সর্বোচ্চ দরদাতাকে দেওয়া হয়নি ইজারা

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে সরকারি জলমহাল ইজারায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। একটি জলমহাল সর্বোচ্চ ডাককারীকে নিলাম না দিয়ে কম মূল্যে ডাককারী কথিত মৎস্যজীবী সমিতিকে ইজারা প্রদান করায় বঞ্চিত হয়েছেন সরকারের তালিকাভুক্ত প্রকৃত মৎস্যজীবীরা। এ নিয়ে তাদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তাই সর্বোচ্চ ডাককারীকে জলমহাল ইজারা প্রদানের দাবি তুলেছেন তারা। এই ঘটনায় প্রকৃত মৎস্যজীবীদের সংগঠন সন্তোষপুর আদর্শ মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি আবু তাহের জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘গত ৬ মার্চ ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের হর্নি সাবেক গুদাড়া ঘাট হইতে দক্ষিনে ডাকাতিয়া নদী পর্যন্ত ১৩.৮৩ একরের জলমহালটি ইজারা পেতে দরপত্রে অংশগ্রহণ করে সন্তোষপুর আদর্শ মৎসজীবি সমবায় সমিতি। তারা সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ ৮২ হাজার ৫’শ টাকায় সর্বোচ্চ ডাককারী হন।

এ ছাড়া সমিতির অন্তর্ভুক্ত ২০ জন মৎসজীবির মধ্যে ১৩ জন সদস্য সরকারের তালিকাভুক্ত (এফআইডি) মৎস্যজীবী। তার মধ্যে প্রত্যয়নকৃত মৎসজীবী ৭ জন। উক্ত নদী এলাকায় সরকার ঘোষিত কোন মৎস পাড়া নাই। সে ক্ষেত্রে ৬ জন মৎসজীবী কার্ডধারী জেলে একই ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের হলেও ডাকািতয়া নদীর তীরবর্তী পাড়ে তারা বসবাস করে আসছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইজারা পাওয়া সন্তোষপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সর্বনিম্ন ৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা দরদাতা হিসেবে ইজারা পায়। কিন্তু তাদের সদস্য সংখ্যা ২২ জনের মধ্যে ১০ জন কার্ডধারী জন মৎসজীবী ও তার মধ্যে ৬ জন অমৎসজীবী এবং বাকী ৪ন জন মৎসজীবী ছিল। কিন্তু সমিতির কর্তাব্যক্তিদের অনিয়মের কারনে কার্ডধারী পেশাদার জেলে আলী আকবর, হজু মিয়া, মোক্তার, কামাল হোসেন সন্তোষপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতি স্ব- ইচ্ছায় সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে সন্তোষপুর আদর্শ মৎসজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন এবং সন্তোষপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি কাজী মোক্তার হোসেন উপজেলা মৎস অফিসের মাঠ কর্মী হিসেবে কর্মরত রয়েছে। সেই সুবাদে কাজী মোক্তার হোসেন উপজেলার কর্তাব্যক্তিদের ম্যানেজ করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কম টাকায় ইজারা নেয়। শুধু তাই নয়, সন্তোষপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির নিজস্ব কার্যালয় থাকলেও পারত পক্ষে সরজমিনে তাদের অফিসের কোন নমুনা পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জলমহাল ইজারা কমিটির সদস্য ও উপজেলা মৎস কর্মকর্তা ফারহানা আক্তার রুমা বলেন, আমি জলমহাল ইজারা কমিটির সদস্য হিসেবে আছি। তবে আমি কার্ডধারী মৎসজীবীদের সার্টিফাইড করেছি।

এ বিষয়ে জলমহাল ইজারা কমিটির সদস্য ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম মিয়া বলেন, আমরা কাগজপত্রে যা পেয়েছি, সে নিয়মানুযায়ী কাজ করেছি। তবে কাহারো যদি অভিযোগ থাকে তাহলে তারা আপিল করলে পুনঃরায় তদন্ত করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিউলী হরি’কে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ফরিদগঞ্জ জলমহল নিয়ে অনিয়মের বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাষ অঞ্জনা খান মজলিশের কাজে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

উল্লেখ্যঃ এ বিষয়ে চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ৭ এপ্রিল ২০২২

Share