহত অবস্থায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করেন। পরের দিন সকালে নিহত চাঁদনীর স্বামী রুবেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে নিহত চাঁদনীর পিতা মামুন রাঢ়ী বাদী হয়ে রুবেলের বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডের থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৬, তারিখ ১৩-৮-২০১৭।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই এইচএম কামরুজ্জামান জানান, আসামী কারাগারে আছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে। পোস্ট মোটেমের রির্পোট না আসা পর্যন্ত এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি
: আপডেট, বাংলাদেশ ৯ : ১৫ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০১৭, বুধবার
এইউ