অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে কঠোর হচ্ছে সরকার। তাই সরকারি অর্থ ব্যয়ে প্রচলিত বিধি-বিধান যেন কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয় তার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বলা হয়েছে,‘লক্ষ্য রাখতে হবে যেকোনো ক্ষেত্রেই যেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা না হয়। সরকারি অর্থ ব্যয়ে প্রত্যেককে এরূপ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যে সাধারণ বিচক্ষণতাসম্পন্ন একজন ব্যক্তি তার নিজস্ব অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে যেরূপ সতর্কতা অবলম্বন করে থাকেন।’
একক বাজেট (সিঙ্গেল বাজেট) পদ্ধতির আওতাভুক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়নে চলতি সপ্তাহে অর্থ বিভাগ থেকে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার স্বাক্ষরিত এই নির্দেশনায় একক বাজেট পদ্ধতির কর্মসূচি বাস্তবায়নের সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, সংযুক্ত দফতর ও অধস্তন অফিসগুলো কর্মসূচি পরিচালক বা সমন্বয়ক এবং স্কিম পরিচালকদের আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, ‘বাজেটে বিভিন্ন কোডের বিপরীতে বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে প্রকৃত ব্যয় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। অর্থ বিভাগের পূর্ব সম্মতি ব্যতিরেকে সম্পূরক মঞ্জুরি পাওয়া যাবে এ প্রত্যাশায় কোনো অর্থ ব্যয় করা যাবে না। সব ধরনের প্রাপ্তি ও ব্যয় সঠিক কোডে শ্রেণিবিন্যাস করে হিসাবভুক্ত করতে হবে।
এ ছাড়াও প্রতি মাসে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা কর্তৃক ব্যয়িত অর্থের হিসাব সংক্রান্ত যেসব তথ্য প্রদান করা হয় তার সাথে হিসাবের সঙ্গতি সাধন করতে হবে। যেসব মন্ত্রণালয় রা বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো দফতরের হিসাব বিভাগীকরণ করা হয়েছে সেসব মন্ত্রণালয়/বিভাগের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা নিয়মিত তার হিসাবের সাথে সংশ্লিষ্ট দফতরের হিসাবের সঙ্গতি বিধানের ব্যবস্থা করবেন। একই সাথে অডিট আপত্তিগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব বা সচিব তার মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, সংযুক্ত দফতর এবং অধস্তন অফিসগুলোর প্রাপ্তি এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বাজেট মঞ্জুরি হতে যে ব্যয় নির্বাহ হবে সে বিষয়ে প্রধান হিসাবদানকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। তার মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, সংযুক্ত দফতর কিংবা অধস্তন অফিসগুলোকে যে উদ্দেশ্যে অর্থ বরাদ্দ করা হয় সে উদ্দেশ্যেই যেন ব্যয়িত হয় তার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
নির্দেশনামূলক পরিপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ার সমন্বয় জোরদার করা এবং দ্বৈধতা ক্রমান্বয়ে পরিহার করার লক্ষে সরকার একক বাজেট পদ্ধতিতে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চালু করেছে। একক বাজেট পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য গৃহীত কর্মসূচিতে সংশ্লিষ্ট দফতর রা সংস্থাগুলোর নিয়মিত কার্যক্রমগুলো এবং উন্নয়ন ও সংস্কারধর্মী বিভিন্ন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলো তাদের আর্থিক ক্ষমতার মধ্যে যতটুকু সঙ্গত বিবেচনা করবে ততটুকু সংযুক্ত দফতর ও অধস্তন অফিসগুলোকে অর্পণ করবে। আর্থিক ক্ষমতা পুনঃঅর্পণ আদেশে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে যে, প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা পূর্ণ ক্ষমতাবান।
পরিপত্রের বিষয়ে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, একক বাজেট পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের জন্য গৃহীত কর্মসূচির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য একটি নতুন আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ জারি করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়ায় এই পরিপত্রটি জারি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ঢাকা ব্র্যরো চীফ , ২৮ আগস্ট ২০২০