ঝিনাইদহ সদর উপজেলার টিকারী গ্রামে সাঞ্চায় নদীর উপর নির্মিত সেতুটি ভেঙ্গে পড়ার পর এখন বাঁশের খুটি লাগানো হয়েছে। কয়েক’শ বাঁশ দিয়ে ভাঙ্গা সেতুর অংশে সাঁকো বিছানো হয়েছে।
আর সেই বাঁশের চরাটের উপর দিয়ে প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন।
এলাকার কিছু উদ্যোগী তরুণ প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ করে পাঁচশটি বাঁশ দিয়ে সেতু দিয়ে কোন রকম চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন।
এলাকাবাসি জানায়, ৫ মাস আগে সেতুটি ভেঙে গেছে। কিন্তু প্রশাসনের এদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঝিনাইদহের নারিকেলবাড়িয়া-টিকারী সড়কের টিকারী বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সাঞ্চায় নদী।
এই নদীর উপর বাজারের কাছেই ১৯৯৪ সালে নির্মিত হয় একটি সেতু। স্থানীয় এলজিইডি বিভাগ সেতুটি নির্মাণ করেন। এই সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করে ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার জিতড়, ভবানীপুর, মিয়াকুন্ডু, কুশোবাড়িয়া, ধনঞ্জয়পুর, মুক্তারামপুর, মাড়ন্দি, নারিকেলবাড়িয়া, টিকারী, দহখোলা, দিঘিরপাড়, লক্ষ্মীপুর, মালঞ্চি, ব্যাংশ, বেরুইলসহ পাশ্ববর্তী ২০ গ্রামের মানুষ। ঝিনাইদহ জেলা শহর থেকে নারিকেলবাড়িয়া টিকারী হয়ে মাগুরা শহরে চলে গেছে এই রাস্তাটি।
ভৌগলিক কারণে তাই সেতুটি খুবই গুরুত্বপুর্ন। ফুরসন্ধি গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ চন্দ্র জানান, গত ৬ জুন হঠাৎ করে সেতুর মাঝের অংশ ভেঙে পড়ে। ভেঙে পড়ার ৫ মাস আগে সেতুটির মাঝের অংশ কিছুটা নিচু অনুভব করেন তারা। এই অবস্থা দেখে স্থানীয় এলজিইডি অফিসে খবর দেন।
খবর পেয়ে তারা আসেন এবং একটি সাইনবোর্ড দিয়ে যান “ভারী যানবাহন চলবে না”। সেই থেকে সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করতো না। মাঝে মধ্যে ভ্যান, নসিমন, করিমন, বাইসাইকেল চলাচল করতো।
গত ৬ জুন হাঠাৎ করে সেতুটির মাঝের অংশ ধসে নিচে পড়ে যায়। এ সময় টিকারী গ্রামের সজিব হোসেন ও দুলাল মিয়া নামে দুই পথচারী আহত হন। পলাশ বিশ্বাস নামে এক যুবক জানান, সেতুটি ভেঙে পড়ার এক মাস পরও জনসাধারণের চলাচলের কোনো ব্যবস্থা করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
সাধারণ মানুষের ১০/১২ কিলোমিটার ঘুরে আবার কেউ ঝুঁকি নিয়ে তালের ডিঙ্গায় পার হচ্ছিলেন সাঞ্চায় নদী। এ অবস্থায় এলাকার ছেলেরা টাকা তুলে ভাঙ্গা সেতুর অংশে বাঁশের চরাট দিয়ে মেরামত করেছে। তবে পানিতে বাঁশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে তাদের। যে কারণে তারা দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসি।
বিষয়টি নিয়ে এলজিইডির ঝিনাইদহ নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মালেক জানান, অর্থ বরাদ্ধ ছাড়া কিছু করার থাকে না। আমরা বরাদ্দ আসার অপেক্ষায় আছি। বরাদ্দ পেলে সেতুটি নির্মান করা হবে। তবে কত নাগাদ সরকারী বরাদ্দ আসবে তা তিনি বলতে পারিন নি।