Home / উপজেলা সংবাদ / হাইমচর / হাইমচরে ডিলার থাকা সত্ত্বেও গোপনে ফ্রেশ সিমেন্ট বিক্রি নিয়ে নাটকীয়তা
সিমেন্ট

হাইমচরে ডিলার থাকা সত্ত্বেও গোপনে ফ্রেশ সিমেন্ট বিক্রি নিয়ে নাটকীয়তা

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় ফ্রেশ সিমেন্টের ডিলার থাকা সত্ত্বেও বহিরাগত ব্যবসায়ী গোপনে সিমেন্ট বিক্রির সময় সিমেন্ট জব্দ করা হয়েছে।

এ নিয়ে দুই পক্ষের ধস্তাধস্তি সহ চলছে নানা নাটকীয়তা। গত ১০ জুন ওই উপজেলার ঢেলের বাজার নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, হাইমচর উপজেলায় ফ্রেশ সিমেন্টের ডিলার হিসেবে মোঃ হারুনুর রশিদ দীর্ঘদিন যাবত ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। তিনি হাইমচর উপজেলার বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে ফ্রেশ সিমেন্ট বিক্রি করে থাকেন। সেই সুবাদে হাইমচর ঢেলের বাজার এলাকার আনোয়ারা ট্রেডার্সের প্রোপাইটার সিদ্দিকুর রহমান তার একজন নিয়মিত ক্রেতা।

কিন্তু গত ১০ জুন রুবাইয়া ট্রেডার্সের হযরত আলী লিয়াকত, আনোয়ারা ট্রেডার্সের সিদ্দিকুর রহমানের কাছে
তাকে সিমেন্টের নির্দিষ্ট দাম থেকে আরো অনেক কম দামে সিমেন্ট বিক্রি করবেন বলে বিভিন্ন লোভনীয় অফার দেখিয়ে তার কাছে গোপনে ৩০০ ব্যাগ সিমেন্ট বিক্রির জন্য নিয়ে যান।

ওই সময় হাইমচর উপজেলার ফ্রেশ সিমেন্টের প্রকৃত ডিলার হারুনুর রশিদ তা দেখতে পেয়ে হযরত আলী লিয়াকত ডিলার না হয়েও কেন সে এভাবে গোপনে কম দামে সিমেন্ট বিক্রি করছেন সেজন্য তিনি তাতে প্রতিবাদ করেন।

এ নিয়ে প্রথমে উভয়পক্ষের মাঝে অনেক বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে হযরত আলী লিয়াকত তার গাড়ির ড্রাইভার সহ অন্যান্য লোকজনকে খবর দিলে তাদের উভয়পক্ষের মাঝে দস্তাদস্তির ঘটনা ঘটে।

পরে খবর পেয়ে হাইমচর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য ওই ৩০০ ব্যাগ সিমেন্টসহ গাড়িটি থানায় নিয়ে যায়। এবং উভয় পক্ষকে ডেকে তা মীমাংসার জন্য পরামর্শ দেন হাইমচর থানা পুলিশ।

হাইমচর উপজেলা ফ্রেশ সিমেন্টের ডিলার হারুনুর রশীদ জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে ফ্রেশ সিমেন্টেরর একজন উপজেলা ডিলার হিসাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। আমি হাইমচর এলাকার অধিকাংশ খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে নিয়মিত সিমেন্ট বিক্রি করে থাকি।

ঘটনার দিন জানতে পারি রুবাইয়া এন্টারপ্রাইজের খুচরা সিমেন্ট বিক্রেতা হযরত আলী লিয়াকত, আমার নিয়মিত কাস্টমার আনোয়ারা ট্রেডার্সের সিদ্দিকুর রহমানের কাছে নির্দিষ্ট দামের চেয়ে আরও অনেক কম দামে বিক্রির জন্য গোপনে তার দোকানে সিমেন্ট নিয়ে যায়।

খবর পেয়ে আমি তাতে প্রতিবাদ করলে হযরত আলী লিয়াকত ও তার ড্রাইভার সহ আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বাক-বিতণ্ডার পর আমাদের উভয়পক্ষের মাঝে দস্তাদস্তি হয়। পরে খবর পেয়ে হাইমচর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গাড়িটি থানায় নিয়ে যায় এবং আমাদের উভয়পক্ষের লিখিত রেখে তা মীমাংসার জন্য বলেন।

কিন্তু হযরত আলী লিয়াকত তা না শুনে তিনি সেখান থেকে চলে যান। এবং দুষ্ট চক্রের প্রলোভনে সে হাসপাতালে ভর্তি হন। যেখানে আমাদের মাঝে কোন মারামারির ঘটনা ঘটেনি সেখানে সে এসব নাটকীয়তা করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ঘটনা অন্যদিকে নেয়ার চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে আনোয়ারা ট্রেডার্সের প্রোপাইটার সিদ্দিকুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন সে আমার কাছে অনেক কম দামে সিমেন্ট বিক্রি করবেন বলে সে বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে তা বিক্রির জন্য আমার কাছে নিয়ে আসেন। আসলে সে যে রকম ভাবে লোভনীয় অফার করেছে আসলে তা নয়।

এ বিষয়ে ফ্রেশ সিমেন্টের মার্কেটিং অফিসার মোস্তফা জানান, ঘটনার বিষয়টি আমি আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি। এখন তারা কোন পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আমি তেমন কিছুই বলতে পারবোনা।

এ বিষয়ে হাইমচর উপজেলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহবুব মোল্লার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সিমেন্ট বিক্রি নিয়ে তাদের উভয়পক্ষের মাঝে বাকবিতণ্ডার খবর পেয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আমি পুলিশ ফোর্স পাঠিয়েছি। সেখান থেকে সিমেট গুলো প্রথমে থানায় নিয়ে আসা হলে তাদের উভয়পক্ষকে বসে তা মীমাংসা করার জন্য পরামর্শ দেই। কিন্তু তারা না মানাতে যার সিমেন্ট সে নিয়ে যায়।

প্রতিবেদকঃকবির হোসেন মিজি,১২ জুন ২০২১