মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে ১ হাজার ১১৯ হেক্টর ফসলি জমি পানিবদ্ধ

চাঁদপুরের মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে মারাত্মক পানিবদ্ধতায় ১ হাজার ১১৯ হেক্টর ফসলি জমি। কয়েক দিনের অব্যাহত প্রবল বর্ষণে চাঁদপুরের মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প মারাত্মক পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে মাঠে দন্ডায়মান ফসলী জমি আউস ধান ২ হাজার ৬শ’৩৫ হেক্টর,বোনা আমন ৪ শ’৮০ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ২শ’৮০ হেক্টর, রোপা আমন ২ হাজার ৫০ হেক্টর, সবজি ৪ শত হেক্টর ও অন্যাণ্য ১০ হেক্টর।

জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত ফসলি জমি আউশ ধান ৩ শ’ ৯০ হেক্টর ,বোনা আমন ২ শত হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ১ শত ১০ হেক্টর, রোপা আমন ৩ শত ১৬ হেক্টর, সবজি ১শ’ হেক্টর ও অন্যান্য ৩ হেক্টর। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁদপুরের উপ-পরিচালক মোঃ জালাল উদ্দিন ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন ফসলী জমিতে পানিবদ্ধ সরেজমিনে দেখেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে পানিবদ্ধতায় আক্রান্ত ফসলী জমি পরিমান যা ধরা হয়েছে বাস্তব পরিমান অনেক বৃদ্ধি পাবে
ময়লা-আবর্জনায় ও জায়গা দখল হয়ে যাওয়ায় খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি সড়তে পারছে না। যার কারনে এ মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি, বাড়ি,রাস্তা ও মৎস্য খামার।

কৃষকরা জানান,মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কয়েক বছর পর থেকে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃস্টি হয়। এ বিষয় নিয়ে প্রতি বছর ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন পত্রিকা ও চ্যানেল গুলোতে নিউজ প্রকাশিত হলেও পাউবো কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না বলে ভ’ক্তভোগিদের দাবি। কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারনে প্রতিবছর সেচ প্রকল্পের ভিতর জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, পানিবদ্ধতায় আক্রান্ত ফসলি জমি পরিমান পেতে পারে। আমরা বিভিন্ন ভাবে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছি। কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পানি নিস্কাশন করা হলে নির্ণয় করা যাবে। জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যবস্থা না নিলে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান বলেন , কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে সেচ প্রকল্পের ভিতরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হযেছে। আমি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। ফসলি জমি, মৎস্য খামার,রাস্তা,বাড়ি তলিয়ে আছে। নিস্কাশন খাল গুলোতে বিভিন্ন স্থান দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও সংস্কার না করায় বৃষ্টির পানি সরতে পারছে না।

তিনি আরো বলেন, জলাবদ্ধতায় কৃষকরা সব চেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মূখিন হবেন। তাদের আবাদি ফসল এখন পানির নীচে। জলাবদ্ধতা থেকে কৃষকদের রক্ষা করতে হবে। এ জন্য পানি নিস্কাশনের মাধ্যমে দ্রুত জলাবদ্ধতা দূর করতে হবে।

তিনি বলেন, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী এবং মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি। তাদেরকে খাল গুলোর তালিকা তৈরি করে সেগুলো দখলমুক্ত করার বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলেছি। পাউবোর কর্তৃপক্ষ পানি নিস্কাশন খালগুলো দখল মুক্ত ও সংস্কারের যাতে ব্যবস্থা নিবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন । বর্তমানে পাম্পের মাধ্যমে পানি দ্রুত নিস্কাশনের ব্যবস্থা করেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক