গোলাম মাওলা রনি
সেবার চীন দেশে অদ্ভুত এক ঘটনা ঘটল। মানুষের মধ্যে কে যেন খবর রটিয়ে দিল যে, তাদের দেশের সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তিটি স্বর্গে যাওয়ার সহজ একটি উপায় আবিষ্কার করেছেন। ফলে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার স্বর্গলোভী মানুষ সহজ শর্তে স্বর্গলাভের আশায় জ্ঞানী ব্যক্তিটির বাড়িতে আসতে শুরু করল। প্রাচীন চীনের বিশাল আয়তন ও দুর্গম পথঘাট ইত্যাদি কোনো কিছুই পঙ্গপালের মতো ছুটে আসা মানুষকে রুখতে পারল না। ফলে আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে চীন দেশের মহাপণ্ডিত কনফুসিয়াস হঠাৎ করে কী রকম ঝামেলায় পড়ে গেলেন তা বর্তমান জমানায় বসেও আমরা দিব্যি কল্পনা করতে পারি।
কনফুসিয়াস তাবৎ বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানীদের মধ্যে অন্যতম। তার জ্ঞানের পরিধি ও বিশালত্ব মাপার মতো জ্ঞানী আজ অবধি জমিন পয়দা করতে পারেনি। বরং মহাকালের সব জ্ঞানী-গুণী ও পণ্ডিত কনফুসিয়াসের চিন্তাধারা, আদর্শ এবং নীতি-নৈতিকতা দ্বারা দারুণভাবে প্রভাবিত হয়ে আসছেন এবং অবাক বিস্ময়ে তার জ্ঞানের গভীরতায় মজে গিয়ে মানব জনম সার্থক করার চেষ্টা করেছেন। কনফুসিয়াস খুব ভালো করেই জানতেন, কীরূপে গুজব নিষ্পত্তি করতে হয়। তিনি যদি শতমুখে বলতেন যে, তিনি স্বর্গলাভের কোনো উপায় আবিষ্কার করেননি তবুও লোকজন বিশ্বাস করত না। ফলে তিনি নিজের ঘরে স্বর্গপ্রত্যাশী জনগণ দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে প্রলুব্ধ হলেন না, কিংবা কোনোরকম উত্তেজনা, অস্থিরতা অথবা বিরক্তি প্রকাশ করলেন না। তিনি কোনো কথা না বলে নীরবে-নিভৃতে আপন কর্ম করে যেতে থাকলেন।
কনফুসিয়াসের অবিচল নীরবতা স্বর্গপ্রত্যাশীদের লোভ বহুগুণে বাড়িয়ে দিল। তারা কনফুসিয়াসের বাড়ির সামনে তাঁবু গেড়ে রীতিমতো মাহফিল জমিয়ে ফেলল। তাদের সবার মুখে একই কথা— এত বড় জ্ঞানী! নিশ্চয়ই স্বর্গের পথ আবিষ্কার করে ফেলেছেন। তিনি নীরব থেকে আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন। কাজেই আমরাও যাচ্ছি না— আসল কথা না শুনে আমরা বাড়ি ফিরব না। স্বর্গপ্রত্যাশীর ক্রমাগত ভিড় ও দৃঢ়তা দেখে কনফুসিয়াসের পরিবার ভয় পেয়ে গেল। তার বড় ছেলে পিতার সামনে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। কনফুসিয়াস সেদিকে ভ্রূক্ষেপ না করে আপন মনে নিজ কর্মে ব্যস্ত রইলেন। তিনি তখন প্রাচীন চৈনিক কবিদের রচনা করা কবিতাগুলো নিয়ে একটি সংকলন সম্পাদনায় নিমগ্ন ছিলেন। কাজের ফাঁকে তিনি আড় চোখে দাঁড়িয়ে থাকা প্রিয় সন্তানের মুখপানে কয়েকবার তাকালেন এবং অনুমান করলেন যে, তার সন্তানও বিশ্বাস করতে আরম্ভ করেছেন যে তার বাবা অবশ্যই স্বর্গলাভের পথ আবিষ্কার করে ফেলেছেন এবং তা লিখিত আকারে জনগণের কাছে পেশ করার জন্য মনোযোগ দিয়ে সংকলিত করছেন।
মহামতি কনফুসিয়াস তার প্রিয় পুত্রের মানসিক অবস্থা বুঝতে পেরে তাকে কাছে ডেকে আদর করে পাশে বসালেন। তারপর বললেন, ‘ওহে আমার প্রিয় পুত্র! তুমি মনোযোগসহকারে আমার কথাগুলো শোনো। আমার মনে হচ্ছে তুমি স্বর্গে যাওয়ার পথ এবং আমার হাতের সংকলনটি সম্পর্কে অতিমাত্রায় কৌতূহলী এবং আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছ। কাজেই তোমার অবগতি ও সন্তুষ্টির জন্য বলছি, প্রিয় বৎস! আমি স্বর্গে যাওয়ার কোনো সহজ পথ জানি না এবং তা জানার চেষ্টাও করিনি। আমার হাতের এই সংকলনটি একটি কবিতার বই যাতে শত শত চৈনিক কবির বাহারি কবিতা সন্নিবেশিত হয়েছে। এটি নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে আমি যা শিখেছি এবং আমার বাড়ির সামনে হাজার হাজার স্বর্গপ্রেমীর ভিড় ও আকুতি দেখার পর মনে হচ্ছে এ সংকলনটিই হতে পারে সহজে স্বর্গে যাওয়ার একটি অব্যর্থ মহৌষধ। প্রিয় পুত্র! তুমি এ সংকলনটি মনোযোগসহকারে পড় এবং সংকলনমতে মন-মস্তিষ্ক ও চরিত্রের উন্মেষ ঘটাও। আমি দিব্যি করে বলতে পারি যে, তুমি যদি সংকলনটি আমার পরামর্শমতো পড় এবং অনুসরণ কর তবে তোমার স্বর্গলাভের সম্ভাবনা ৫০%। তবে তুমি যদি এটি না পড় অথবা এ ধরনের অন্য কোনো বই না পড় তবে কোনো দিনই স্বর্গে যেতে পারবে না।’
কনফুসিয়াসপুত্র তার মহাজ্ঞানী পিতার উপদেশে যারপরনাই আশ্চর্য হয়ে পড়লেন। তিনি হতবিহ্বল কণ্ঠে বললেন, ‘সম্মানিত বাবা! আমার মাথায় ঢুকছে না কবিতা কী করে মানুষকে স্বর্গে যাওয়ার নিশ্চয়তা দেবে এবং কেন কবিতা না পড়লে কেউ স্বর্গে যেতে পারবে না! কনফুসিয়াস তার পুত্রের কথা শুনে হাসলেন এবং সবিস্তারে কবি, কবিতা ও স্বর্গলাভের শর্তসমূহ ব্যাখ্যা করলেন। দীর্ঘ আড়াই হাজার বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর মহামতি কনফুসিয়াসের স্বর্গলাভের সহজ শর্তের সেই অনুপম জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা আজও পুরনো হয়নি। আজকের নিবন্ধের মাধ্যমে আমরা অনাদিকালের সেই কনফুসীয় চিন্তাধারা যা কিনা মানুষকে দুনিয়ার জীবনে আশরাফুল মাখলুকাত এবং পরকালে জান্নাতি মেহমান হওয়ার সৌভাগ্য এনে দেয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
কনফুসিয়াসের মতে, ভালো মানুষ ছাড়া অন্য কেউ স্বর্গে যেতে পারবে না। আবার ভালো মানুষ হতে গেলে সবার আগে দরকার পড়বে ভালো মন। মানুষের কর্ম, চিন্তা-চেতনা, চরিত্র, ইচ্ছাশক্তি ইত্যাদি সবকিছুর নিয়ন্তা হলো মন। একটি সুন্দর মনই পারে একটি সুন্দর মানুষ গড়তে। মনের প্রশস্ততা যত বিশাল হবে ততই মানুষটির বিশালতা স্থান-কাল-পাত্র ভেদ করে গগনচুম্বী হতে থাকবে। পৃথিবীর সব বস্তুগত সৃষ্টির সীমা ও পরিসীমা রয়েছে, রয়েছে প্রতিটি সৃষ্টির শুরু ও শেষ। আকাশ, মাটি, নদী-সমুদ্র, পাহাড়, মরুভূমি, নক্ষত্রমণ্ডলী সবকিছুর আদি-অন্ত যেমন রয়েছে তেমন রয়েছে আকার, আকৃতি ও গভীরতার সীমানা। কিন্তু মানবমনের কোনো সীমানা নেই। মানবমন পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর সমুদ্রের অতলান্ত ভেদ করে চলে যায় পাতালপুরীতে। আবার অসীম আসমানের কল্পিত সীমানা পেরিয়ে চলে যায় দূরে, বহু দূরে; কখনো বা স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার কুরসির একদম কাছাকাছি।
মানুষের ভালো মন সৃষ্টি এবং সেই মনের বিশাল ব্যাপ্তি লাভের পেছনে ভালো কবিতা সর্বদা মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। মনের বিশুদ্ধতা অর্জনের জন্য মানুষকে সবসময় আমিত্ব বর্জন করতে হয়। মানুষ তার চারপাশের গণ্ডি পেরিয়ে মনের চোখটি যত দূরদিগন্তে বিস্তৃত করতে পারে ততই তার মন বড় হতে থাকে। মানুষ তার নিজস্ব স্বার্থ, ব্যক্তিমালিকানা, ক্ষমতা, ভোগ-বিলাস ইত্যাদি ভুলে যখন প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে পারে ঠিক তখনই তার চিত্ত প্রশান্ত ও পরিশুদ্ধ হতে থাকে। বন-বনানীর সবুজাভ পরিবেশ, পাখির কলকাকলী, নদীর কলতান, জ্যোত্স্নার মায়াভরা মোহ, সকালের সূর্য কিংবা গোধূলির ধুলাধূসরিত অস্তগামী সূর্যের আভা, ফুলের সৌরভ, শিশুর হাসি, মানুষের সুখ-দুঃখ-আনন্দ-বেদনা ইত্যাদি স্বার্থহীন বিষয় যখন মানুষের মনের ওপর তার ব্যক্তিগত স্বার্থ, কামনা-বাসনা, রাগ-ক্ষোভ ইত্যাদির ওপর প্রাধান্য লাভ করতে আরম্ভ করে ঠিক তখন থেকেই মানুষ ধীরে ধীরে ভালো মনের অধিকারী হতে থাকে।
মানুষের কল্পনাশক্তি ও বিচার-বিশ্লেষণের শক্তিমত্তার ওপর মনের নির্মলতা ও বিশালতা নির্ভর করে। কবিতা হলো এমন একটি বিষয় যার মাধ্যমে সব বয়সের নারী-পুরুষের কল্পনার দরজা খুলে যায়। কবিতা মানুষকে আলোড়িত করে, তাকে রূপকথার পাখাওয়ালা ঘোড়ায় করে নিয়ে যায় স্বপ্নপরীদের দেশে। কবিতা তাকে নিয়ে যায় চাঁদের দেশে যেখানে যাওয়ার পথে সুনীল আকাশের সাদা মেঘের ভেলায় বসে কুসুম কুসুম মেঘমালা দ্বারা সে অবগাহন করে নেয়। তারপর রংধনুর সব রং দিয়ে শরীর ও মন রাঙিয়ে চলে যায় পরীস্থানের রাজকুমারীর অন্দর মহলে। সেখানে পৌঁছে পরীকন্যাকে সে মর্ত্যলোকের দুই ছত্র কবিতা শুনিয়ে এমন পাগলপারা করে যাতে দেবী তার পরীত্ব ত্যাগ করে মানুষ হওয়ার জন্য উতালা হয়ে ওঠে। কবিতা কোনো কালে মানুষকে অপরাধ করতে প্রলুব্ধ করেনি, কিংবা সৃষ্টি করেনি দ্বন্দ্ব-সংঘাত, মারামারি-হানাহানি কিংবা ধ্বংসযজ্ঞের কিয়ামতের পানে তাকে টেনে নিয়ে যায়নি। কবিতা সর্বদা শান্তির বার্তা বহন করে আসছে। মায়া-মমতা, প্রেম-ভালোবাসা সৃষ্টির পাশাপাশি কবিতা মানুষকে সত্য কথা বলতে, সত্যকে ধারণ করতে এবং মিথ্যাকে প্রতিহত করতে শিখিয়েছে। কবিতা মানুষকে প্রতিবাদী হতে শেখায়, কবিতার জন্য মানুষ সাহসী হয়ে ওঠে। কবিতা জীবনকে ছন্দময় করে তোলে এবং মানুষকে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখায়। কাজেই যে সমাজে কবি নেই এবং যেখানে কবিতা রচনা হয় না সেখানকার আবহাওয়া জাহান্নামের মতো হয়ে ওঠে। কবিতাহীন ভূমি যেমন অনুর্বর তেমন কবিতাহীন মনও মৃতপুরী হিসেবে বিবেচিত হয়।
মর্ত্যলোকে মানুষ ততক্ষণই মানুষ হিসেবে অস্তিত্ববান থাকে যতক্ষণ তার মনে আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং বেঁচে থাকার কামনা জাগ্রত থাকে। মানুষের চরিত্র, আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চলাফেরা থেকে মৃগনাভী কিংবা গোলাপের সৌরভ তখনই ছড়াতে আরম্ভ করে যখন প্রকৃতির জন্য তার অন্তর কাঁদতে আরম্ভ করে। সে যখন অবাক বিস্ময়ে প্রকৃতির অনুপম সৃষ্টি কুশলতা দেখে বিমোহিত হয় এবং সেগুলোর সৃষ্টিকর্তাকে খুঁজতে থাকে তখন আসমান থেকে স্বর্গ নেমে এসে তার হৃদয়ে আশ্রয় নেয়। মানুষ যখন প্রকৃতির প্রেমে পাগল হয়ে পড়ে তখন তার আপন স্বার্থসমূহ সংরক্ষণের দায়িত্ব প্রকৃতি তার অপার লীলায় নিজের জিম্মায় নিয়ে নেয়। ফলে মানুষের মর্ত্যলোক ও স্বর্গলোক এমনভাবে একাকার হয়ে যায় যা কবিতা না পড়া অসুন্দর মনের মানুষ কল্পনাও করতে পারে না।
পৃথিবীর তাবৎ ধর্মমত, সাধুজন, দেবতা কিংবা ঈশ্বরের প্রতিনিধি সবাই মানবমনের বিশুদ্ধতার কথা বলে গেছেন। মন বিশুদ্ধ না হলে কর্মে সুফল আসে না। মনের ওপরই মানুষের চিন্তাধারা, চরিত্র ও অস্তিত্ব নির্ভর করে। মানুষের সফলতা, সার্থকতা এবং অমরত্বের জন্য একটি ভালো মন অপরিহার্য। মানুষের স্মরণশক্তি, প্রতিভা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা সবকিছুই ভালো মনের ওপর নির্ভর করে। ভালো মনের কতগুলো প্রধানতম বৈশিষ্ট্য হলো তারা নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা করে পেরেশান হন না, তারা জীবনের সবকিছুতেই সর্বাবস্থায় সন্তুষ্ট থাকেন। তারা সর্বদা কথা বলেন কম, শোনেন বেশি এবং চিন্তা করেন আরও বেশি। ভালো মনের মানুষের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো তারা প্রতি মুহৃর্তে অবাক ও আশ্চর্য হয়ে যান শিশুদের মতো করে। তারা অনবরত বহুবিধ প্রশ্নে নিজেকে জর্জরিত করে তোলেন এবং সেই প্রশ্নের জবাব খোঁজার জন্য পাহাড়, নদী, সমুদ্র থেকে অরণ্য মরুভূমি হয়ে ছুটে যান উত্তর কিংবা দক্ষিণ মেরুর বরফের রাজ্যে।
পৃথিবীর অনাদিকালের সুন্দর মনের মানুষের চিন্তাধারা, কর্ম ও মানবিক মূল্যবোধ বিশ্লেষণ করলেই আজকের নিবন্ধের মূল প্রতিপাদ্য স্পষ্ট হয়ে যাবে। গৌতম বুদ্ধ, বাল্মীকি, মাওলানা রুমি, শেখ সাদি প্রমুখ মহাজন মনের টানে বার বার প্রকৃতির কাছে চলে গিয়েছিলেন এবং প্রকৃতির সান্নিধ্যে থেকেই সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। হজরত ইবরাহিম (আ.) প্রশ্ন করেছিলেন নিজেকে এবং সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়েই পেয়েছিলেন আল্লাহ রব্বুল আলামিনের সন্ধান। বিজ্ঞানী নিউটন আপেল গাছের নিচে বসে হঠাৎ আপেলের পতন থেকে আশ্চর্য হয়ে নিজের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন— কেন আপেল গাছ থেকে বৃন্তচ্যুত হয়ে উপরে না গিয়ে নিচে পতিত হলো? অন্যদিকে সর্বাধিক বৈজ্ঞানিক উপকরণের আবিষ্কারক টমাস আলভা এডিসনও শিশু বয়সে নিজেকে প্রশ্ন করেছিলেন— কীভাবে মুরগি ডিমে তা দেয় এবং তা থেকে কীভাবে আবার বাচ্চা বের হয়।
আলোচনার এ পর্যায়ে সম্মানিত পাঠক হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন যে, সব ভালো মনের অধিকারী মানুষ কি কবিতা পাঠ করেন অথবা কবিতা পাঠ করেই কি তারা ভালো মনের অধিকারী হয়েছিলেন? বিষয়টি আসলে অমন নয়, মহামতি কনফুসিয়াস মূলত স্বর্গলাভের জন্য অবশ্য উপকরণ হিসেবে সুন্দর মনের অধিকারী হওয়ার শর্ত দিয়েছেন এবং সুন্দর মনের মানুষ হওয়ার আরও বহু কর্মের সঙ্গে কবিতার মাধ্যমে মনকে প্রসারিত করার কথা বলেছেন। কেবল কবিতা পাঠ করে যেমন জীবন চলে না আবার কবিতা পাঠ না করা জীবনও থেমে থাকে না। এখানে কবিতা বলতে ছন্দ, কল্পনার বিস্তার, কল্পনা ও স্বপ্নকে কেন্দ্র করে কথামালা রচনা এবং সেই রচনার ভাবরসে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবতার জয়গান, আবিষ্কারের নেশা এবং কাজ করার প্রত্যয় অর্জনের সক্ষমতাকে বোঝানো হয়েছে। কাজেই আপনারা যারা সহজ শর্তে স্বর্গে যাওয়ার ৫০% সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে চান তারা আজ থেকেই একটি ভালো মনের অধিকারী হওয়ার জন্য সর্বতো চেষ্টা-তদবির শুরু করে দিন।
লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য ও কলামিস্ট।
(বাংলাদেশ প্রতিদিন)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০: ৫৫ এএম, ২৭ জানুয়ারি ২০১৮,শনিবার
এএস