সাগরে নিম্নচাপ, সারাদেশে ভ্যাপসা গরম

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ক্রমান্বয়ে শক্তিশালী হয়ে আজ শুক্রবার নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে এর মধ্য দিয়েও সারাদেশে বয়ে যাচ্ছে মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ। একই সঙ্গে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে দেশজুড়ে অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম।

শুক্রবার (২৪ মে) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি শুক্রবার সকাল ৬টায় নিম্নচাপ আকারে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর (১৫.১ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।

নিম্নচাপ থাকলেও দেশের আট বিভাগের ওপর দিয়েই মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ বইছে। একই সঙ্গে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

তবে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা থাকলেও আজ খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গা ছাড়া দেশের আর কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। এসব জেলায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

সাগরে নিম্নচাপের বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, নিম্নচাপটি শুক্রবার সন্ধ্যার পর গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এটি খুব দ্রুত এগোচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমাদের গাণিতিক মডেল ইঙ্গিত দিচ্ছে এটি সাইক্লোনে পরিণত হতে পারে। সুন্দরবন, খুলনা, রাজশাহী ও কলকাতার ওপর দিয়ে এটি অতিক্রম করবে। ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আমাদের গাণিতিক মডেল বলছে, এটি ২৬ তারিখ বিকেলে আঘাত হানতে পারে।

তিনি আরও বলেন, লঘুচাপটি স্পষ্ট হওয়ার পর আমরা জেলেদের সতর্ক করেছি। যারা মাছ ধরতে গেছে তারা যেন উপকূলের কাছাকাছি ফিরে আসে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত না হলেও সাগর উত্তাল থাকবে। তাই জেলেদের নিরাপদে থাকতে হবে।

‘এই ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে অনেক অনিশ্চয়তা আছে। এটি দুর্বল হতে, আবার শক্তিশালীও হতে পারে। গতিপথও পরিবর্তন হতে পারে। আমরা আসলে পরিস্থিতি বুঝে আপডেট দেবো। মানুষকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। তবে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে সারাদেশে বৃষ্টি হবে’- বলেন আজিজুর রহমান।

এদিকে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ১ (এক) নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেতের মানে হলো- জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার যা সামুদ্রিক ঝড়ে পরিণত হতে পারে।

আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন, নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘রিমাল’। এ নামটি ওমানের দেওয়া। এর অর্থ বালু। ঘূর্ণিঝড়টি আগামী রোববার (২৬ মে) নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/২৪ মে ২০২৪

Share