Home / আন্তর্জাতিক / সূর্যাস্ত হয় না তাই ২২ ঘন্টা রোজা
সূর্যাস্ত হয় না তাই ২২ ঘন্টা রোজা

সূর্যাস্ত হয় না তাই ২২ ঘন্টা রোজা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

রোজা রাখা প্রত্যেক সক্ষম মুসলিমের জন্য বাধ্যতামূলক বা ফরজ হলেও ২২ ঘণ্টা সময় উপোস থাকা একটি চ্যালেঞ্জ বৈকি। কিন্তু এই কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়েই রোজা রাখেন এখানকার মুসলমানরা।

গত বৃহস্পতিবার থেকে রাশিয়ায় শুরু হয়েছে রমজান মাস। এবারের রমজানে রাশিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত সেন্ট পিটার্সবার্গসহ দেশটির উত্তরাঞ্চলের মুসলমানদের জন্য ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা হচ্ছে। সেখানে জুন মাসে সত্যিকার অর্থেই সূর্য অস্ত যায় না।

মে মাসের শেষের দিক থেকে শুরু হয়ে জুলাইয়ের প্রথম দিক পর্যন্ত এখানে মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য গোধূলির আবছা অন্ধকার থাকে। এ সময়টাকে বলা হয় ‘শ্বেতরাত্রি’।

এ সময় এখানে মুসলমানদের রোজা রাখতে হলে প্রায় ২২ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হয়। সেন্ট পিটার্গবার্গের জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। এর মধ্যে কত লোক মুসলিম ধর্মাবলম্বী তার সঠিক সংখ্যা পাওয়া যায় না।

তবে গত বছর এখানকার প্রধান দুটি মসজিদে ঈদুল ফিতরের জামাতে ৪২,০০০ মুসলমান অংশ নেয় বলে জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিশেষ দিনগুলোতে মসজিদের ভেতরে স্থান না পেয়ে অনেক মুসলমান বাইরে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন।

রোজা রাখা প্রত্যেক সক্ষম মুসলিমের জন্য বাধ্যতামূলক বা ফরজ হলেও ২২ ঘণ্টা সময় উপোস থাকা একটি চ্যালেঞ্জ বৈকি। কিন্তু এই কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়েই রোজা রাখেন এখানকার মুসলমানরা।

নর্থওয়েস্ট রিজিওনাল মুসলিম স্পিরিচুয়াল সেন্টারের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘এটা মুসলমানদের জন্য একটি পরীক্ষা… তাদের এ সময় ২১-২২ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হয়। খাবারের জন্য সময় পাওয়া যায় মাত্র ঘণ্টা তিনেক।’

তাহলে আপনারা কিভাবে এটা মোকাবিলা করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঈমানদের জন্য এটা কোনো বোঝা নয়। ইসলাম হলো জীবনবিধান। রোজা রাখা আমাদের কাছে সকালে ঘুম থেকে ওঠা কিংবা দাঁত ব্রাশ করার মত (সহজ) ঘটনা।’

স্থানীয় একটি স্কুলের প্রশাসক ইয়েলিজাভেতা ইসমাইলোভা বলেন, তার পাশাপাশি তার পিতামাতা, ভাইবোন, স্বামীও রোজা রাখেন।

তিনি বলেন, ‘এবার ইফতারির সময়টা বেশ দেরিতে। আমরা ভোর ২টায় নামাজ পড়ে আর কিছু খাই না। সূর্য অস্ত যায় রাত ১০টায়।’

তিনি জানান, জুনে গোধূলি আসে রাতে সাড়ে ১০টার দিকে। ‘অবশ্যই, এটা মানব শরীরের জন্য একটি কঠিন বোঝা। তবে প্রত্যেক মুসলমান সচেতনভাবেই এটা বেছে নেন,’ বলছিলেন ইসমাইলোভা।

কোনো কোনো মুসলিম বিশেষজ্ঞ বলছেন, গোলার্ধের এ অঞ্চলে রোজা রাখা মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। তবে অন্যরা বলছেন, সেটা করা হলে তা হবে নফস বা প্রবৃত্তির কাছে পরাজয় স্বীকার।

কোনো কোনো ইসলামী সাহিত্য বলছে, এসব অঞ্চলের মুসলমানরা মক্কা অথবা নিকটবর্তী কোনো মুসলিম অঞ্চলের সময় অনুযায়ী রোজা রাখতে পারেন। সূত্র: গার্ডিয়ান

চাঁদপুর টাইমস/ডিএইচ/2015