প্রায় ৯ কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষ উদ্ধারসহ ক্রয়-বিক্রয় ও পাচারকারী চক্রের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার (২৫ নভেম্বর) রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাপের বিষ পাচারকারীর চক্রের মূলহােতা মাে. মামুন তালুকদার (৫১) ও তার সহযোগী মাে. মামুনকে (৩৩) আটক করে সিআইডির একটি দল।
এ সময় ২টি বড় লকার ও ৬টি কাঁচের কৌটায় সংরক্ষিত সাপের বিষ উদ্ধার করা হয়। প্রত্যেকটি বােতলের গায়ে লেখা— COBRA Snake Poison of France, Red Dragon Company, Cobra Code No-80975, Made in France।
সিআইডি বলছে, বাংলাদেশে সাপের বিষ ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো বৈধতা নেই। মূলত সাপের বিষ পাচারের জন্য বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল পাচারকারীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার।
তিনি বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর সিআইডি ঢাকা মেট্রোর একটি টিম গাজীপুরের বাসন থানা এলাকা থেকে সাপের বিষ ক্রয়-বিক্রয় ও পাচারকারী একটি চক্রের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ওই মামলার তদন্তকালে গােপন সংবাদের ভিত্তিতে সিআইডি জানতে পারে, এরকম আরও কয়েকটি বড় ধরনের পাচারকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে সাপের বিষ পাচারকারীর চক্রের মূলহােতা মামুন তালুকদার ও তার সহযোগী মামুনকে গ্রেফতার করা হয়।
রেজাউল হায়দার বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সাপের বিষ পাচার হয়। এটার বৈশ্বিক মার্কেট রয়েছে, তবে বাংলাদেশে বিক্রির কোনো বৈধতা নেই।
তিনি বলেন, দেশের বাইরে থেকে এই সাপের বিষ কোনো না কোনোভাবে বাংলাদেশে এসেছে। দুই-তিন হাত ঘুরে হয়তো এই চক্রের মাধ্যমে দেশের বাইরে পাচার হতো। সাপের বিষ ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। তবে বাংলাদেশে ফার্মাসিউটিক্যালে এটি ব্যবহারের বৈধতা নেই। যে কারণে এটি বাংলাদেশের ব্যবহারের সুযোগও নেই। আমরা এখনো নিশ্চিত না যে এটা ঠিক কোন দেশ থেকে বাংলাদেশে আনা হয়েছে। এটা এলসির মাধ্যমে আনা হয়নি। জব্দ করা বিশ্বের কনটেইনারগুলোতে লেখা দেখা গেছে ‘মেড ইন ফ্রান্স’।
এক প্রশ্নের জবাবে রেজাউল হায়দার বলেন, যথাসম্ভব এই অবৈধ সাপের বিষ পাচারের জন্য বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহৃত করা হচ্ছিল। পুরো তদন্ত শেষ হলে এটা স্পষ্ট হবে কে বা কারা কোন জায়গা থেকে আমদানির পর এটা পাচার করছিল। ইতোমধ্যে কয়েকটি চালান বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়ার তথ্য পেয়েছে সিআইডি।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর এই চক্রের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আরও ৭-৮ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। যেহেতু সাপের বিষ লেনদেন ক্রয়-বিক্রয় এবং পাচার আইনত অপরাধ, তাই তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হবে বলে জানান তিনি।
বার্তাকক্ষ,২৬ নভেম্বর,২০২০;