বিনোদন

বিখ্যাত হলেও তাঁরা সবাই দ্বিতীয় স্ত্রী

তাঁরা সবাই বলিউডের ‘সৌন্দর্যের রানি’। লাখো তরুণ ভক্তের স্বপ্নের নায়িকা। তারকা অভিনেতা থেকে শুরু করে লাখো অবিবাহিত পুরুষ ভক্ত পাগল ছিলেন তাঁদের জন্য। কিন্তু তাঁরা মন দিয়েছেন, বিয়ে করেছেন বিবাহিত পুরুষকে। নিজেদের প্রথম বিয়ে হলেও তাঁরা কেউ স্বামীর প্রথম স্ত্রী নন। বলিউডের এমন ক’জন নায়িকাকে নিয়ে সাজানো হয়েছে এ প্রতিবেদন।

মধুবালা ও কিশোর কুমার
মধুবালাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার। প্রথম স্ত্রী অভিনেত্রী ও গায়িকা রুমা গুহঠাকুরতার সঙ্গে তাঁর আট বছরের সংসার ভেঙে যায় ১৯৫৮ সালে। কলকাতার এক চিত্রনির্মাতার প্রেমের টানে কিশোর কুমারকে ছেড়ে যান রুমা। এরপর কিশোর কুমার প্রেমে পড়েন সে সময়কার বলিউডের মেরিলিন মনরো-খ্যাত মধুবালার। মধুবালার হৃৎপিণ্ড ও শ্বাসযন্ত্রে বাসা বেঁধেছিল অসুখ। ক্যারিয়ারও ম্লান হচ্ছিল ধীরে ধীরে। অসুস্থ অবস্থায় নয় বছর কিশোর কুমারের সঙ্গে সংসার করে ১৯৬৯ সালে মারা যান মধুবালা।

ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনী
হেমা মালিনী ১৯৭৭ সালে বিখ্যাত ‘ড্রিম গার্ল’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ‘ড্রিম গার্ল’ উপাধি লাভ করেন। সঞ্জীব কুমার, জিতেন্দ্রসহ অনেক নামী অভিনেতার কাছ থেকে বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন হেমা। সব প্রস্তাব বাতিল করে দিয়ে ‘শোলে’ ছবির শুটিংয়ের সময় নায়ক ধর্মেন্দ্রর প্রেমে পড়েন হেমা মালিনী। ধর্মেন্দ্র তখন ছিলেন বিবাহিত। তাঁর প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌর বিবাহবিচ্ছেদে রাজি ছিলেন না। হিন্দুধর্মমতে প্রথম স্ত্রী থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে আইনসিদ্ধ না হওয়ায় ১৯৭৯ সালে তাঁরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিয়ে করেন। তাঁদের দু’ মেয়ে এষা ও অহনা।

শাবানা আজমি ও জাভেদ আখতার
বিখ্যাত লেখক-গীতিকার জাভেদ আখতার ও অভিনেত্রী শাবানা আজমির প্রেমকাহিনি কোনো সিনেমার গল্পের চেয়ে কম ঘটনাবহুল নয়। ১৯৭০ সালে শাবানার বাবা কবি কাইফি আজমির কাছে জাভেদ লেখালেখির কলাকৌশল শিখতে আসা শুরু করেন। এভাবে জাভেদ-শাবানা একে অপরের প্রেমে পড়েন। কিন্তু তখন জাভেদের ঘরে প্রথম স্ত্রী হানি ইরানি ও দু’ সন্তান ফারহান ও জয়া ছিল। হানি ইরানিকে তালাক দিয়ে ১৯৮৪ সালে শাবানা আজমিকে বিয়ে করেন জাভেদ আখতার।

রাজ বাব্বর ও স্মিতা পাতিল
সত্তর-আশির দশকের বলিউডের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় স্মিতা পাতিলকে। স্মিতা প্রেমে পড়েছিলেন সহ-অভিনেতা রাজ বাব্বরের। তাঁদের প্রেম নিয়ে তখন গণমাধ্যমে ঝড় ওঠে। রাজ বাব্বর তাঁর প্রথম স্ত্রী নাদিরা জহির এবং দু’ সন্তান আর্য বাব্বর ও জুহি বাব্বরকে রেখে স্মিতা পাতিলকে বিয়ে করেন। পুত্রসন্তান প্রতীক বাব্বরকে জন্মদানের দুই সপ্তাহ পর জন্মসংক্রান্ত জটিলতায় ১৯৮৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর স্মিতা পাতিলের মৃত্যু হয়।

জয় মেহতা ও জুহি চাওলা
১৯৮৪ সালের ‘মিস ইন্ডিয়া’ বলিউড কাঁপানো সুন্দরী জুহি চাওলা ১৯৯৫ সালে ব্যবসায়ী জয় মেহতাকে বিয়ে করেন। আমেরিকা, কানাডা, ভারত ও আফ্রিকাজুড়ে ব্যবসা জয় মেহতার। জয় মেহতার প্রথম স্ত্রী সুজাতা বিরলা ১৯৯০ সালে একটি বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন। জুহি চাওলা-জয় মেহতা দম্পতির এক মেয়ে জাহ্নবী ও এক ছেলে অর্জুন।

শ্রীদেবী ও বনি কাপুর
মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে শ্রীদেবীর বিতর্কিত প্রেমকাহিনির কথা এখনো কান পাতলে শোনা যায় বলিউডের অন্দরে। মিঠুন স্ত্রী যোগিতা বালিকে ফাঁকি দিয়ে শ্রীদেবীকে ঘরে তুলতে পারেননি। ১৯৯৬ সালে চলচ্চিত্র প্রযোজক বনি কাপুরকে বিয়ে করেন শ্রীদেবী। বলিউডের সর্বাধিক আলোচিত বিয়ের একটি শ্রীদেবী-বনি কাপুরের বিয়ে। বলিউডের প্রথম নারী সুপারস্টার বিবেচিত শ্রীদেবীকে বিয়ের আগে মোনা শুরিকে বিয়ে করেছিলেন বনি কাপুর। ১৯৯৩ সালে তাঁর প্রথম স্ত্রী মোনার সঙ্গে আট বছরের সম্পর্ক ভেঙে দেন। শ্রীদেবী-বনি কাপুরের দু’ মেয়ে জাহ্নবী কাপুর ও খুশি কাপুর।

কারিশমা কাপুর ও সঞ্জয় কাপুর

নব্বই দশকের পর্দা কাঁপানো নায়িকা ছিলেন কারিশমা কাপুর। অমিতাভ বচ্চনের ছেলে অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে আংটিবদল হয়েছিল কারিশমার। শেষ পর্যন্ত সে সম্পর্ক ভেঙে যায়। ২০০৩ সালে কারিশমা বিয়ে করেন শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুরকে। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। অবশেষে ২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁরা আলাদা হয়ে যান। সঞ্জয় প্রথম বিয়ে করেছিলেন ডিজাইনার নন্দিতা মাহতানিকে।

রাভিনা ট্যান্ডন ও অনিল থাদানি
নব্বইয়ের দশকে বলিউডের অন্যতম সুন্দরী অভিনেত্রী রাভিনা ট্যান্ডন ‘স্ট্যাম্পড’ ছবিতে অভিনয়ের সময় চলচ্চিত্র পরিবেশক অনিল থাদানির প্রেমে পড়েন। এর আগে রাভিনা ট্যান্ডন আর অক্ষয় কুমারের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা ছিল বলিউডপাড়ায়। সে প্রেমের ইতি ঘটে অনেক আগেই। ২০০৪ সালে রাভিনা অনিল থাদানিকে বিয়ে করেন। অনিল রাভিনাকে বিয়ে করতে প্রথম স্ত্রী নাতাশা সিপ্পিকে তালাক দেন। তাঁদের সংসারে আছে কন্যা রাশা ও পুত্র রণবীর।

রাজ কুন্দ্র ও শিল্পা শেঠি
নব্বইয়ের দশকে শিল্পা শেঠি আর অক্ষয় কুমারের প্রেম ছিল আলোচিত। অক্ষয় শিল্পাকে ধোঁকা দিয়ে ২০০১ সালে বিয়ে করে ফেলেন টুইঙ্কল খান্নাকে। ‘চুরা কে দিল মেরা’-খ্যাত অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি অবশেষে ২০০৯ সালে ব্রিটিশ ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন। শিল্পাকে বিয়ে করার আগে প্রথম স্ত্রী কবিতাকে তালাক দেন রাজ কুন্দ্র। শিল্পা-কুন্দ্রর ছেলে ভিয়ানের বয়স এখন পাঁচ বছর।

মহেশ ভূপতি ও লারা দত্ত
সাবেক মিস ইউনিভার্স লারা দত্ত ২০১১ সালে ভারতের জনপ্রিয় টেনিস খেলোয়াড় মহেশ ভূপতিকে বিয়ে করেন। ২০১০ সালে সাত বছর একসঙ্গে থাকার পর প্রথম স্ত্রী প্রখ্যাত মডেল শ্বেতা জয় শঙ্করকে তালাক দেন মহেশ ভূপতি। ২০১২ সালে লারা-মহেশ দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় কন্যা সায়রা।

কারিনা কাপুর ও সাইফ আলী খান
বর্তমান সময়ে বলিউডের আলোচিত তারকা দম্পতি সাইফ আলী খান ও কারিনা কাপুর। তাঁদের প্রেমের শুরু ২০০৭ সালে ‘তাশান’ ছবিতে অভিনয়ের সময়। পাঁচ বছর প্রেম করার পর ২০১২ সালের ১৬ অক্টোবর গাঁটছড়া বাঁধেন পতৌদির নবাব সাইফ আলী খান এবং ‘হিরোইন’ তারকা কারিনা কাপুর। ২০০৪ সালে বয়সে ১৩ বছরের বড় বলিউডের অভিনেত্রী অমৃতা সিংয়ের সঙ্গে ১৩ বছর সংসার করার পর বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন সাইফ। সাইফ-কারিনার একমাত্র পুত্র তৈমুর আলী খান।

সিদ্ধার্থ রায় কাপুর ও বিদ্যা বালান
বলিউডের ‘দ্য ডার্টি পিকচার’ তারকা বিদ্যা বালান ইউটিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিদ্ধার্থ রায় কাপুরের সঙ্গে টানা দুই বছর প্রেম করেন। মিডিয়ায় তাঁদের প্রেমের বিষয়টি ওপেন সিক্রেট থাকলেও তাঁরা কখনো স্বীকার করেননি। এমনকি বিয়ের কিছুদিন আগেও তাঁরা এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন। সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২০১২ সালে ঘরোয়া আয়োজনে বিয়ে করেন বিদ্যা বালান ও সিদ্ধার্থ রায় কাপুর। বিদ্যার স্বামীও আগে বিয়ে করেছেন।

আদিত্য চোপড়া ও রানী মুখার্জী
বিভিন্ন সময়ে রানী মুখার্জীর সঙ্গে গোবিন্দ, আমির খান, অভিষেক বচ্চন ও আদিত্য চোপড়ার প্রেম-সম্পর্কিত গুজব প্রকাশিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত রানী-আদিত্যর গুজব সত্যি হয়। ২০১৪ সালে বলিউডের বিখ্যাত যশরাজ ফিল্মসের চেয়ারম্যান আদিত্য চোপড়াকে বিয়ে করেন রানী মুখার্জী। আদিত্য চোপড়া ২০০৯ সালে প্রথম স্ত্রী পায়েল খান্নার সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ৫:৩৩ পিএম, ২৫ অক্টোবর, ২০১৭ বুধবার
ডিএইচ

Share