মতলবের সেচ প্রকল্পে ফের জলাবদ্ধতা, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প চাঁদপুরের মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে জলাবদ্ধতা না কাটতেই ফের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে বসতবাড়িতে পানি উঠে এবং কৃষকের রোপনকৃত আমন ও আউশসহ অন্যান্য ফসলগুলো তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

১৮ সেপ্টেম্বর শনিবার থেকে প্রবল বর্ষণের কারনে ও পানি নিস্কাশনের প্রতিবন্ধকতায় মারাত্মক এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। গত মাসের বৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার র‌্যাশ কেটে ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই এ জলাবদ্ধতা কৃষকের মাথায় হাত। বিশেষ করে আমন ও আউশ চাষিদের ধান এখন পানির নিচে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা হলে এই ক্ষতি আরও বাড়বে।
ময়লা-আবর্জনায় ও জায়গা দখল হয়ে যাওয়ায় খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি সড়তে পারছে না। যার কারণে এ মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃস্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি, বাড়ি-ঘর,রাস্তাঘাট ও মৎস্য খামার।

মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে আবাদযোগ্য জমি ১৪.১ হেক্টর। সেচ প্রকল্প এলাকায় বছর জুড়ে বোরো, আউশ ও আমন আবাদ হয়। চলতি মৌসুমে কৃষকের রোপনকৃত আমন ধান জলাবদ্ধতার কারণে অনেক জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। আবাদকৃত ধান ক্ষেত কয়েক ফুট পানির নিচে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা হলে বিরাট ক্ষতির সম্মুখিন হবে। তাইতো নেকটা হতাশার মধ্যে রয়েছে হাজার হাজার কৃষক।

কেশাইরকান্দি গ্রােেমর কৃষক শহিদ উল্লাহ প্রধান বলেন, আমাদের এলাকায়ও ভারী বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। রোপা ফসল, মৎস্য খামার ও বসতঘরসহ বহু স্থাপনা তলিয়ে গেছে। আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল।

ভারী বর্ষণে উপজেলার শিকিরচর,পালালোকদী,ঠাকুরচর,আদুরভিটি,হানিরপাড়,মিলারচর,তালতলী,ঘনিয়ারপাড়,ঝিনাইয়া,বড়মরাধন, ওটারচর কলাকান্দা, ছেংগারচর, ইসলামাবাদ, দুর্গাপুর, লতরদি, এখলাছপুর, ফতেপুর, লুধুয়াসহ একাধিক এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে বহু মানুষ।

মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবস্থাপনা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সরকার মোঃ আলাউদ্দিন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, শনিবার থেকে ভারী বর্ষণে সেচ প্রকল্প এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতা হওয়ায় তিনটি পাম্প ইতিমধ্যে চালানো হয়েছে। আমরা এবং পাউবো পুরো সেচ প্রকল্প এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছি। আশাকরি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে জলাবদ্ধতা কেটে যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, গত মাসে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ’ কৃষক আবার নতুন আবাদ করেছে। শনিবার থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে কিছু সংখ্যক ফসল ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেছে। সেচ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য আমরা অনুরোধ করেছি। এ জলাবদ্ধতা কৃষক মারাত্মক ক্ষতির সমূখিন হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, শনিবার থেকে ভারী বর্ষণে সেচ প্রকল্পের ভিতরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হযেছে। আমি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। পাউবোর নিস্কাশন খাল গুলো সংস্কার করাই জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাওয়ার মূল উপায়। আমি এ বিষয়ে পাউবোর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি।

নিজস্ব প্রতিবেদক

Share