সারাদেশ

সুন্দরগঞ্জে গলাকেটে রাজমিস্ত্রিকে হত্যার ঘটনায় মামলা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নিজ বাড়িতে ঢুকে স্ত্রীর হাত-মুখ বেঁধে রাজমিস্ত্রি উত্তম কুমারকে (২৬) গলাকেটে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে নিহতের বড় ভাই গোপাল চন্দ্র বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা তিন জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয়নি।

জানা যায়, মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁতিপাড়া গ্রামের নিবারুণ দেবনাথের বাড়িতে ঢুকে উত্তম কুমারকে শয়ন ঘরে গলা কেটে হত্যা করে একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় তার স্ত্রী ললিতা রাণীর হাত ও মুখ বেঁধে রাখে তারা। পরে স্ত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে উত্তমের গলাকাটা লাশ দেখতে পান। আর হাত ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ললিতা রাণীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

নিহতের স্ত্রী ললিতা রাণীর দেওয়া ভাষ্য মতে, হত্যাকাণ্ডের সময় বাড়ির পাশে হিন্দুদের নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান চলছিল। সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন উত্তম ও তার স্ত্রী। এ সময় তিন লোক বাড়িতে প্রবেশ করে। তখন তাদের হাতে ছুরি, বটি ও কুড়াল ছিলো। তবে দেখতে লম্বা প্রকৃতির তিন জনের চেহারার বর্ণনা দিতে পারেনি লতিতা। এরপর দুর্বৃত্তরা ললিতার হাত, পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। সে সময় সন্ত্রাসীরা উত্তকে মারপিট করলে চিৎকার করে তার স্ত্রী। কিন্তু নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে মাইক বাজানোর কারণে কেউ শুনতে পায়নি। মূলত ওই সময়ে পরিবার ও আশপাশের বাড়ির সবাই নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে থাকায় দুর্বৃত্তরা হত্যাকাণ্ডের জন্য এ সময়টা বেছে নেয়।

তবে, নিহতের স্ত্রী ললিতা রাণী একেক সময় এককে কথা বলছেন। তার দেওয়া ঘটনার অসংলগ্ন বক্তব্যে বিব্রত পুলিশ। হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে নানা রহস্যর সৃষ্টি হয়েছে। কেন কি কারণে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা নিয়ে গুঞ্জন চলছে সর্বত্র। অনেকেই এ হত্যাকাণ্ডকে পূর্বপরিকল্পিত বলে ধারণা করছেন। উত্তম কুমার মূলত ঠিকাদারের কাজের প্রধান রাজমিস্ত্রি ছিলেন। তিনি কাজের কন্ট্রাক্ট নিয়ে তা শ্রমিক দিয়ে বাস্তবায়ন করতেন। তার সাথে কারো কোনো বিরোধ বা ঝামেলা ছিলো না বলে প্রাথমিক জানা গেছে।

এলাকাবাসী বলছে, নম্র ও শান্ত প্রকৃতির ছিলেন উত্তম কুমার। নয় মাস আগে একই মহল্লার সুবল চন্দ্রের মেয়ে ললিতার সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। ললিতা স্থানীয় বেলতলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। আর নিয়মিত বিদ্যালয়ে যান ললিতা।

পুলিশ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন, এটি নৃশংস ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তাই বেশকিছু বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। হত্যার ঘটনায় ক্লু পাওয়া গেলেও তা মামলার স্বার্থে প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল জামান বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটির হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।

Share