বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার নারায়ণগঞ্জে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, ‘সরকারের প্রায় তিন বছর হতে চলেছে। দুই বছর আগে মন্ত্রিপরিষদে পুনর্গঠন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এটি তাঁর এখতিয়ারভুক্ত।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এটা কখন হবে, কী করবেন- এটা চূড়ান্তভাবে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তবে হবে, সম্ভাবনা তো আছে।’
নারায়ণগঞ্জে দ্বিতীয় সাউথ এশিয়ান ইউনিফায়েড ক্রিকেট উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরো জানান, সরকার থেকে দলকে আলাদা করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করা হবে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ১২ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে। এরপর ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ পুনর্গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের পর যে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেখানে নারায়ণগঞ্জের কোনো প্রতিনিধি নেই- এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিনিধি, নেতৃত্ব এগুলো অঞ্চল ভিত্তিতে বিবেচিত হয় না।
এ সময় সরকার থেকে দলকে আলাদা করার বিষয়টি তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘একজনকে হয়তো কেন্দ্রীয় কমিটিতে দিচ্ছি, আরেকজনকে হয়তো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেব। এভাবে আমরা ভাগ করে ফেলছি। কারণ একজনে নানা দায়িত্ব যদি পালন করে, তাহলে কাজগুলো গুলিয়ে ফেলে। এতে করে কোনো কাজই ভালোভাবে হয় না। কাজেই সরকার থেকে দলীয় কর্মকাণ্ডকে বিচ্ছিন্ন করার একটি প্রয়াস আছে। এটি আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছেন। সেই আলোকেই আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচিত হয়েছে।’
গত ২৭ অক্টোবর রাজধানীর গুলিস্তানে ফুটপাতের অবৈধ দোকান উচ্ছেদের সময় পিস্তল হাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন ও ওয়ারী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমানকে দেখা যায়।
এ ছাড়া গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কাউন্সিলর এইচ এম সোহেল ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল আলম লিমনের পক্ষের কর্মীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এরা দুজনই সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সমর্থক বলে জানা গেছে।
এ দুটি ঘটনার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। সরকার বসে নেই। ঢাকার ঘটনায় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। যারাই এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকবে, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’
দুর্নীতির অভিযোগে সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির কারাদণ্ড, খুনের মামলায় টাঙ্গাইলের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান রানা কারাগারে, অন্তত তিনজন মন্ত্রী দুদকের মামলায় বিচারের সম্মুখীন উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এখানে সরকারি দল, বিরোধী দল হিসেবে এটা দেখা হবে না। দেখা হবে অপরাধী, অপকর্মকারী হিসেবে। প্রধানমন্ত্রী কাউকে ছাড় দেবেন না।’
এই মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচনের কোনো চাপ নেই বলেও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি আরো বলেন, সরকার ভালোভাবে দেশ চালাচ্ছে। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে হবে। (এনটিভি)