সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বুধবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ) ‘সামাজিক সম্প্রীতি সুরক্ষায় শিক্ষকদের ভূমিকা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি এমপি।
স্বাশিপ সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাশিপ সভাপতি প্রফেসর আবদুল মান্নান চৌধুরী। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রফেসর সাজিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান পান্না, প্রধান শিক্ষক মেহেরুন্নেছা, প্রধান শিক্ষক সামসুল হুদা, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, অধ্যক্ষ মাসুদ আহমেদ, অধ্যক্ষ শরীফুল ইসলাম, অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন মুকুল, অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা খোশনবিশ, উপাধ্যক্ষ রেজাউল করিম সিদ্দিকী, সহকারী অধ্যাপক আলী আশরাফ শামীম প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দিপু মনি এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী বীর বাঙালি জাতি একাত্তরে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশে স্বাধীন করেছিল। জাতির পিতার কন্যা সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ যখন একটি মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে তখন একাত্তরে পরাজিত শক্তি ও জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত একটি মহল সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে পারেন সম্মানিত শিক্ষক মন্ডলি। তিনি এ ব্যাপারে সর্বস্তরের শিক্ষকদের যার যার অবস্থান থেকে ছাত্র অভিভাবক ও সর্বস্তরের জনগণকে সচেতন করার আহবান জানান। তিনি বলেন শিক্ষকরা এখনো সমাজে সবচেয়ে সম্মানী ব্যক্তিত্ব।
শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের মধ্যে গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ এবং বাঙালির হাজার বছরের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য শিক্ষকের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে এভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে ধর্মান্তরের সাম্প্রদায়িক অপশক্তি তাদের ভুল বুঝিয়ে বিপথগামী করতে না পারে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ছিল একটি অসম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও বৈষাম্যহীন বাংলাদেশ। যেখানে প্রতিটি মানুষ তার সমান অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে বসবাস করবে। তার কারণ আমরা অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চেয়েছি। পাকিস্তান যে কাঠামোর মধ্যে তৈরি হয়েছিল, সে কাঠামোর মধ্যে বাঙালি বার বার নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছে ধর্মের দোহাই দিয়ে। সে জন্যই আমরা চেয়েছি বাংলার আবহমানকালের যে ইতিহাস, সকল ধর্মের মানুষ একসঙ্গে পাশাপাশি বাস করবার যে ইতিহাস। সেই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলব।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান ঘটে। এ সময় স্বাধীনতা বিরোধীরা সমাজে ও রাষ্ট্রে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সে অপশক্তি আজও অত্যন্ত সক্রিয়। এদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।