Home / শীর্ষ সংবাদ / সরকার চাঁদপুরে সাড়ে ১৭ হাজার মে.টন ধান-চাল ক্রয় করবে
Rice
প্রতীকী ছবি

সরকার চাঁদপুরে সাড়ে ১৭ হাজার মে.টন ধান-চাল ক্রয় করবে

চাঁদপুর জেলার ৮ উপজেলা থেকে সরকার সরাসরি ধান-চাল ক্রয করবে । চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে সাড়ে ১৭ হাজার মে.টন চলতি ইরি-বোরো ,মিলারদের মাধ্যমে সিদ্ধ ও আতব চাল ক্রয় করবে।

২৯ এপ্রিল চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চাঁদপুর টাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন ।

প্রাপ্ত তথ্য মতে , চাঁদপুরের ৮ ইপজেলা হতে চলতি অর্থবছরের বোরো মৌসুমে সাড়ে ৮ হাজার ৩ শ’৫৭ মে.টন ধান , ৭ হাজার ৪শ ৯৫ মে.টন সিদ্ধ চাল কিনবে ও ১ হাজার ৬ শ ১৭ মে.টন আতব চাল ক্রয় করবে সরকার । দেশের খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে সরকারের এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের অনুমোদিত মিল মালিকদের সাথে আজ বৃহস্পতিবার ৩০ এপ্রিল চাল সংগ্রহ করার চুক্তিপত্র সমাপ্ত করার কথা জানিয়েছে চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ।

প্রাপ্ত সূত্র মতে , চাঁদপুরে এবার সরকারিভাবে কেজি প্রতি সিদ্ধ চাল ৩৬ টাকা করে চাল, ৩৫ টাকায় আতব চাল ও ২৬ টাকায় ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের অনুমোদিত মিল মালিকগণের কাছ থেকে এ চাল সংগ্রহ করবে। সংশ্লিষ্ঠ স্ব স্ব উপজেলা কমিটি কর্তৃক ধান ক্রয় হবে।

অনুমোদিত মিল মালিকদের সাথে চুক্তি হওয়ার পর পরই জেলায় চাল ক্রয় শুরু করা হবে যা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চাল ক্রয় চরেবে। কৃষকদের আপতকালীন মজুতকরারও নির্দেশ রয়েছে। একজন তালিকাভুক্ত কৃষকের কাছ থেকে সর্ব্বোচ্চ ৩ মে.টন চাল ক্রয় করতে পারবে।

চাঁদপুর জেলা খাদ্য বিভাগের সূত্রে জানা গেছে , চলতি বছরের মে ২০২০ থেকে সারা দেশসহ চাঁদপুরের সকল উপজেলায় কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করবে। সংশ্লিষ্ট চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের অনুমোদিত কৃষকগণের কাছ থেকে যা কৃষিবিভাগের তালিকাভুক্ত এবং যাদের কৃষি সহায়তা কার্ড রয়েছে ও স্ব স্ব উপজেলা খাদ্য কমিটির অনুমোদিত তাদের কাছ থেকে ডিলারগণ চাঁদপুরের চাল,ধান ও গম ক্রয় করবে।

চাঁদপুর জেলা খাদ্য বিভাগের সূত্র মতে, চাঁদপুর সদরে ৭ শ ৪৪ মে.টন ধান , ৩ হাজার ৫শ ২৮ মে.টন সিদ্ধ চাল ও ১ শ’৬৮ মে.টন আতব চাল , হাইমচরে ৮৬ মে.টন ধান , ৪৩ মে.টন সিদ্ধ চাল ও ১৫ মে.টন আতব চাল ।

হাজীগঞ্জ থেকে ১ হাজার ২শ ৮৯ মে.টন ধান , ৬ শ ৪৮ মে.টন সিদ্ধ চাল ও ২ শ’ ৩১ মে.টন আতব চাল,ফরিদগঞ্জ থেকে ১ হাজার ৩শ ৬০ মে.টন ধান , ৬ শ ৮৩ মে.টন সিদ্ধ চাল ও ২ শ’ ৪৩ মে.টন আতব চাল ।

শাহরাস্তি থেকে ১ হাজার ২শ ৯৭ মে.টন ধান , ৬ শ ৮৩ মে.টন সিদ্ধ চাল ও ৩ শ’ ১৯ মে.টন আতব চাল , কচুয়া থেকে ১ হাজার ৬ শ ৮০ মে.টন ধান, ৯ শ ২৮ মে.টন সিদ্ধ চাল ও ৩ শ’ ১ মে.টন আতব চাল ।

মতলব উত্তর থেকে ১ হাজার ২শ ৫৭ মে.টন ধান , ৬ শ ৪৭ মে.টন সিদ্ধ চাল ও ২ শ’ ২৫ মে.টন আতব চাল এবং মতলব দক্ষিণ থেকে ৬ শ ৪৪ মে.টন ধান , ৩ শ ৩৯ মে.টন সিদ্ধ চাল ও ১ শ’ ১৫ মে.টন আতব চাল সংগ্রহ করার সরকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ।

চাঁদপুরে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ইরি-বোরো উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা দু’লাখ ৬৩ হাজার ২ শ’মে. টন নির্ধারণ করা হয়েছে বলে চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছেন। হাইব্রিড, স্থানীয় ও উন্নত ফলনশীল এ ৩ জাতের ইরি-বোরোর চাষাবাদ করে থাকে চাঁদপুরের কৃষকরা। কম-বেশি সব উপজেলাই ইরি-বোরোর চাষাবাদ হয়ে থাকে । কৃষি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান,হাইব্রিড, স্থানীয় ও উন্নত ফলনশীল জাতের ইরি-বোরোর চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে এবং বাম্পার ফলনের আশাবাদী ।

চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে চাঁদপুর জেলায় ৬২ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৬৩ হাজার ২ শ মে.টন চাল।

চাঁদপুররে ৮ উপজলোয় ৪ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ২০১৯- ২০২০ র্অথবছরে ২ শ’ ৪৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা কৃষি ঋণ ও দারিদ্বিমোচনে বিতরণে সোনালী,অগ্রণী,জনতা ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও ২৪ টি বেসরকারি ব্যাংকে ৬৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ।

চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ সরকারি হিসেব মতে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চাল ক্রয়ের সময়সীমা রয়েছে। সে পর্যন্ত মিলারগণ ধান ও চাল সংগ্রহ করে জেলা খাদ্য বিভাগকে সরবরাহ করতে পারবে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকারি নির্দেশ মতে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন ওই চাল ও গম জিআর, টিআর, ভিজিটি, ভিজিএফ,আপতকালীন সময়ে ১০ টাকা কেজি ধরে ও জাটকা সংরক্ষণে ভিজিফ ইত্যাদি প্রকল্পের মাধ্যমে বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। যা স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি কর্তৃক তা বিতরণ করা হয়।’

প্রসঙ্গত, সরকার চলতি বোরো মৌসুমে ১৮ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরমধ্যে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন গম, ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান, ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং দেড় লাখ মেট্রিক টন বোরো আতপ চাল কিনবে। এর মধ্যে সরকার মাঠ পর্যায়ে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করবে। ইতিমধ্যে গম,চাল ও ধানের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে খাদ্য অধিদপ্তর মাঠ পর্যায় থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে গম, ২৬ টাকা কেজি দরে ৬ লাখ মে. টন ধান, ৩৬ টাকা কেজি দরে ১০ লাখ মে. টন চাল এবং ৩৫ টাকা কেজি দরে ১ লাখ ৫০ হাজার মে. টন বোরো আতপ চাল কিনবে।

এসব ফসল কেনার জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় যে সময়সীমা নির্ধারণ করেছে সে অনুযায়ী ১৫ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন গম, ২৬ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৬ লাখ মে. টন বোরো ধান, ৭ মে থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বোরো সিদ্ধ চাল এবং এবং একই সময়ে দেড় লাখ মে. টন বোরো আতপ চাল সংগ্রহ করবে খাদ্য বিভাগ ।

প্রতিবেদক- আবদুল গনি , ৩০ এপ্রিল ২০২০