সিলেটে আলোচিত শিশু আবু সাঈদ (৯) হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রশিদ সোমবার বিকেল পৌনে চারটায় এ রায় ঘোষণা করেন।
এসএমপির বিমানবন্দর থানার কনস্টেবল (বরখাস্তকৃত) এবাদুর রহমান, কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম রাকিবের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। অপর আসামি ওলামা লীগের প্রচার সম্পাদক মুহিব হোসেন মাসুমকে খালাস দেওয়া হয়।
এর আগে বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে চার্জশিটভূক্ত ৪ আসামিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। পরে আসামিদের উপস্থিতিতে রায় পড়ে শুনান আদালতের বিচারক আবদুর রশিদ।
এর আগে ১৯ নভেম্বর ৫ জন, ২২ নভেম্বর ৬ জন, ২৩ নভেম্বর ৭ জন, ২৪ নভেম্বর ৪ জন ও ২৫ নভেম্বর ৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। গত ২৬ নভেম্বর আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৩৪২ ধারায় আসামি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। গত ২৯ নভেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১১ মার্চ সিলেট নগরীর শাহমীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ও রায়নগর দর্জিবন্দ বসুন্ধরা ৭৪ নম্বর বাসার আবদুল মতিনের ছেলে আবু সাঈদ (৯) অপহৃত হয়। অপহরণের পর ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। গত ১৪ মার্চ পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমানের নগরীর ঝর্ণারপাড় সবুজ-৩৭ নং বাসার ছাদের চিলেকোটা থেকে আবু সাঈদের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা আবদুল মতিন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় ২৩ সেপ্টেম্বর ৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন। চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন সিলেটের বিমানবন্দর থানার কনস্টেবল (বরখাস্ত) এবাদুর রহমান, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম রাকিব, কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা এবং ওলামা লীগের প্রচার সম্পাদক মুহিব হোসেন মাসুম। অভিযুক্তদের মধ্যে এবাদুর, রাকিব ও গেদা ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, শিশু সাঈদ হত্যা মামলায় ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৮ কার্যদিবসে শেষ হয় সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক।
সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি এ্যাডভোকেট আবদুল মালেক জানান, অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়া ও ৩০২/৩৪ ধারায় হত্যার দায়ে দু’বার করে ফাঁসির আদেশ পেয়েছেন আসামিরা। এছাড়া প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, আমরা পর্যাপ্ত প্রমাণ উপস্থাপন করতে পেরেছি। ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন হয়েছে। রায় যথাযথ হয়েছে।
শিশু আবু সাঈদের বাবা আবদুল মতিন রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামিদের ফাঁসি কার্যকর দেখতে চান তিনি।
নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৭:৪৫ পিএম,৩০ নভেম্বর ২০১৫, সোমবার
এমআরআর