চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ-হাজীগঞ্জ সংযোগ সড়কের গল্লাক বাজারের ওপর নির্মিত ডাকাতিয়া নদীর ওপর বহুল প্রতিক্ষীত একটি সেতুর অভাবে দুই পাড়ের লাখো মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগে রয়েছেন।
সেতুটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যে জানা যায়, প্রায় অর্ধশত বছর পূর্বে এ সেতুটি নির্মাণ হয়েছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে দেশের সকল কিছুর আমুল পরিবর্তন হলেও এ সেতুটি দেখার মতো মনে হয় কোন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ‘ই নেই।
দু পাড়ের প্রায় লাখো জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এ সেতুর হাতল ভাংগা এবং বিভিন্ন অংশে ফাটল ও খসে পড়েছে।
ইতোপূর্বে কয়েক দফায় সরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তা পরিদর্শন করে গেলেও তা আধো পরিবর্তন হবে কি? এটা সাধারণ জনগণের প্রশ্নই শুধু।
এদিকে নদীর পাড়েই রয়েছে ফরিদগঞ্জের গল্লাক বাজার, গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজ, গল্লাক আলিম মাদ্রাসা, নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয়, গল্লাক বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জনতা ব্যাংক, সমন্বিত ৪, ৫নং ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও ৫ নং গুপ্টি (পূর্ব) ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়।
সেতুর পূর্ব পাড়ে গুপ্টি ইউনিয়নের বিশাল একটা অংশ রয়েছে। পূর্ব পাড়ের সাধারণ জনগণ, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়ুয়া কোমলমতি ছাত্র/ছাএীদের বিকল্প যোগাযোগ মাধ্যম না থাকায় প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ জরাজীর্ণ সেতু অতিক্রম করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উপস্থিত হচ্ছে।
ইউনিয়ন পরিষদ, ব্যাংক, ভূমি অফিস বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণ জনগণ এবং পশ্চিম পাড়ের ২ টি ইউনিয়নের জনগণ এ ব্রিজটিই ব্যবহার করে পাশ্ববর্তী উপজেলা হাজীগঞ্জ যেতে হয়।
সেতুটির সহসাই সংস্কার করা না হলে যে কোন সময় বড় দূর্ঘটনার আশংকা রয়েছে।
ইতোমধ্যে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং এলাকাবাসী একাধিকবার এ ব্যাপারে আবেদন করলে ও তা আদৌ সংস্কার হবে কিনা তা তাদের বোধগম্য নয়।
অপর দিকে পশ্চিম পাড়ের গল্লাক, ডোমরিয়া, আষ্টা, নারকেল তলা, হামছাপুর, বৈচাতলী, গুপ্টি, খাজুরিয়া, আদশা, সাইসাংগা, ষোলদানা পাইকপাড়া, জয়শ্রী ও পূর্ব পাড়ে শ্রী কালিয়া, ঘনিয়া, মানুরী, ফকির বাজার, গুয়াটোবা, বালিমুড়া গ্রাম সহ প্রায় লক্ষাধিক মানুষ এটি ব্যবহার করছেন। তাদের অধিকাংশদের মন্তব্য সরকার আসে সরকার যায়, কিন্তু কোন সরকারই আমাদের ভাগ্য উন্নয়নে এ সেতুটি নির্মাণ করছে না।
এছাড়া সেতুটির পূর্ব পাশ থেকে ফকির বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়কের পাকা ভেঙে মাছ চাষের উপযোগী হয়ে পড়ছে। আর ব্রিজ ও রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় বাজারের ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত লোকসান গুনতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে গুপ্টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও গল্লাক বাজার ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল গণি বাবুল পাটওয়ারী সাথে আলাপকালে তিনি জানান, সেতু ও তার সংশ্লিষ্ট রাস্তাটি সংস্কার করা অতি প্রয়োজন। সেতু ও রাস্তা টি পুনঃনির্মাণ না হলে যে কোন বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। এটি সংস্কার না হওয়ায় বাজার ব্যবসায়ীদের প্রতিনিয়ত লোকসান গুনতে হচ্ছে।’
তিনি সেতু ও রাস্তা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং সাংসদের সাথে আলোচনা করারও আশ্বাস দেন।
এ ব্যাপারে গল্লাক নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল হান্নান এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, সেতু ও রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে এ অঞ্চলের সাধারণ জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়ন হবে। পাশাপাশি এখানে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো রয়েছে তার সিংহ ভাগ ছাত্র/ছাত্রী ব্রিজের পূর্ব পাড়ের। এ কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হয়। তাই অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতৃপক্ষেরা প্রতিদিনই শংকায় থাকতে হয়’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবদীনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ‘ইতোপূর্বে ব্রিজটি পাশ হয়েছে। আমরা আশা করি মাস খানেকের মধ্যে ব্রিজের কাজ শুরু করতে পারবো।’
নিউজ এডিটর ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৬:৩০ পিএম, ২০ আগস্ট ২০১৬, শনিবার
সাগর চৌধুরী/ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur