লিগ্যাল এইডে সরকারি খরচে ৭ লক্ষাধিক মানুষকে আইনি সেবা প্রদান

২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার (লিগ্যাল এইড) মাধ্যমে ৭ লাখ ২ হাজার ২৫ জন সরকারি খরচায় আইনি সহায়তা পেয়েছেন।

জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে ২৩ হাজার ৮০৭ জন, দেশের ৬৪ টি জেলার লিগ্যার এইড অফিসের মাধ্যমে ৫ লাখ ২২ হাজার ৪৪৪ জন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রমিক আইনি সহায়তা সেলের মাধ্যমে ২৪ হাজার ১৩৪ জন এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নির্ধারিত হটলাইন কলসেন্টার ১৬৪৩০ নম্বরে (টোল ফ্রি) ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৪০ জন বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পেয়েছেন।

এছাড়াও অসচ্ছল বিচারপ্রার্থীদের ৭৯ কোটি ৭৮ লাখ ৫৯ হাজার ৩২২ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেয় জাতীয় আইনগত সতায়তা সংস্থা। এর মধ্যে দেশের ৬৪ জেলার লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে ৭৪ কোটি ৮ লাখ ৮ হাজার ৭১১ টাকা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রমিক আইনি সহায়তা সেলের মাধ্যমে ৫ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার ৬১১ টাকা আদায় করে দেয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, লিগ্যাল এইডে আইনি সহায়তা দেয়া হয়েছে মোট ৩ লাখ ৯ হাজার ৪৮৭ মামলায়। এর মধ্যে আইনি সহায়তার মাধ্যমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৬৮ টি মামলা নিস্পত্তি হয়েছে। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি সেবার (এডিআর) মাধ্যমে লিগ্যাল এইডে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ৫০ হাজার ৩৫৩টি। ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯১ হাজার ৬১৩ জন কারাবন্দীকে দেশের ৬৪ জেলার লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে আইনগত সহায়তা প্রদান করা হয়েছে বলে সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

করোনা সংকটেও জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার অধীনে আর্থিকভাবে অসচ্ছল বিচারপ্রার্থীদের সারাদেশের আদালতসমূহে আইনি সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। করোনার মধ্যে সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড অফিস কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে করোনার এই প্রাদুর্ভাবের কারণে আইনি সহায়তা প্রত্যাশীরা অফিসের নির্ধারিত নাম্বারে যোগাযোগ করলেই আইনি পরামর্শ পাচ্ছেন। জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নির্ধারিত হটলাইন নাম্বার ১৬৪৩০ নম্বরে (টোল ফ্রি) আইনি সেবা অব্যাহত রয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে সরকারি খরচে আইনি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০’ প্রণয়ন করে। ২০০০ সালে তৎকালীন শাসন আমলে আইনটি প্রণয়ন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। তারপরের সরকারগুলো আইনটি কার্যকরে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্টিত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ দরিদ্র ও অসচ্ছল জনগণের বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে আইনটি কার্যকরে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং তা অব্যাহত রয়েছে।

২০০০ সালে প্রণীত আইন অনুযায়ি ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’ গঠন করা হয়। রাজধানীর ১৪৫, নিউ বেইলী রোডে এ সংস্থার প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এর ব্যাপ্তি সুপ্রিমকোর্ট,দেশের সকল জেলা, অধঃস্তন আদালত, শ্রম আদালত, জেলা,উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত এখন প্রতিষ্ঠিত।

জেলা কমিটি গঠন, প্রতিটি জেলা জজ আদালতের কার্যালয়ে রয়েছে। নানা প্রচার, প্রচরণা, সেমিনার-কর্মশালা ও প্রকল্পের মধ্য দিয়ে এ সেবা এখন মানুষের দোড়গোড়ায়। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন এ সেবাকে অরো সহজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে। এ ওয়েবসাইটে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান বিষয়ে বিস্তারিত সকল তথ্য জানা যায়।

বার্তা কক্ষ ,
২২ জানুয়ারি ২০২২ (বাসস):

Share