সে মেয়েটির কান থেকে ১০২৩টি পিঁপড়া বের করা হয়েছে

মাত্র ১২ বছরের একটি মেয়ের কানের ভেতর থেকে দলে দলে বেরিয়ে আসছে কালো পিঁপড়ার দল। রীতিমতো সারি বেঁধে। শুনতে অবিশ্বাস্য এই ঘটনাটি আলোড়ন ফেলেছিল ভারতজুড়ে।

দেশটির গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে এই ঘটনার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুঁজে না পেলেও ওই কিশোরীর কানে অস্ত্রোপচার করেছেন চিকিৎসকরা। দিল্লির মায়াবতী হাসপাতালের চিকিৎসক ভিকে সিং গত সপ্তাহে জটিল অস্ত্রোপচারের পর কিশোরীর কান থেকে ডিম, লার্ভাসহ মোট ১০২৩টি পিঁপড়া বের করে আনেন।

আহমেদাবাদের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, কয়েক মাস আগে খুব কান চুলকাচ্ছিল নগরীর ১২ বছরের শ্রেয়া দর্জির। প্রথমদিকে বাড়ির লোকজন বিষয়টি সেভাবে লক্ষ করেননি। এরপর একদিন আচমকা দেখা যায়, শ্রেয়ার কানের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে পূর্ণবয়স্ক কালো পিঁপড়ার দল। রীতিমতো সারি বেঁধে ১০ থেকে ১৫টা কালো পিঁপড়া বেরিয়ে আসে শ্রেয়ার কানের ভেতর থেকে। তার পর থেকেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে শ্রেয়ার পরিবার। কানের ভেতর থেকে কোথা দিয়ে পিঁপড়াগুলো বের হচ্ছে তা বুঝে উঠতে পারছেন না কেউই।

পিঁপড়া বের হওয়ার পর শ্রেয়ার বাবা মেয়ের কানে উঁকি মারেন। আর উঁকি দিয়েই তিনি তাজ্জব। দেখেন কানের গর্তে বেশ কতকগুলো পিঁপড়া ঘোরাঘুরি করছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মেয়েকে নিয়ে ছোটেন স্থানীয় নাক-কান-গলা (ইএনটি) চিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসক তাৎক্ষণিকভাবে শ্রেয়ার কান থেকে পিঁপড়াগুলোকে বের করে দেন।

স্থানীয় চিকিৎসক জহর তালসানিয়া জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় হয়তো কোনোভাবে কয়েকটি পিঁপড়া কানের ভেতর ঢুকে পড়েছিল। কিন্তু ওই ঘটনার সপ্তাহ দুই যেতে না যেতেই ফের কান চুলকোতে শুরু করে শ্রেয়ার। সেবারও শ্রেয়াকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তার কান থেকে আবার কয়েকটি পিঁপড়া বের করেন।

কিন্তু তারপরেও থেমে থাকেনি বিষয়টি। নিয়ম করে কিছুদিন পরপর শ্রেয়ার কান থেকে পিঁপড়া বের হওয়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। ইএনটির ওই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আরো জানান, তিনি তাঁর ৩২ বছরের চিকিৎসক জীবনে এমন ঘটনা কখনো দেখেননি বা শোনেননি।

প্রথমদিকে চিকিৎসকরা ধারণা করেছিলেন, পিঁপড়াগুলো কানের মধ্যে কামড়াচ্ছে। কিন্তু মজার বিষয় হলো কানে কোনো ব্যথা অনুভব করছে না শ্রেয়া অথবা তার শুনতেও সমস্যা হচ্ছে না কোনো। ফলে কানের মধ্যে কোথা থেকে পিঁপড়ার দল আসছে তা আপাতত ভেবে পাচ্ছিলেন না চিকিৎসকরা।

এর পর শ্রেয়ার কানের ভেতর নানাভাবে তল্লাশি চালিয়েছেন একাধিক খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। কানের ভেতর ল্যাপারোসকপিক ক্যামেরা বসিয়ে দেখার চেষ্টা হয়েছে কোথা থেকে আসছে এই পিঁপড়া। ল্যাপারোসকপিকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কানের ভেতরে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে পূর্ণবয়স্ক পিঁপড়ার দল। এরপর কানের মধ্যে কোনো রানি পিঁপড়া বাসা বেঁধেছে কি না, তা দেখার নানা চেষ্টাও করেছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তেমন কিছুই নজরে আসেনি।

এই অবস্থায় অস্ত্রোপচারকেই একমাত্র সমাধান বলে মনে করা হচ্ছিল। প্রথমে শ্রেয়ার কানে এই পিঁপড়া রহস্য সমাধানে জটিল অস্ত্রপচারে রাজি ছিলেন না চিকিৎসকরা। শেষে গত সপ্তাহে মায়াবতী হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয় কিশোরীটির।

নিউজ ডেস্ক : আপডেট ৮:৪০ পিএম, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, শুক্রবার

ডিএইচ

Share