মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। শনিবার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। আইজি প্রিজন সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বিষয়টি জানিয়েছেন।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে চারটি অ্যাম্বুলেন্স কারাগারে প্রবেশ করে। এর আগে সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের পরিবারের সদস্য তাদের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর দুজনকে শেষ বারের খাবার দেওয়া হয়।
কারাগার থেকে সাকা চৌধুরীর মরদেহ চট্টগ্রামের রাউজানে ও মুজাহিদের মরদেহ ফরিদপুরে নেওয়া হবে।
এরা দু’জনেই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিলেন বলে আইনমন্ত্রী জানিয়েছিলেন এবং সে আবেদন নাকচও করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তবে উভয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে প্রাণভিক্ষা চাননি- সর্বশেষ সাক্ষাতে পরিবারের কাছে এটাই বলেছেন তারা।
জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমানও এক বিবৃতিতে মুজাহিদের প্রাণভিক্ষার আবেদনের খবরকে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর বলে উল্লেখ করেন এবং বিএনপির দলীয় সূত্র থেকেও পরিবারের বরাত দিয়ে প্রাণ ভিক্ষার বিষয়টি বিভ্রান্তকর উল্লেখ করেন।
ফাঁসি কার্যকরের পর নিয়মিত আনুষ্ঠানিকতা সেরে তাদের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হবে। পুলিশ ও র্যাবের বেশ কয়েকটি গাড়ি নিরাপত্তার জন্য মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স দুটির সঙ্গে পাঠানো হবে।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে যথাক্রমে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের রায় কার্যকর করা হলো।
এর আগে রাত ৮টা ৫৫ মিনিটের দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন ঢাকা জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। তার আগে কারাগারে যান আইজি (প্রিজন) সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, অতিরিক্ত আইজি (প্রিজন) কবির হোসেন ও ডিআইজি (প্রিজন) গোলাম হায়দার। জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক ফরমান আলী আগে থেকেই কারাগারের ভেতরে ছিলেন বলে জানা যায়।
জল্লাদ
সাত জন জল্লাদ তাদের ফাঁসি কার্যকর করেছেন। এরা হলেন- ইকবাল, মাসুদ, আবুল, মোক্তার, রাজু, শাহজাহান ও হযরত। এসব জল্লাদ বিভিন্ন সময় ফাঁসি আসামিদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করেন। এদের মধ্যে শাহজাহান ও রাজু যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরে অংশ নিয়েছিলেন।
অ্যাম্বুলেন্স
রাত ১২টা ৩১ মিনিটে লাশ বহন করে এমন চারটি ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স কারাগারের সামনে এনে রাখা হয়। ১২টা ৩৮ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্সগুলো কারাগারে প্রবেশ করে।
স্বজনদের সাক্ষাৎ
সর্বশেষ শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে শেষ দেখা করতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন তার স্বজনেরা। সোয়া এক ঘণ্টা পর তারা কারাগার থেকে বের হয়ে আসেন। স্ত্রী-পুত্র-কন্যাসহ ১৮ জন স্বজন তার সঙ্গে দেখা করেন।
রাত ১০টা ২৫ মিনিটে আলী আহসান মুজাহিদের সঙ্গে শেষ দেখা করতে কারাগারে প্রবেশ করেন স্বজনরা। তারা ঘণ্টা পর বের হন। স্ত্রী ও ছেলেসহ ৮ জন স্বজন তার সঙ্গে দেখা করেন।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট: ০১:১৯ এএম, ২২ নভেম্বর ২০১৫, রোববার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur