বর্তমানে দেশে বছরে বোরো ধান চাষে লাগে ২৪০ কোটি টাকা দামের ৬১ লাখ ৬০ হাজার কোটি লিটার পানি। মাটির নীচ থেকে এ পানি তোলতে খরচ হয় ৩০ কোটি ইউনিট বিদ্যুত।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে , প্রতি কেজি বোরো ধান উৎপাদনে ৩ হাজার ২ শ’ লিটার পানি খরচ হয়ে থাকে। দেশে বর্তমানে তিন কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন বোরো,
আউশ ও আমন ধান উৎপাদন হয়ে থাকে।
শতকরা ৫৫ ভাগ হারে এক কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার মে. টন। কেজি প্রতি ৩ হাজার ২ শ’ লিটার হারে ওই পরিমাণ ধান উৎপাদনে খরচ হয় ৬১ লাখ ৬০ হাজার কোটি লিটার পানি।
লন্ডন ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার এসোসিয়েশন এর সদস্য প্রকৌশলী মো.ফারুক নেওয়াজ মহসিন বলেন,‘ বোরো ধান চাষের সেচের জন্য ব্যবহৃত পানির পুরোটাই মাটির নীচ থেকে তোলা হয়। বোরো চাষের জন্য ব্যবহৃত ওই পরিমাণ পানি মাটির নীচ থেকে তুলে সেচের কাজে ব্যবহারের জন্য ২৪০ কোটি টাকার (ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম ৮টাকা হারে) ৩০ কোটি ইউনিট বিদ্যুত খরচ হতে পারে। দিন যত যাবে মাটির নীচের পানি তোলার খরচও বাড়বে। এছাড়া লাগাতার পানি তোলায় মাটিতে বাড়ছে আর্সেনিকসহ ভারি ধাতবের পরিমাণ।’
আউশ ও আমনে উৎপাদন খরচ কম। রোপা আমনে শুধু সম্পুরুক সেচ দিতে হয়। বোরো ধান চাষে বাড়তি পানি খরচ ছাড়াও কৃষিজমি, পরিবেশ এবং কৃষকের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব বেশি।
বোরোতে বেশি পরিমাণে সার এবং কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। বোরো মৌসুমে একরপ্রতি জমিতে সেচের ব্যয় গড়ে ছয় হাজার টাকা, যা সব ধরনের সারের পেছনের খরচের চেয়েও বেশি। আমনে সেচের খরচ একরে এক হাজার ২শ’ টাকা। বোরোতে সার ও কীটনাশকের ব্যয় একরে সাত হাজার টাকা।
আমনে খরচ হয় পাঁচ হাজার টাকা। গত মৌসুমে প্রতি কেজি বোরো ধান উৎপাদনের মোট খরচ ছিল ২০ টাকা। আমনে উৎপাদনে খরচ বোরোর চেয়ে কেজিতে দু’ টাকা কম, ১৮ টাকা। চলতি মৌসুমে খরচ আরো বেশি হয়েছে বলে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে। এবছর সরকার কেজি প্রতি ধানের দাম ২৬ টাকা বেধে দিয়েছে।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক ড.মো.নুরুল ইসলাম বলেন, ‘তুলনামূলক কম খরচ এবং কম সময়ে আউশ ও আমন ধানে বোরো ধানের মতোই ফলন পাওয়া সম্ভব। বোরো ধানে প্রচুর পানিসহ অন্যান্য খরচ হয়ে থাকে। উৎপাদনে সময়ও বেশি লাগে। আউশ বৃষ্টি নির্ভর ধান।’
বার্তা কক্ষ
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৬:৪৫ পিএম,২২ এপ্রিল ২০১৮,রোববার
এজি