২০ দিন আগেও দেশের বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হতো ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে। হঠাৎ সেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে হয়ে যায় দ্বিগুণ। সোমবার (২৮ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই মিলেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের সরবরাহ আছে পর্যাপ্ত। মাঝখানে মন্ত্রণালয় থেকে পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসার পর খুচরা পর্যায়ে খানিকটা দামও কমে। কিন্তু এখন সেই ৭৮-৮০ টাকা কেজি দরেই বিক্রি হচ্ছে।
জানতে চাইলে কারওয়ান বাজার এলাকার মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মালেক হোসাইন বলেন, পাইকারি ব্যবসায়ীদেরই বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে পেঁয়াজ। মাঝখানে আবার দালাল-ফড়িয়া আছে, পরিবহন খরচ আছে। সব মিলিয়েও ঠিকঠাক ছিল। হঠাৎ আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই খুচরা পর্যায়ে দাম বেড়ে গেছে। দুই-চার দিনের মধ্যে দাম কমছে না।
এ তো গেল পাইকারদের কথা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি ব্যবসায়ীদের কারসাজিতেই অস্থির পেঁয়াজের বাজার।
একই বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আবদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা পাইকারদের কাছ থেকেই পেঁয়াজ কিনি। উৎপাদক পর্যায়ে কিনলে পোষাতে পারব না। আগের দিন যে পেঁয়াজ আমরা কিনলাম ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে, পরদিন একই গুদামের একই স্টকের মাল কিনতে গিয়ে শুনি ৭০ টাকা কেজি। তখন আমরা তো নিরুপায়। মূলত দালাল ও পাইকাররা কারসাজি করেই পেঁয়াজের বাজারকে অস্থির করে তুলেছে। কয়েকদিনের মধ্যে কমতে পারে বলে মনে হচ্ছে না।
কারওয়ান বাজার এলাকায় বাজার করতে এসেছিলেন হোসেন দেলওয়ার নামে একজন। তিনি বলেন, পেঁয়াজ আমি যখনই কিনি, অন্তত পাঁচ কেজি করে কিনি। কিন্তু, আজ দুই কেজি কিনলাম বাড়তি দামের জন্য। দাম কমলে নেব।
ক্রেতা হিসেবে বাড়তি দামের বিষয়ে কী বলবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পুরো বাজার সিস্টেমই ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের হাতে বন্দি। সবকিছুর দাম পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এভাবে চললে এক সময় মানুষের না খেয়ে থাকতে হবে।
কথা হয় মো. মোকতার হোসেন নামে আরেকজনের সঙ্গে। পেঁয়াজের বাজার নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছে। বাজারে নেই পর্যাপ্ত মনিটরিং। যার যেভাবে খুশি, যখন খুশি দাম বাড়াচ্ছে। আমাদের নাভিশ্বাস উঠছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আমদানির ঘোষণার পরও পেঁয়াজ আগের মতোই ৮০-৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আদার দাম কেজিতে বেড়েছে ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত। রসুন গত সপ্তাহে ১২০-১৫০ টাকা কেজি ছিল, এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকায়।
একইভাবে ১০-২০ টাকা করে বেড়েছে শুকনো মরিচ, হলুদ ও জিরার দাম। শুকনো মরিচ প্রতি কেজি ৪২০-৫২০ টাকা, হলুদ ২২০-৩০০ এবং জিরা ৮২০-৯০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
টাইমস ডেস্ক/ ২৮ মে ২০২৩