Home / সারাদেশ / সরকারী প্রকল্পে মহিলা কর্মীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

সরকারী প্রকল্পে মহিলা কর্মীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

‎Monday, ‎25 ‎May, ‎2015   02:30:40 PM

ছাইদুর রহমান নাঈম, কিশোরগঞ্জ :

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের রুরাল এমপ্লয়ম্যান্ট এন্ড রোড মেইনটেনেন্স (RERM-2) শর্ষীক প্রকল্পের দু:স্থ মহিলা শ্রমিকদের সঞ্চয়ের টাকা তৎকালীন সুপারভাইজার কৌশলে আত্মসাত করেছে বলে ৮৯ জন মহিলা কর্মী কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অধিনে দেশের বিভিন্ন কাঁচা রাস্তা সচল রাখার জন্য রুরাল এমপ্লয়ম্যান্ট এন্ড রোড মেইনটেনেন্স নামেক একটি প্রকল্প রয়েছে। সেই প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি ইউনিয়নে ১০জন মহিলা শ্রমিক কাজ করে। উপজেলার জালালপুর, লোহাজুরী, আচমিতা, মসূয়া, মুমুরদিয়া, বনগ্রাম, সহশ্রাম ধূলদিয়া, করগাঁও ও চান্দপুর ইউনিয়নের মোট ৮৯জন মহিলা শ্রমিকের নিকট থেকে তাদের বেতন উত্তোলন করে দেওয়ার কথা বলে চেকের পাতায় সই নিয়ে তাদেরকে ব্যাংকের ছাদে বসিয়ে রাখে।

এ সুযোগে উক্ত সুপারভাইজার বেতনের সাথে তাদের সঞ্চয়ের টাকাও উত্তোলন করে এবং শ্রমিকদেরকে শুধু বেতনের টাকা বুঝিয়ে দেয় সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাৎ করে।

পরবর্তীতে তারা জানতে পারেন উক্ত সুপারভাইজার মিলন বেতন ৩ হাজার ১শত টাকা এবং সঞ্চয় ৩হাজার৭শত টাকা করে মোট ৬হাজার ৮শত টাকা করে ৮৯ জন শ্রমিকের ৬ লক্ষ ৫হাজার ২শত টাকা উত্তোলন করে।

শ্রমিক নাজমা আক্তার চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘আমরা লেখা পড়া জানিনা। অসহায় ও দুস্থ মানুষ। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে রাস্তায় কাজ করি। আমাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে সুপারভাইজার মিলন বেতনের টাকা উত্তোলনের সহযোগিতার কথা বলে আমাদের সঞ্চয়ের টাকাও উত্তোলন করে নিয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে আমরা গত ২০ মে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। মিলন এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসী দিয়ে আমাকে মেরে ফেলার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, ‘সঞ্চয়ের টাকা জমা না থাকলে আমাদের চাকুরী থাকবে না। অফিস থেকে আমাদেরকে সঞ্চয়ের টাকা ব্যাংকে জমা দিতে বলেছেন। আমরা গরীব মানুষ। এত টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। এখন সঞ্চয়ের টাকা জমা না দিতে পারলে আমাদের চাকুরীটাও যাবে।’

বর্তমানে সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাৎ অন্যদিকে চাকুরী হারানোর ভয় নিয়ে প্রকল্পের সকল মহিলা শ্রমিকরা উৎকন্ঠায় রয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছেন ভুক্তভোগীরা।

বনগ্রাম ইউনিয়নের মাহমুদা, হাসনা, অনুফা, রুবিনা চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘আমাদের মতো দু:স্থ মানুষের টাকা আত্মসাৎ করে আমাদেরকে নি:স্ব করে দিয়েছে। আমরা তার বিচার দাবী করি।’

কটিয়াদী উপজেলা প্রকৌশলী বাচ্চু মিয়া চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘সুপারভাইজার তোফাজ্জল হোসেন মিলন কৌশলে তাদের টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মাওলাকে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি সরজমিনে রোববার তদন্ত করে মহিলা কর্মীদের সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।’

কটিয়াদী উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাথী বেগম চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘এই দুস্থ মহিলাদের টাকা আত্মসাতের পেছনে যারা জড়িত, তদন্তের মাধ্যমে তাদের প্রত্যেককে খুজে বের করে শাস্তির দাবি করছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা কর্মী জানান, ‘এলজিইডি অফিসে কতিপয় কর্মচারীর সহযোগিতায় সুপারভাইজার মিলন এই অপকর্মটি করতে সাহস পেয়েছে।’

এলজিইডি কিশোরগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মাওলা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি অধিদপ্তরকে অবহিত করেছি। তদন্ত চলছে, দোষী ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি হবে।’

কটিয়াদী উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহাব আইন উদ্দিন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত করে দেখবেন। তবে দুস্থ মহিলাদের যেন চাকুরীর কোন সমস্যা না হয় সেই বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিব।’

চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/‍ডিএইচ/২০১৫

নিয়মিত ফেসবুকে নিউজ পেতে ক্লিক লাইক দিন : www.facebook.com/chandpurtimesonline/likes 

চাঁদপুর টাইমস প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না