প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,‘আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান দু’মেয়াদে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের ১৫ জুন পর্যন্ত দেশ থেকে ৪৬ লাখ ৭৯ হাজার কর্মী বিদেশ গমন করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বুধবার (১২ জুলাই )সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য মো.আয়েন উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,‘ বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাতকে সরকার ৩য় সেক্টর হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ খাতের গুরুত্ব অপরিসীম বিবেচনায় বিদ্যমান শ্রম বাজার ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রম বাজার সৃষ্টির ওপর জোর দেয়া হয়েছে। জোট সরকারের আমলে বিশ্বের মাত্র ৯৭ দেশে কর্মী প্রেরণ করা হত। বর্তমানে দেশে থেকে কর্মী প্রেরণ ১৬২টি দেশে উন্নীত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘ নতুন শ্রম বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বৈদেশিক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব নিরসনের লক্ষ্যে কর্মী গ্রহণকারী দেশসমূহের সাথে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনায় জনশক্তি প্রেরণের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। ইউরোপ,অস্ট্রেলিয়া,ব্রাজিলসহ ৫০টি নতুন শ্রম বাজার সম্পর্কে ‘স্টাডি’ সম্পন্ন করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার সাথে বাংলাদেশ সরকারের জি টু জি প্লাস প্রক্রিয়ায় কর্মী প্রেরণের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এখন মালয়েশিয়া কর্মী যাচ্ছে।
মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের অবিরাম শ্রম কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে সে দেশের সরকার ২০১৬ সালে সেপ্টেম্বরে নির্মাণ, শিল্প এবং কৃষি খাতে বাংলাদেশ কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে জারিকৃত সাময়িক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে বাংলাদেশের বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ায় অভিবাসনের দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সৌদি আরব অধিক সংখ্যক নারী কর্মীর পাশাপাশি তাদের নিকট আত্মীয় পুরুষ কর্মী নিতে সম্মত হয়েছে। ২০১৬ সালের ৪-৬ জুনে তার সৌদি আরব সফরকালে সৌদি বাদশার সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে অধিক হারে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। ফলে ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কর্মী গ্রহণের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।’
শেখ হাসিনা বলেন,‘সরকারের শ্রম কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন পাঠানোর বিষয়ে চলতি বছর মার্চে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। ফলে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে ৩ বছরের স্থলে ৫ বছর পর্যন্ত সেদেশে কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘ ২৬টি জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে ফিঙ্গারপ্রিন্ট কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। ২৯টি জেলায় বিদেশগামী কর্মীদের প্রাক-বহির্গমন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ই-লার্র্নিং পদ্ধতিতে গৃহকর্মী পেশায় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ২৯টি টিটিসিতে চালু করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি মোবাইল এ্যাপস চালু করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অভিবাসন ব্যয় হ্রাস এবং বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন ২০১৩’ নামে একটি নতুন আইন কার্যকরা হয়েছে। এ অভিবাসন প্রক্রিয়ায় অনিয়ম,প্রতারণা, অপপ্রচার ইত্যাদি অপরাধের সাথে জড়িত রিক্রুটিং এজেন্সি ও মধ্যস্বত্বভোগীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদন্ড ও ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ডের মতো কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।’ (বাসস) :
ডেস্ক নিউজ
:আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৭:২০ পিএম, ১২ জুলাই ২০১৭, বুধবার
ডিএইচ